ফেনীতে নিখোঁজের ৭ দিন পর মোশারফ হোসেন সজীব (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা। সে ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের গজারিয়াকান্দি গ্রামের কাতার প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে এবং ফেনী শহরের হলি ক্রিসেন্ট ইনস্টিটিউটের ৮ম শ্রেণির ছাত্র। ফেনী পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জমান জানান, গত ১২ই আগস্ট ঈদুল আজহার দিন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয় মোশারফ হোসেন সজীব। এ সময় সজীবের অপর সহপাঠী সজীবসহ তিনজন পার্শ্ববর্তী একটি মুরগির খামারে যায়। রাতে মোশারফ হোসেন সজীব ঘরে না ফিরলে পরিবারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করে স্বজনরা। তাকে না পেয়ে পরদিন ১৩ই আগস্ট সকালে তার মা ফারজানা আক্তার ফেনী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে বিষয়টি পিবিআই ও র‌্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পকে জানানো হয়। পিবিআই নিখোঁজ মোশারফ হোসেন সজীবের সহপাঠী সজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় তারা ঘাঘরা গ্রামের একটি মুরগির খামারে গেলে খামার মালিক তাদের তাড়া করে। পরে সে পালিয়ে বাড়ি ফিরলেও তার বন্ধু মোশারফ হোসেন সজীব কোথায় সে জানাতে পারেনি। এদিকে সজীবের দেখানো মতে মুরগির খামারের মালিক মো. মানিক মিয়াকে (৪৫) আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতে পিবিআই সদস্যরা শর্শদি ইউনিয়নের ঘাঘরা গ্রামের ওই মুরগির খামারে মাটির নিচে পুঁতে রাখা সজীবের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। পিবিআইর জিজ্ঞাসাবাদে খামার মালিক মো. মানিক মিয়া তাদের জানিয়েছে, পালাতে গিয়ে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে সজিব মারা যায়। মামলার ভয়ে তাকে খামারের ভেতর পুকুর পাড়ে মাটিচাপা দিয়ে রাখে। তবে নিহতের স্বজনরা দাবি করেছে, সজীবকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। সজীবের মুখ থেঁতলানোসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, মুরগি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্তে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন হবে। এঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া পিবিআইর হাতে আটক খামার মালিক মো. মানিক মিয়াসহ দু’জনকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।