বেলজিয়ামের ৯ বছর বয়সী এক শিশুকে স্নাতক ডিগ্রি দিতে যাচ্ছে দেশটির একটি বিশ্ববিদ্যালয়। লরেন্ট সাইমন্স নামের এই জিনিয়াস পড়াশুনা করছিলেন আইনধোভেন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগে। এই কোর্স গড়পড়তা সাধারণ বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্যও অনেক কঠিন বলে বিবেচিত হয়। আর সেখানে মাত্র ৯ বছর বয়সেই ডিগ্রি লাভের যোগ্যতা অর্জন করেছে ওই শিশু। ডিসেম্বরে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিগ্রি প্রদান করা হবে। এ খবর দিয়েছে সিএনএন।খবরে বলা হয়, স্নাতক লাভের পর তড়িৎ প্রকৌশল নিয়ে পিএইচডি করার ইচ্ছা রয়েছে সাইমন্সের। তার পিতা বলেছেন, তার ইচ্ছা রয়েছে মেডিসিন ডিগ্রি লাভেরও! তার মা ও বাবা, লিডিয়া ও আলেক্সান্ডার বলেন, অনেক আগে লরেন্টের দাদী তার অনেক প্রশংসা করছিলেন। কিন্তু তারা ভেবেছিলেন দাদী হয়তো একটু বাড়িয়ে বলছিলেন। কিন্তু শেষে শিক্ষকরাও তাদেরকে জানান যে, তাদের সন্তান বিশেষ মেধা নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে। লিডিয়া বলেন, শিক্ষকরা তার মধ্যে খুবই আশ্চর্যজনক কিছু গুণ দেখতে পান।লরেন্টের পরিবারে অবশ্য ডাক্তারের সংখ্যা বেশি। কিন্তু তারাও আজ অব্দি ঠাওর করতে পারছেন না যে, লরেন্ট কীভাবে এত দ্রুত সব শিখতে পারে। অবশ্য লিডিয়া মজা করে বললেন, গর্ভাবস্থায় অনেক মাছ খেয়েছিলাম। সেটা একটা কারণ হতে পারে!বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা অন্য শিক্ষার্থীদের চেয়েও লরেন্টকে তাড়াতাড়ি এই স্নাতক কোর্স শেষ করতে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিচালক জোয়ের্ড হালশফ বলেন, এটি অস্বাভাবিক নয়। বিশেষ শিক্ষার্থীরা যাদের দ্রুত কোর্স শেষ করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে তারা বিশেষ সময়সীমা পেতে পারেন। ক্রীড়াক্ষেত্রে খুব ভালো করেন এমন শিক্ষার্থীদের বেলায়ও এই বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়।হালশফ বলেন, লরেন্ট স্রেফ অসাধারণ! আমরা এ পর্যন্ত যত শিক্ষার্থী পেয়েছি, লরেন্ট তাদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত সব শিখে ফেলেছে। সে শুধু অত্যন্ত মেধাবীই নয়, খুব অনুুুভূতিপ্রবণও। লরেন্ট সিএনএনকে বলেছে যে, তার প্রিয় বিষয় হলো তড়িৎ প্রকৌশল। এছাড়া মেডিসিন নিয়েও পড়াশুনা করার ইচ্ছা আছে তার। লরেন্টের এই অনন্যসাধারণ কীর্তির কথা এখন ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্বের সবচেয়ে নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইতিমধ্যে তাকে ভর্তি করানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে এখনই লরেন্টের পরিবার বলতে চায় না যে, সে কোথায় পিএইচডি করার কথা ভাবছে। তার পিতা বলেন, তথ্য নিজের ভেতরে নেয়াটা লরেন্টের জন্য সমস্যা নয়। এখন তার ফোকাস হওয়া উচিত গবেষণা ও নিজের লব্ধ জ্ঞান প্রয়োগ করে নতুন কিছু আবিষ্কারের প্রতি। লরেন্ট হয়তো বেশির ভাগ মানুষের চেয়ে দ্রুতগতিতে সব শিখতে পারে। কিন্তু তার পিতামাতা চান তার শৈশব যেন নষ্ট না হয়। আলেক্সান্ডার বলছিলেন, আমরা চাই না সে খুব সিরিয়াস হয়ে যাক। সে যা করতে পছন্দ হয় তা-ই করে। একজন শিশু ও তার প্রতিভার মধ্যে ভারসাম্য থাকা চাই। লরেন্ট অবশ্য তার পোষা কুকুর স্যামির সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করে। এছাড়া ফোনে গেম খেলে অন্য শিশুদের মতোই। তবে বেশির ভাগ ৯ বছর বয়সী শিশু যেটা পারেনি, লরেন্ট সেটা ইতিমধ্যে করে ফেলেছে। সে নিজের জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে ফেলেছে! তার ইচ্ছা কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি করা।তবে সবকিছুর আগে জাপানে ছুটি কাটাতে যেতে চায় লরেন্ট।