বাজেটে মন্ত্রিসভার অনুমোদন

জাগো নিউজ ২৪ প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২০, ১৪:৩৮

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) দুর্যোগে স্থবির দেশের অর্থনীতি। এমন নাজুক পরিস্থিতিতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশা সামনে রেখে আগামী অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তাই তিনি এবারের বাজেটের শিরোনাম ঠিক করেছেন ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমা’।

এ বাজেটে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ বাজেট অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার (১১ জুন) দুপুরে জতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এক বিশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে আগামী বাজেটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে।

এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সরকারের ১০ মন্ত্রী। তারা হলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার বিভাগমন্ত্রী তাজুল ইসলম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

এরপর নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এতে অনুমোদন দিয়ে স্বাক্ষর করবেন।

তারপর বিকেল সাড়ে ৩টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য এ বাজেট উপস্থাপন করবেন তিনি।

বাজেটে কী বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে বুধবার (১০ জুন) অর্থমন্ত্রী জাগো নিউজকে বলেন, বাজেটে করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এবং দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে জরুরি, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সব ধরনের পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আগামী বাজেট করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এবং দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে কাজ করবে। এ বছর এক কঠিন সময়ে আমরা বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। তাই আগামী বাজেটের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে- দেশের মানুষের জীবন রক্ষা করা এবং সচল রাখা।’

মন্ত্রী আরও বলেন, আগামী বাজেটে জরুরি, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সব ধরনের পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যাতে করে করোনায় যা ক্ষতি হয়েছে তা কমানো যায়। এ বাজেট দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত এই ব্যয় তথা আকার চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি। টাকার অংকে যা ৬৬ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা বেশি। চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হলেও পরবর্তীতে সংশোধিত বাজেটে এর আকার দাঁড়ায় ৫ লাখ ১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা।

করোনাভাইরাসের থাবায় থমকে গেছে ব্যবসা-বাণিজ্য। দেশে ৬৬ দিন লকডাউন থাকার পর এখন সীমিত আকারে অফিস আদালত খুললেও করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে বেশ সময় লাগবে বলেই দেশীয় ও বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার পূর্বাভাস থেকে জানা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেও আগামী বাজেটের আকার বা ব্যয় ও আয়ের লক্ষ্যমাত্রার দিকে নজর দিলে করোনার কোনো প্রভাবই পাওয়া যাবে না। তবে বাজেটে এ ধরনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণকে বাস্তবায়ন অযোগ্য বলছেন অর্থনীতিবিদরা। বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের অন্যতম প্রধান সংস্থা এনবিআরও বলছে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

এদিকে করোনাকালীন এই দুঃসময়ে আয়ের মূল উৎস রাজস্ব আদায় তলানিতে ঠেকলেও বেড়েছে ব্যয়ের খাত। তাই আসছে বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৩ কোটি টাকা। এছাড়া আগামী অর্থবছরে সরকার বৈদেশিক অনুদান পাবে ৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা। সব মিলে সরকারের আয় হবে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৬ কোটি টাকা।

এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হচ্ছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত করসমূহ থেকে রাজস্বে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কর ব্যতীত রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা।

মোট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। আয় ও ব্যয়ের এ বিশাল ফারাকে এবারই প্রথম দেশের ইতিহাসে মোট বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ৮ শতাংশ নির্ধারণ করা হচ্ছে। এর আগের বছরগুলোতে সাধারণত জিডিপির ৫ শতাংশ হারে ঘাটতি ধরে বাজেট প্রণয়ন করা হত।

আগামী (২০২০-২১) অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) যে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হচ্ছে তা অর্জন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে তিনি বিষয়টি জানান।

চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘বিভিন্ন সূচক বিবেচনায় নিয়ে গবেষণা ও পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে জানা যায় যে, চলতি অর্থবছরের শেষে সর্বমোট ২ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব অহরিত হতে পারে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘পূর্ববর্তী গড় প্রবৃদ্ধি ১৪ শতাংশ হিসেবে আগামী অর্থবছরের সর্বমোট রাজস্ব আহরণ ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি হবে না। অর্থনীতিবিদরাও বলেছেন, রাজস্ব আদায়ের এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে।’
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us