১৯৭২ সালের ৩ জুন ছিল শুক্রবার। ছুটির দিন হওয়ায় সরকারি কোনও অনুষ্ঠানে এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অংশ নেওয়ার খবর প্রচার করেনি দেশের দৈনিকগুলো। পরের দিন ৪ জুনের সবগুলো জাতীয় দৈনিকের শিরোনাম হয়েছিল বিশেষ প্রতিবেদন দিয়ে। পূর্বদেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিবেদন ছিল পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসা বাংলাদেশিদের ভারত সীমান্তে আটকে থাকা নিয়ে।এ প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, বাংলাদেশ পররাষ্ট্র দফতরের উদাসীনতার ফলে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসা শত শত বাঙালি সন্তান ভারতের বিভিন্ন সীমান্তে অবস্থান করছে কিন্তু দেশে ফিরে আসতে পারছে না। যদিও দেশে প্রত্যাবর্তনের পরে থেকেই প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আটকে পড়া বাঙালিদের ফেরানোর বিষয়ে কথা বলে আসছিলেন।
এ প্রতিবেদনে বলা হয়, আটকে পড়া বাঙালিরা পাকিস্তানে তাদের সবকিছু হারিয়ে কোনও প্রকার ভারতের মাটিতে পৌঁছে অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র দফতরের ছাড়পত্রের জন্য। কিন্তু এক মাস দুই মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও তাদের সে ছাড়পত্র পৌঁছায়নি।প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসা বাঙালিদের ৩৮ জনের একটি দল কয়েকদিন আগে ভারতের পৌঁছায়।
মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী (সিলেট) এর বরাত দিয়ে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন সীমান্ত শহরে এসে পৌঁছানো শত শত বাঙালির যে অবস্থা তিনি দেখেছেন তা রীতিমত মর্মান্তিক ও উদ্বেগজনক। তিনি বলেছেন যে পাকিস্তানে টাকা পয়সা সব হারিয়ে যে সমস্ত বাঙালি প্রাণ নিয়ে ভারতের বিভিন্ন শহরে এসে পৌঁছাচ্ছে, অপেক্ষার পরও বাংলাদেশ পররাষ্ট্র দপ্তর তাদের ছাড়পত্র দেন না। এ ব্যাপারে কোনও দায়িত্ব নেই, এমন গা ছাড়া ভাব।তিনি বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে সেসব এলাকার কোনও মিল নেই।