করোনা চিকিৎসায় অনেকে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ খাচ্ছে

প্রথম আলো প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২০, ০৮:৩৩

খুলনা জেলার সুন্দরবনসংলগ্ন একটি উপজেলায় এ পর্যন্ত ১০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। ওই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বাকিদের বাড়িতে চিকিৎসা চলছে।

ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, একজনের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল। তাঁকে সেই সমস্যার চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এমন ওষুধ দেওয়া হয়েছে। যেমন, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন ও ভিটামিন–সি।

কক্সবাজার জেলার একটি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মকর্তা অবশ্য অন্য কথা বলেছেন। ওই উপজেলায় ম্যালেরিয়া সারাতে ব্যবহৃত হয় এমন ওষুধসহ অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কোভিড–১৯ রোগীদের। করোনা শনাক্ত হওয়ার আগেই সর্দি, জ্বর, গলাব্যথা নিয়ে আসা রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকেরা।

দেশের দুই উপজেলায় দুই সরকারি হাসপাতালে একই রোগের দুই রকম চিকিৎসা চলছে। তবে এই ভিন্নতা শুধু প্রান্তিক দুই এলাকাতেই নয়, রাজধানীসহ সারা দেশে এটা চলছে। মহামারি সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ভয়ের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। করোনায় যেন আক্রান্ত না হয়, আক্রান্ত হলে যেন অবস্থা খারাপের দিকে না যায় সে জন্য মানুষ ওষুধ খাচ্ছে। অনেকে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ খাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ মানুষ বা রোগীদের পক্ষ থেকে ওষুধের ব্যাপারে চাহিদা ও চাপ আছে। এতে অ্যান্টিবায়োটিকসহ অপ্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবহার বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিছু ওষুধে উপকার হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে, তবে নিশ্চিত স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে। মানুষ ঝুঁকি নিয়ে ওষুধ খাচ্ছে। কোভিড–১৯ মহামারির মতো ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও মহামারি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’

করোনার সুনির্দিষ্ট ওষুধ নেই

গত বছর ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে অজ্ঞাত কারণে কিছু মানুষ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। বিজ্ঞানী, গবেষক ও চিকিৎসকেরা জানতে পারেন নিউমোনিয়ার পেছনে আছে একটি নতুন ভাইরাসের সংক্রমণ। জিন বিশ্লেষণ করে নতুন এই ভাইরাসের সঙ্গে মার্স বা সার্স ভাইরাসের অনেক মিল খুঁজে পান বিজ্ঞানীরা। পরে এই ভাইরাসজনিত রোগকে কোভিড–১৯ নাম দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

কোভিড–১৯ শ্বাসতন্ত্রের রোগ। রোগটি নিরাময়ে এখনো কোনো দেশে কোনো ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই রোগ নিরাময়ে সক্ষম এমন কোনো ওষুধের নাম এখনো ঘোষণা করেনি। এই রোগ নিরাময়ে সুনির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড–১৯ চিকিৎসায় সদস্যদেশগুলোর জন্য চিকিৎসা নির্দেশিকা তৈরি করেছে। ২৭ মে তার হালনাগাদ সংস্করণও প্রকাশ করেছে। সেই নির্দেশিকায় এই ভাইরাস দমন করতে কোনো ওষুধের সুপারিশ করা হয়নি। কিছু ওষুধ বা ব্যবস্থার সুপারিশ তারা করেছে শুধু ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়েল’ বা পরীক্ষা–নিরীক্ষার জন্য।

বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় কোভিড–১৯ চিকিৎসায় একটি জাতীয় নির্দেশিকা তৈরি করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুসরণ করে তা তৈরি করা। তাতেও কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ ব্যবহারের কথা বলা হয়নি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক খান আবুল কালাম আজাদ বলেন, চীনে এবং পরবর্তী সময়ে আরও কয়েকটি দেশে কোভিড–১৯ চিকিৎসায় বেশ কিছু ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা হয়েছিল। কয়েকটি ক্ষেত্রে সামান্য সাফল্য দেখা যাওয়ার পর কিছু ওষুধের নাম সামনে চলে আসে। অনেক দেশেই সেই ওষুধ ব্যবহারে কিছু চিকিৎসক ও প্রতিষ্ঠান উৎসাহী হয়ে ওঠে। এ দেশেও সেই প্রবণতা আছে। কিন্তু সেই সাফল্য সর্বজনীন ছিল না বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো ওষুধেরই অনুমোদন দেয়নি।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us