অজুর মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত থাকা সম্ভব: মুফতি তায়্যিব
প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২০, ১৪:৫৫
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের দেশেও এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ জন।চিকিৎসকরা এ ভাইরাসের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে জনসমাগম, গণপরিবহন এড়িয়ে চলতে বলছেন, এছাড়া ঘন ঘন হাত ধোয়ার প্রতিও গুরুত্ব দিচ্ছেন।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হাত ধোয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তার একটি ফর্মুলাও দিয়েছে। যার সাথে মুসলমানদের অজুর বিষয়টির অনেক মিল রয়েছে।আলেম-ওলামারা বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হাত ধোয়ার যে ফর্মুলার দিয়েছে তার সাথে মুসলমানদের অজুর অনেক মিল রয়েছে।প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে অজুর মাধ্যমে হাত মুখ, নাক, কান, মাথার চুল ও পা ধৌত করার মাধ্যমে শরীরের বাহ্যিক অংশ ভাইরাস, ধুলাবালি ও জীবাণুমুক্ত করে। প্রত্যেক মুসলমানকে সব সময় অজু অবস্থায় থাকতে গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। এমনকি রাতে ঘুমানোর আগে অজু করেও ঘুমাতে বলা হয়েছে।পবিত্র কুরআনের সুরা মায়েদার ৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, হে মুমিনরা, যখন তোমরা নামাজে দণ্ডায়মান হতে চাও, তখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত করো, মাথা মাসেহ করো এবং টাখনু পর্যন্ত পা ধৌত করো। এছাড়া অজুর শুরুতে কবজি পর্যন্ত দুই হাত ধোয়া, কুলি করা, দাঁত মিসওয়াক করা, কান ও নাকের বহির্ভাগ পরিষ্কার করাকে মহানবী (সা.) তাঁর সুন্নাত হিসেবে অনুসরণ করতে বলেছেন।এ সম্পর্কে ঢাকার কারওয়ান বাজারের জামিয়া আম্বরশাহ ইসলামিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি তায়্যিব আহমাদ বলেন, কুরআনে আল্লহতায়ালা বলেছেন, নিশ্চই আমি তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের পছন্দ করি। এছাড়া রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পবিত্রতা ইমানের অর্ধেক স্বরূপ। পবিত্রতা অর্জনের একটি অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে অজু। আর এই অজু কিভাবে করা হবে তার বর্ণনা কুরআনে আল্লাহতায়ালা উল্লেখ করেছেন।তিনি বলেন, পবিত্রতা দুই প্রকার। দেহের বাহ্যিক ও ভেতর। কালেমা তায়্যিবার মাধ্যমে মুসলামান যেমন একত্ববাদকে স্বীকৃতি দিয়ে আত্মিক পবিত্রতা অর্জন করছে, তেমনি অজু গোসলের মাধ্যমে বাহ্যিক পবিত্রতা অর্জন করছে। ইসলামে আত্মিক ও বাহ্যিক দুই পবিত্রতাকেই অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।মুফতি তায়্যিব বলেন, পবিত্রতা অর্জনের বিষয়ে কুরআনে আল্লাহতায়ালা মনুষের উদ্দেশে যে বাণী দিয়েছেন তার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হচ্ছে, তিনি একটি জায়গায় বলছেন, তোমাদের কোনো অনিষ্ট হোক বা ক্ষতি হোক সেটি আল্লাহতায়ালা চান না বলেই পবিত্রতা অর্জন করতে গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে। এর দ্বারা এটিই প্রমাণ হয় যে, মানুষের কোনো ক্ষতি হোক সেটি আল্লাহ চান না। আর সেজন্যই অজুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করতে বলেছেন। আর পবিত্রতা অর্জনকারীকে আল্লাহতায়ালাই হেফাজতে রাখবেন। মুফতি তায়্যিব বলেন, বর্তমানে যে মহামারি চলছে তা থেকে বাঁচতে হাত ধোয়া ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার যে কথা বলা হচ্ছে তা সাড়ে ১৪ শ বছর আগেই কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলে দিয়েছেন। অজু বা প্রয়োজন হলে গোসলের পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যমে মানুষ বিভিন্ন রোগ ও জীবাণুর সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে। তিনি বলেন, শুধু দেহের পবিত্রতা নয়, ঘরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতেও রাসুলুল্লাহ (সা.) গুরুত্ব দিয়েছেন। ঘরের কোনা বা কোথাও যেন ময়লা লুকিয়ে না থাকে সেদিকেও গুরুত্ব দিয়েছেন।মুফতি তায়্যিব বলেন, পবিত্রতা দুই প্রকার। দেহের বাহ্যিক ও ভেতর। কালেমা তায়্যিবার মাধ্যমে মুসলামান যেমন একত্ববাদকে স্বীকৃতি দিয়ে আত্মিক পবিত্রতা অর্জন করছে, তেমনি অজু গোসলের মাধ্যমে বাহ্যিক পবিত্রতা অর্জন করছে। ইসলামে আত্মিক ও বাহ্যিক দুই পবিত্রতাকেই অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।