ছবি সংগৃহীত

রিজার্ভ চুরি: পেছাল চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ

বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের ডেকে জানিয়ে দেন, সহসা ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে না।

priyo.com
লেখক
প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১০:১৭ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮, ০৬:৫৬
প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১০:১৭ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮, ০৬:৫৬


ছবি সংগৃহীত

ফাইল ছবি

(প্রিয়.কম) বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি নিয়ে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের জন‌্য তারিখ আবারও অনির্দিষ্টকালের জন‌্য পিছিয়ে দেওয়া হলো।

বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের ডেকে জানিয়ে দেন, সহসা ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে না। এ সময় তিনি বলেন, ‘এটা আমার ঘোষণা মত কালকে প্রকাশ করা হবে না। বেশ দেরি হবে… বেশ দেরি হবে।’

গত রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাওয়ার আগেই বৃহস্পতিবার তিনি ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে যাবেন

ফরাসউদ্দিন গত ৩০ মে ওই প্রতিবেদন দেওয়ার পর অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন, রিপোর্টে যা আছে, তা অবশ‌্যই প্রকাশ করা হবে। কিন্তু এ পর্যন্ত কয়েক দফা সময় দিয়েও কথা রাখেননি মুহিত। এবার তিনি যুক্তি হিসেবে ফিলিপিন্সে টাকা উদ্ধারে মামলা চলার কথা বলেছেন। 

ইতোমধ‌্যে এ বিষয়ে ফিলিপিন্স ও আমাদের মধ‌্যে আলোচনা চলছে। আমরা সেখানে মামলা মোকদ্দমা করেছি। ইত‌্যাদি নানান কিছু আছে। এই রিপোর্ট বেরুলে সেগুলো আপসেট হয়ে যাবে। সেজন‌্য রিপোর্ট এখন বের হচ্ছে না। পরে বের করব। তারিখ বলতে পারছি না। ইট উইল বি পাবলিশড।

গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে। আর আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার।

শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ ওই অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া শেষ পর্যন্ত আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশিরভাগটাই স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাইবার চুরির এই ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে ঘটনার এক মাস পর, ফিলিপিন্সের একটি পত্রিকার খবরের মাধ্যমে।

বিষয়টি চেপে রাখায় সমালোচনার মুখে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন আতিউর রহমান; কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে আনা হয় বড় ধরনের রদবদল।

ওই সময়ই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মামলা করা হয়। ১৫ মার্চ সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি, যার প্রধান করা হয় সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কীভাবে, কার বরাবরে ভুয়া পেমেন্ট ইন্সট্রাকশন পাঠানো হয়েছিল, অবৈধ পরিশোধ ঠেকাতে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল কি না, রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রায় এক মাস গোপন রাখা যৌক্তিক ছিল কি না, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের অবহেলা ছিল কি না এবং অর্থ উদ্ধারের সম্ভাবনা, গৃহীত কার্যক্রমের পর্যাপ্ততা ও পুনরাবৃত্তি রোধে গৃহীত ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কমিটিকে।

বেধে দেওয়া সময় অনুযায়ী গত ২০ এপ্রিল অর্থমন্ত্রীর কাছে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দেয় ফরাসউদ্দিনের কমিটি। এরপর ৩০ মে দেওয়া হয় পুরো প্রতিবেদন।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কয়েক দফা সময় দেওয়ার পরও ওই প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশিত না হওয়ায় অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ‘ক্ষোভ’ প্রকাশ করা হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠান বিষয়ক সংসদীয় কমিটিও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেখতে চায়।

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...