সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য এবং নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ও গণমাধ্যম প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের বিদ্যুৎ সক্ষমতার একটি বড় অংশ অব্যবহৃত থাকায় বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভাড়া ও ভর্তুকি হিসেবে রাষ্ট্রের গগনচুম্বী অপচয়ের বোঝা জনগণের সামর্থের বাইরে চলে গেছে মন্তব্য করে রেন্টাল বিদ্যুৎপদ্ধতি যত শিগগির সম্ভব বাতিলসহ ‘পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্লান-২০১৬’ কে নতুন করে ঢেলে সাজাবার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, দেশের বিদ্যুৎ সক্ষমতার একটি বড় অংশ বর্তমানে অলস বসে থাকায় ২০২০ সালের এপ্রিল-জুন পর্যন্ত এ খাতে মোট ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হবে। সম্প্রতি লন্ডনভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনোমিকস ফাইনান্সিয়াল অ্যানালিসিস (আইইইএফএ)-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশি স্থাপন করায় সরকারকে ৫৭ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র অলস বসিয়ে রাখতে হচ্ছে।
কোভিড-১৯ উদ্ভূত পরিস্থিতি আরো দীর্ঘ হলে অব্যবহৃত বিদ্যুৎ সক্ষমতার অপচয় বাবদ এপ্রিল-ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ ৩৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকায় দাঁড়াবে। এমতাবস্থায় বিদ্যুৎ বিভাগ ইতোমধ্যে সরকারের কাছে ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে, সরকারের পাওয়ার সেল জ্বালানি খাতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার স্বার্থে সেচের জন্য কৃষককে প্রদেয় ভর্তুকির টাকা কৃষি মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে প্রদানের যে সুপারিশ করেছে তা অন্যায্য উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অপ্রয়োজনীয় অলস বসে থাকা বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত রাখাকে কৃষকের জন্য নির্ধারিত ভর্তুকির চেয়ে প্রাধান্য দেয়া চরম বৈষম্যমূলক। এর ফলে কৃষকরা যেমন বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে তেমনি ধনাঢ্য অযাচিত ভর্তুকির বোঝাও বাস্তবে কৃষকসহ সাধারণ মানুষকেই বইতে হবে।