কুয়েতে আটক এমপি পাপুলের বিরুদ্ধে ৭ বাংলাদেশির সাক্ষ্য
প্রকাশিত: ১০ জুন ২০২০, ০৮:১৬
কুয়েতে আটক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে কাজী পাপুল তার বিরুদ্ধে আনা মানব পাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, কাজ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশিদের কাছ থেকে তিনি কোনো অর্থ নেন না, বরং এটা একধরনের সামাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড। গতকাল মঙ্গলবার কুয়েত থেকে প্রকাশিত আরব টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া কুয়েতে কাজ করতে যাওয়া সাত বাংলাদেশি দেশটির পাবলিক প্রসিকিউশনের কাছে কাজী পাপুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আরব টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, কুয়েতে কর্মরত অনেক বিদেশি কর্মী দীর্ঘ কয়েক মাস বেতন না পাওয়ার পর দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে অভিযোগ জানায়। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, একটি ‘ক্লিনিং কোম্পানি’ কুয়েত সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে কর্মী এনে কাজ করাচ্ছে। কিন্তু অনেক কর্মীর থাকার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তাদের ফেরত পাঠানো হয়নি, বরং অবৈধভাবে টাকা নিয়ে তাদের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। একজন কুয়েতি নাগরিকের সঙ্গে মিলে সংসদ সদস্য কাজী পাপুল ঐ ক্লিনিং কোম্পানি চালান। তিনি ঐ কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক।
এমপি পাপুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া বাংলাদেশিরা জানান, গাড়িচালকের কাজ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এজন্য তারা কাজী পাপুলকে আড়াই হাজার দিনার করে দিয়েছেন, কিন্তু কুয়েতে গিয়ে তারা কোনো কাজের সুযোগ পাননি। এমনকি তাদের কুয়েতে থাকার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আরো টাকা দাবি করেন পাপুল। এ ঘটনার পর কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউশন সংসদ সদস্য পাপুলকে আটক এবং তার বাড়ি তল্লাশির নির্দেশ দেয়।
গত শনিবার কুয়েতের সিআইডির (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট) সদস্যরা মিশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের এক খবরে বলা হয়, সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পাপুলকে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটর। আরব টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, রিমান্ডে সংসদ সদস্য কাজী পাপুল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কুয়েতে কাজ করছেন। সেখানে তার থাকার বৈধ অনুমতি রয়েছে। পাবলিক প্রসিকিউশন কাজী পাপুলের জবানবন্দি গ্রহণ করে তাকে আদালতে হাজির করার জন্য সিআইডিকে নির্দেশনা দিয়েছে।
এদিকে কাজী পাপুলকে আটকের ব্যাপারে এখনো বাংলাদেশ সরকার বা দূতাবাসকে কিছুই জানায়নি কুয়েত সরকার। গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক কোনো দেশে সমস্যায় পড়লে তাকে আমরা কনসুলার সার্ভিস (দেশের নাগরিক হিসেবে সব ধরনের সেবা) দিয়ে থাকি। তিনি (কাজী পাপুল) চাইলে আমরা এই সুবিধা দেব। তবে এর আগে তিনি আটক হয়েছেন কি না, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হবে। তাকে আটকের বিষয়ে কুয়েতের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চায় বাংলাদেশ।’