গোয়েন্দা সিরিজ মাসুদ রানা ও কুয়াশার প্রকাশনা বন্ধের নির্দেশ
প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২০, ১৮:৫৭
পাঠকপ্রিয় গোয়েন্দা সিরিজ ‘মাসুদ রানা’ এবং ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৩১০ বইয়ের প্রকাশ বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কপিরাইট বোর্ড। মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০ এবং কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের মালিকানা দাবি করে লেখক শেখ আব্দুল হাকিম কপিরাইট অফিসে অভিযোগ দায়েরের পর রোববার (১৪ জুন) এ রায় দেয় কপিরাইট বোর্ড।
এছাড়া আবেদনকারীর কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন করা প্রকাশিত বইগুলোর সংস্করণ ও বিক্রিত কপির সংখ্যা এবং বিক্রয় মূল্যের হিসাব বিবরণী এ আদেশ জারির পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে দাখিল করতে প্রকাশক-মালিক কাজী আনোয়ার হোসেনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রোববার (১৪ জুন) বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার অফ কপিরাইটস জাফর রাজা চৌধুরী এ তথ্য জানান। রায়ের কপি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কাজী আনোয়ার হোসেন তার বয়ানে বলেছেন, অভিযোগকারী অর্থাৎ শেখ আব্দুল হাকিম সেবা প্রকাশনীতে নিয়মিত চাকরি করতেন। চাকরিতে নিয়োজিত থেকে মালিকের নির্দেশে বই লিখে তিনি স্বত্ব অধিকার করতে পারেন না। মাসুদ রানা সিরিজ এবং কুয়াশা সিরিজের সকল বইয়ের সর্বস্বত্ব প্রকাশকের।
অভিযোগকারী লেখক শেখ আব্দুল হাকিম তার বয়ানে বলেছেন, প্রকাশক কাজী আনোয়ার হোসেন ২০১০ সালে কপিরাইট অফিসে এক জবাবে বলেছিলেন তিনি মাসুদ রানা ও কুয়াশার একটি বইও লেখেননি। এখন টাকা না দেয়ার কৌশল হিসেবে তিনি বলছেন চাকরি করা অবস্থায় লিখেছি। আমিসহ সেবা প্রকাশনীর অন্যান্য লেখকরা সেখানে ফ্রিল্যান্স হিসেবে কাজ করেছি। কাজী আনোয়ার হোসেন আমার নিয়োগকর্তা নন, আমি তার চাকরি করিনি। বইয়ের ভেতর স্বর্বস্বত্ব প্রকাশনের লেখা থাকলেই সেটা প্রকাশকের হয় না। কাজী আনোয়ার হোসেনও গণমাধ্যমে সাক্ষাতকারে মাসুদ রানা সিরিজের লেখকদের লেখক এবং নিজেকে সম্পাদনাকারী বলে উল্লেখ করেছেন।
তাহলে বইগুলো তার কীভাবে হলো? কপিরাইট অফিস তাদের পর্যবেক্ষণে দেখেছেন, অভিযোগকারীর বক্তব্য দেশের খ্যাতিমান প্রচ্ছদ শিল্পী হাশেম খানের লিখিত বক্তব্যের সঙ্গে প্রায় হুবহু মিলে যায়। যা অভিযোগকারীর দাবিকে প্রতিষ্ঠা করে। এ দেশের বিখ্যাত কয়েকজন লেখক ও সেবা প্রকাশনীতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত ব্যবস্থাপকের বক্তব্য এবং কাজী আনোয়ার হোসেনের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে প্রমাণিত হয় যে, অভিযোগকারী শেখ আব্দুল হাকিম সেবা প্রকাশনীতে রয়্যালিটির বিনিময়ে পান্ডুলিপি জমা প্রদান করতেন।