করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সরকার ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে। সবাই যেমন পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটেছিল, তেমনি বোধ হয় অনেকে ফিরতে শুরু করেছে। রাস্তায়, গলিতে এখন বেশ লোক দেখা যায়, গাড়ির সংখ্যাও বেড়েছে। বিপরীত দিকের একটি বাড়িতে দেখলাম কাঁধে ব্যাকপ্যাক চাপিয়ে ফিরছে কয়েকজন। পরস্পরকে জিজ্ঞেস করছে বাড়ির সবাই কেমন আছে। ততক্ষণে, পত্রিকাওয়ালা সাইকেল নিয়ে গলি পার হয়ে গেল।২০০৯ সাল, নিউইয়র্ক টাইমসের সভাকক্ষে নির্বাহীদের পরস্পরের সঙ্গে চলছে জোরালো বিতর্ক। ২০০৮-এর মহামন্দা-পরবর্তী আর্থিক ধকল কাটিয়ে উঠতে দিকনির্দেশনা ও কর্মপরিকল্পনা নিয়ে ওই আলোচনা-তর্ক। সবাই সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করছেন যে এখন থেকে তারা কি সব পাঠককে বিনা মূল্যে তাদের খবর পড়তে দেবেন, নাকি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে সাবস্ক্রাইবকৃত সীমিতসংখ্যক গ্রাহকের জন্য এ ব্যবস্থা রাখবেন? উভয় পক্ষের কাছেই যথেষ্ট যুক্তি থাকলেও সেদিন বিষয়টি মোটেও পরিষ্কার ছিল না যে লোকেরা খবর পড়ার জন্য অর্থ দিতে রাজি আছে কিনা, বিশেষ করে অনলাইন কনটেন্টগুলো। তবে টাইমস কিন্তু সেদিন তাদের ডিজিটাল পাঠকের বিপরীতে পেওয়াল চালুর মতো বড় ধরনের সিদ্ধান্তটি নিয়ে নেয়। করোনার প্রাদুর্ভাবে ঘর থেকে বের হতে না পারা বা লকডাউনে থাকা মানুষ শতভাগ নির্ভর করছে সংবামাধ্যমগুলোর ওপর, বিশেষ করে ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের ওপর। প্রিন্ট থেকে ডিজিটাল পত্রিকার ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে তাদের। এক দশক আগে নিউইয়র্ক টাইমসকে নতুন করে তার ডিজিটাল মাধ্যম নিয়ে আলোচনায় বসতে হয়েছিল, কারণ মহামন্দা-পরবর্তী অনলাইন ও মুদ্রণ উভয় জায়গা থেকেই বিজ্ঞাপন বাবদ আয় সংকুচিত হয়েছিল। আর তাই আয়ের নতুন উৎস খুঁজতে পেওয়ালবিষয়ক আলোচনায় নেমেছিল তারা।সেদিন বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য পত্রিকাটির প্রকাশক আর্থার ওকস সলত্জবার্গ অভ্যন্তরীণ একটি কমিটি গঠন করলেন এবং বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শক নিয়োগ দিলেন।২০১১ সালের মার্চে টাইমস ‘মিটারড পেওয়াল’ চালু করে।