‘রেল লাইনের ওই বস্তিতে’, ‘ওরে সালেকা ওরে মালেকা’ অথবা ‘আলাল ও দুলাল’ গানগুলোর কশা মনে হলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বাংলাদেশের পপ ও ব্যান্ড সংগীতের ‘গুরু’ আজম খানের কথা। এমন অসংখ্য গানের স্রষ্টা আজম খানের নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১১ সালে আজকের এই দিনে (৫ জুন) মারা যান তিনি।আজম খানের জন্ম ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, ঢাকার আজিমপুর কলোনির ১০ নম্বর সরকারি কোয়ার্টারে। তাঁর পুরো নাম মাহবুবুল হক খান। বাবা আফতাবউদ্দিন আহমেদ, মা জোবেদা খাতুন।
১৯৫৬ সাল থেকে কমলাপুরে বসবাস শুরু করেন আজম খানের পরিবার। একই বছর কমলাপুরের প্রভেনশিয়াল স্কুলে প্রাইমারিতে ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালে সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুলে বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন। এই স্কুল থেকে ১৯৬৮ সালে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭০ সালে টিঅ্যান্ডটি কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন।
মাত্র ২১ বছর বয়সে ঢাকা উত্তরের সেকশন কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এই পপ তারকা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আখন্দ ভ্রাতৃদ্বয় (লাকী আখন্দ ও হ্যাপি আখন্দ) ও আরো কয়েকজনকে নিয়ে গড়ে তোলেন ব্যান্ডদল ‘উচ্চারণ’।১৯৭২ সালে ‘এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ এবং ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় বিটিভিতে। ব্যাপক প্রশংসা আর তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দেয় এ দুটো গান। দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়ে যায় তাঁদের ব্যান্ড।
১৯৮১ সালে ১৪ জানুয়ারি, সাহেদা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় আজম খানের। তখন তাঁর বয়স ছিল ৩১ বছর। সহধর্মিণী মারা যাওয়ার পর থেকে একাকী জীবন বেছে নেন। সুর হয়ে ওঠে জীবনের ধ্যানজ্ঞান। সেই সুরেই বেঁচে আছেন তিনি। ভক্তের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন চিরকাল।