বড়লেখায় আদালতের জারিকৃত ১৪৪ ধারা ভেঙে প্রতিপক্ষের প্রভাবশালীরা ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে রাতের আঁধারে ১১ পরিবারের যাতায়াত রাস্তা কেটে ফেলেছে। এর আগে রাস্তার পাশের ২০টি রেইনট্রি কেটে লুট করার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী ছলিমা বেগম সংশ্লিষ্ট আদালতে বিবাদীদের বিরুদ্ধে ১৮৮ ধারায় অভিযোগ দাখিল করেছেন। আদালত বিরোধপূর্ণ স্থানের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিরোধপূর্ণ রাস্তার দখল ও পুনর্দখল নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে যেকোনো সময় মারাত্মক সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।জানা গেছে, উপজেলার তালিমপুর ইউপির মুর্শিবাদকুরা গ্রামের সফিক উদ্দিন, রফিক উদ্দিন, আতাব উদ্দিন, আসমান উদ্দিন, সোবহান উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, কামাল উদ্দিন গং ১১ পরিবারের শতাধিক বাসিন্দা মৌরসী সূত্রে মালিক হিসেবে মুর্শিবাদকুরা মৌজার এসএ ১২৯৩নং খতিয়ানের এসএ ১৭২নং দাগের ভূমির একাংশে রাস্তা তৈরি করে যাতায়াত করছেন। ১০-১২ বছর পূর্বে রাস্তার উভয় পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালিও রোপণ। গত ৮ই নভেম্বর সকালে রাস্তা সংলগ্ন ভূমির মালিক আব্দুল মন্নান, আব্দুছ ছালাম, আব্দুল ছত্তার, ছাইফুর রহমান গংরা দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জোরপূর্বক রাস্তাটি কেটে ফেলা ও রাস্তার পাশের লাগানো বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও মুতরা বেত কেটে নেয়ার হুমকি প্রদান করে। এ ঘটনায় রাস্তার মৌরসী স্বত্ববান ছলিমা বেগম বড়লেখা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতিপক্ষের ১২ জনের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারায় পিটিশন (৯১/১৯) মামলা দায়ের করেন। গত ১১ই নভেম্বর আদালতের আদেশে থানা পুলিশ বিরোধপূর্ণ ভূমির ওপর ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু আদালতের মাধ্যমে পুলিশের জারি করা ১৪৪ ধারা অমান্য করে প্রতিপক্ষের আব্দুল মন্নান, আব্দুছ ছালাম গংরা গত ২৫শে নভেম্বর রাতের আঁধারে ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে ১১ পরিবারের চলাচলের রাস্তাটি কেটে ফেলেছেন। এছাড়া রাস্তার উভয় পাশে লাগানো ২০টি রেইনট্রি গাছও তারা কেটে লুট করে নিয়ে যায়। সরেজমিনে বেশ কয়েকটি পরিবারের যাতায়াতের পুরনো রাস্তা কেটে ফেলা অবস্থায় দেখা গেছে। রাস্তার পাশের বিভিন্ন প্রজাতির গাছের মুতা ও মুতরা বেত পড়ে থাকতে দেখা যায়। ভুক্তভোগীরা জানান, রাত ২টার দিকে আব্দুল মন্নান, আব্দুছ ছালাম গংরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ৩০-৪০ জন ভাড়াটিয়া লোক নিয়ে তাদের রাস্তাটি কেটে গর্তের সৃষ্টি ও গাছগুলো কেটে লুট করে নিয়ে যায়। রাস্তা কাটার আগে তারা আমাদের ঘরের দরজার কড়ায় আংটা লাগিয়ে দেয় যাতে আমরা বের হতে না পারি। প্রতিবেশীরা লুকিয়ে এসে দরজার কড়ার আংটা খুলে আমাদের বের করেন। ভুক্তভোগী ছলিমা বেগম অভিযোগ করেন, রাস্তা ও গাছ কেটেই তারা ক্ষান্ত হয়নি। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে আমাদের চলাচলের রাস্তা কেটে এখন হুমকি দিচ্ছে রাস্তার ভূমিতে তারা পুকুর খনন করবে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল মন্নানের স্ত্রী এছবা বেগম ও আব্দুছ ছালাম জানান, ক্রয়সূত্রে তারা রাস্তাটির মালিক ছিলেন। আদালতে মামলা করে তারা রায় পেয়েছেন। তাদের ভূমির রাস্তা ও গাছ রাতে কাটবেন না দিনে কাটবেন এটা তাদের ব্যাপার। সাংবাদিককে এসব দেখার জন্য কে দায়িত্ব দিয়েছে বলে তারা উল্টো প্রশ্ন করেন। থানার ওসি মো. ইয়াছিনুল হক জানান, আদালতের নির্দেশে পুলিশ বিরোধপূর্ণ ভূমির ওপর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। কোনো পক্ষ ওই ভূমির ক্ষতিসাধন করলে অন্যপক্ষ সংশ্লিষ্ট আদালতকে অবহিত করতে পারেন। আদালত নির্দেশ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।