জেসিন্ডা যেটা বুঝেছেন, সেটা বুঝতে আমাদের যত দেরি হবে, করোনাকাল আমাদের তত বেশি ধ্বংস করবে। লিখেছেন শাহদীন মালিক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ ইদানীং আইনের জগতে আমাদের আইনপ্রণেতাদের একটা বিশাল অবদান। বিশেষত আইনটির ২১, ২৫, ২৬, ৩১, ৩৫ ধারাসহ আরও কিছু ব্যাপার আছে, যা অন্যান্য দেশে আইনপ্রণেতাদের মাথায় আসেনি।
অবশ্য এটা অনস্বীকার্য যে কম্পিউটারের ডেটা হ্যাকিং বা ভাইরাসের মাধ্যমে কম্পিউটারের প্রোগ্রাম, সফটওয়্যার বা ডেটা ইত্যাদি বিনষ্ট করা বা ডেটা চুরি করা অথবা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অনধিকার প্রবেশ করে অর্থ লোপাট করা ইত্যাদি ব্যাপার অন্যান্য দেশের আইনপ্রণেতারা লক্ষ করেছেন; এসব অপরাধ প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন করেছেন। এসব অপরাধসংক্রান্ত বেশ কিছু ধারা আমাদের আইনেও আছে। কিন্তু আগেই বলেছি, ভাবমূর্তির যে ঠেলাঠেলি আমাদের আইনে আছে, সেটা অন্যান্য দেশের আইনপ্রণেতারা আদৌ আমলে নিতে পারেননি।
১১ জন সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে কিছুদিন আগে যেসব মামলা হয়েছে, তাতে অন্যতম প্রধান একটা অভিযোগ ছিল যে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁদের ফেসবুক বা অন্যান্য ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে গুজব ও সরকারবিরোধী পোস্ট ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন। আইনপ্রণেতারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮তে গুজব ছড়ানো, সরকারবিরোধী পোস্ট দেওয়া ইত্যাদি গুরুতর অপরাধের কথা অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলে গিয়েছিলেন।
কিন্তু পুলিশ ও মন্ত্রী-নেতারা অহরহ ‘গুজব’ নামক অপরাধে বহু ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করছেন। আইন যেটাকে অপরাধ বলে না (অর্থাৎ, গুজব) মন্ত্রী-নেতা-পুলিশ সেটাকে অপরাধ বানিয়ে বসে আছেন। গুজব ছড়ানোর অপরাধে কারাদণ্ডের রায় হতে বেশি দিন হয়তো আমাদের অপেক্ষায় থাকতে হবে না।