প্রভাব খাটিয়ে কবরস্থানের জমিতেই নির্মাণ করেছেন মার্কেট। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে পূর্বের রেকর্ড পাশ কাটিয়ে সুকৌশলে করেছেন ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন। স্থানীয় উপকারভোগীরা এমন অপকর্মের প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। এনিয়ে এলাকার মুসল্লিদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলেও তারা ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ। নানা সময়ে তার ক্ষমতার দাপটে অতিষ্ঠ এমন অভিযোগ ওই ইউনিয়নের দুর্ভোগগ্রস্তদের। তারা বলছেন দাপটের নেপথ্য কারণ তিনি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি। এর আগেও নানা অভিযোগে সমালোচিত ওই নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান এখন কবরস্থানের জমি দখল করে দোকান মার্কেট নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত আব্দুল আহবাব শাহজাহান কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা। কবরস্থান দখল করে মার্কেট নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে হায়াত শহীদ সিপন নামের এক ব্যক্তি ১৪ই নভেম্বর কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেন। এর অনুলিপি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরেও পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাউর হওয়াতে জেলা- উপজেলাজুড়ে এ নিয়ে তোলপাড় চলছে। তারা এমন অনৈতিক কাজের জন্য নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের জিন্নানগর মৌজার খতিয়ান নং-এস.এ ১১৯৭, ডি.পি ৪১৭, এস.এ দাগ নং-১৪৭৬ মূলে কবরস্থানের ৩০ শতাংশ জমি দখল করে একটি পাকা টিনশেড দোকান মার্কেট নির্মাণ করেছেন বরমচাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আহবাব শাহজাহান। কবরস্থানের জমিতে মার্কেট নির্মাণের সময় এলাকাবাসী বিরোধিতা করলে তিনি তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে হুমকি দেন। বরমচাল ইউনিয়নের বাসিন্দা ও উপজেলা ডেপুটি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মাসুক মিয়া জানান, এটাই সত্য একসময় জমিটি পৃথিমপাশা জমিদার বাড়ির ছিল। এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ব্যবহারের জন্য এটি দেয়া হয়েছে। এখনো এখানে কবরের অনেক চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যান ওখানে মার্কেট নির্মাণ করে নিজের দখলে নিয়েছেন। এটা দুঃখজনক। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বরমচাল ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আহবাব শাহজাহান বলেন আমি আমার জমিতে মার্কেট নির্মাণ করেছি, কবরস্থানের জমিতে নয়। আর এখানে কোনো কবরস্থান নেই। একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। এ বিষয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন- এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে। তারা রেকর্ডপত্র যাচাই ও তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবেন। ওই আলোকেই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।