হোসেনপুরে যত্রতত্র ভাগাড় ভরাট হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদ
প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর পৌর এলাকায় যত্রতত্র ময়লা আর্বজনা ফেলায় পৌর এলাকার বেশ কয়েকটি স্থান ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এছাড়া পৌর এলাকার ময়লা ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে কৌশলে ময়লার উপর কিছু দিন পর পর মাটি ফেলে এর উপর দোকান-পাট নির্মাণ করে দখলে নেয়া হচ্ছে। যত্রতত্র ময়লা ফেলার কারণে আবাসিক, ব্যবসায়ীক এলাকা ভাগাড়ে পরিণত হওয়ায় ভুক্তভোগীরা পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। কোমলমতি শিক্ষার্থী, পথচারীদের দুর্গন্ধের মধ্যেই চলতে হচ্ছে। এ নিয়ে পৌরবাসীর মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও পৌর কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এ পৌরসভাটি প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কিশোরগঞ্জ-হোসেনপুর সংসদীয় আসনের অংশ বিশেষ হওয়ার সুবাধে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত একটি তিন তলা ভবনসহ ২০১৫ সালে ময়লা ফেলার জন্য ৫০ লাখ টাকা মূল্যের দুইটি পিকআপ ভ্যান দেওয়া হয়। পিকআপ ভ্যান দু’টি অযত্ন, অবহেলায় ও ব্যবহার না করায় দীর্ঘদিন যাবৎ খোলা আকাশের নিচে পড়ে রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে।সাবেক প্যানেল মেয়র মো. কাজল মিয়া জানান, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের জন্য পূর্বে ময়লা ফেলার জন্য ৯ জন পরিছন্ন কর্মী ও ২ জন ড্রাইভার ছিল। গাড়ি নষ্ট থাকায় দু’জন ডাইভার দিয়ে এখন রোলার চালানো হয়। পরিছন্ন কর্মী কমিয়ে ৩ জনে আনা হয়েছে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌর এলাকার সবজি মহাল, ধান মহাল, কাপড় পট্টি এলাকায় ময়লার স্তুপ করে রাখা হয়েছে। এ সময় কথা হয় স্থানীয় পাঁচজন ব্যবসায়ীর সাথে।কথা-মনি ফ্যাশনের মালিক মঞ্জিল মিয়া দু:খ প্রকাশ করে বলেন, এক সময় হোয়াংহোকে চীনের দু:খ বলা হত, আর হোসেনপুরের দু:খ হল ময়লা; ময়লার জন্য মশা-মাছির উৎপাত যেমনি রয়েছে, তেমনি দুর্গন্ধের মাঝেই বসবাস করতে হচ্ছে। এছাড়াও ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট ভাগাড় না থাকায় প্রতিদিন ভ্যান গাড়িতে করে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে ময়লা ফেলে এর উপর কিছু দিন পর পর বালি ও মাটি ফেলে নদের অংশ ভরাট করে অবৈধভাবে দখলে নিয়ে মার্কেট গড়ে তোলা হচ্ছে। এক সময়ের খরস্রোতা নদ তাই এখন দখল-দূষণের শিকার।এড়াছা ভুয়া জাল দলিল করে জলমহালের এক কিলোমিটার জায়গা জোরপূর্বক দখল করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। গত বছর বিদায়ী ইউএনও আবদুল্লাহ আল মামুন অবৈধ দখলের হাত থেকে উদ্ধার করে উন্মুক্ত করে দিলেও কিছু দিনের মধ্যে আবার তা দখলে চলে যায়।নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মহিউদ্দিনকে এ বিষয়ে অবহিত করা হলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।এ বিষয়ে পৌর মেয়র আবদুল কাইয়ুম খোকন জানান, হোসেনপুরে ময়লা ফেলানোর তথা ডাম্পিংয়ের কোন ব্যবস্থা নেই। উপজেলা প্রশাসনসহ কোন বিভাগ এ বিষয়ে এগিয়ে আসে না। বাধ্য হয়ে কোন কোন স্থানে আবর্জনা ও ময়লা ফেলতে বাধ্য হচ্ছে পৌরবাসী। বর্তমানে ঢাকায় আছি। আমি ফিরে এসে স্থানীয়দের নিয়ে একটি বড় সভা করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।