করোনাভাইরাস সতর্কতায় গত ১৮ মার্চ থেকে থেকে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন অভিনয়শিল্পী দম্পতি আজিজুল হাকিম এবং জিনাত হাকিম। শুটিং বন্ধের সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই তাঁরা শুটিং বন্ধ করে দিয়েছেন, চলাফেরা করতে শুরু করেছেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। করোনা পরিস্থিতির কারণে সতর্কতায় এপ্রিল মাসের শেষ দিন পর্যন্ত ঘর থেকে না বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। আর এই সময়ের মধ্যে অনলাইনে যে কোনো খবর শেয়ারের আগে ভাবতে বলেছেন অভিনেতা আজিজুল হাকিম। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অভিনেতা আজিজুল হাকিম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে মহামারি করোনা থেকে বাঁচতে আমাদের ঘরে থাকার বিকল্প নেই। সবাই মিলে যাতে করোনাকে প্রতিরোধ করতে পারি সে জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কয়টা দিন নিজেকে আটকে রাখুন।’ হোম কোয়ারেন্টাইনে অবস্থানের মাত্র দুদিন অতি প্রয়োজনে অল্প সময়ের জন্য বাইরে বের হয়েছিলেন তিনি। এখন আর বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে আজিজুল হাকিম বলেন, ‘বাইরে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তারপরও জরুরি প্রয়োজনে ক্ষণিকের জন্য বের হলেও সতর্ক হয়েই বের হব। বাসায় মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস আছে। তা ছাড়া পাশেই আমাদের আত্মীয়রা থাকেন, তাদের সঙ্গেই ভিডিওতে কথা বলছি। কিন্তু দেখা করতে যাচ্ছি না। আগামী এক মাস মনে হয় বাড়ির বাইরে যাওয়া হবে না।’ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে কঠোর ব্যবস্থা এবং আইনের প্রয়োগ চেয়েছেন আজিজুল হাকিমের স্ত্রী জিনাত হাকিম। তিনি বলেন, ‘মানুষগুলোকে নিয়ন্ত্রণের কোনো উপায় নেই। মানুষ এখনো রাস্তায় ঘুরছে। অনেকে ফাঁকা শহর দেখতে বের হচ্ছে। শক্তের ভক্ত নীতির প্রয়োগই এখন যথাযথ। জনসমাগম মানেই রোগজীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি। সে জন্য সরকার নির্দেশিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আদেশ পালন নিশ্চিত করতে, দেশ ও দশের স্বার্থে মানুষকে ঘরে রাখতে পারলে এই ভাইরাস থেকে আমরা পুরোপুরি রক্ষা পাব। আমরা যদি এক মাস ঘরে বন্দী থাকি তাহলে এই মহামারি থেকে দেশ এবং দেশের অর্থনীতিকে বাঁচানো সম্ভব।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন অনেকে। এ প্রসঙ্গে আজিজুল হাকিম বলেন, ‘মানুষ করোনা নিয়ে আতঙ্কে আছে। যারা গুজব ছড়িয়ে মানুষকে আরও বেশি আতঙ্কিত করছেন তারা দয়া করে এসব থেকে বিরত থাকুন।’ ভক্তদের উদ্দেশে এই অভিনেতা বলেন, ‘আপনারা গুজবে কান দেবেন না। সঠিক এবং বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যমের খবর শেয়ার করুন। এই ব্যাপারে সব সময় সতর্ক থাকুন।’ অন্তত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে করোনার প্রভাব ও বিস্তার পর্যবেক্ষণ করা উচিত উল্লেখ করে জিনাত হাকিম বলেন, ‘পৃথিবী জুড়ে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা জেনেও আমরা সচেতন না। আমার পাশের বাসার নিচে বাচ্চারা খেলাধুলা করছে। অথচ সব জেনেও যদি আমরা সচেতন না হই তাহলে আমাদেরও বিপদে পড়তে হবে। একমাত্র সচেতনতাই আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে পারে।’ জিনাত হাকিম আরও বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এপ্রিল ৩০ তারিখ পর্যন্ত আমরা বাসা থেকে এক পা বের হব না। নন্দলাল হয়েই থাকার চেষ্টা করব। নন্দলাল কবিতায় যেমন নন্দলাল বাসার বাইরে যেতে ভয় পায়। জীবন বাঁচাতে ঘরে মধ্যে নিজেকে আটকে রাখে, আমরাও এখন নিজের এবং মানুষের সচেতনতার জন্য ঘরে বসে বসে থাকব।’ শুধু ঘরে বসে থেকেই আমরা এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে পারি উল্লেখ করে আজিজুল হাকিম বলেন, ‘মানুষের সংস্পর্শে গেলেই সংক্রমণ বাড়তে পারে। আমরা জানি না কে ভাইরাসে আক্রান্ত। যে কারণে সরকার বারবার সতর্ক করছে। আমরা সরকারি নির্দেশনা মেনে জীবনের স্বল্প কিছু সময় ঘরের মধ্যে থাকতেই পারি। বিশ্বের দিকে তাকালেই বোঝা যায় এই মহামারি আমাদের দেশে এলে মহা বিপর্যয়ের মধ্যে পারব।’ এখনকার স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যমের খবর শেয়ার করার আহ্বান জানিয়েছেন। আজিজুল হাকিম বলেন, ‘কোন মাধ্যমের খবর শেয়ার করছেন সেটা আগে ভাবুন। অথেনটিক না হলে খবর শেয়ার করে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেবেন না।’