লিপি খন্দকার। ছবি: সংগৃহীত।
(প্রিয়.কম) লিপি খন্দকার। ‘বিবিয়ানা’ ফ্যাশন হাউজের প্রতিষ্ঠাতা। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ঐতিহ্যবাহী পোশাক তৈরির ক্ষেত্রে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে এই ফ্যাশন হাউজ। প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে লিপি খন্দকার কথা বলেন প্রিয়.কমের সাথে।
প্রিয়.কম: আপনার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল হিসেবে বিবিয়ানার অবস্থান আজ কোথায়?
লিপি খন্দকার: ধন্যবাদ আপনাকে। বিবিয়ানা আজ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ফ্যাশন হাউজে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে মোট ৯টি শাখা আছে। ৮টি শাখা ঢাকায় ও একটি চট্টগ্রামে অবস্থিত।
প্রিয়.কম: শুরু থেকে এই পর্যন্ত আপনারা কয়জন কারুশিল্পী নিয়ে কাজ করছেন?
লিপি খন্দকার: আমি যখন এই ফ্যাশন হাউজ শুরু করি, আমি নিজেই একজন ফ্যাশন ডিজাইনার ছিলাম। কালের পরিক্রমায় আজ প্রায় ১৫০০ জন কারুশিল্পী নিয়ে কাজ করছি আমরা।
প্রিয়.কম: অসাধারণ সাফল্য! এবার শোনা যাক বিবিয়ানার বুনন প্রক্রিয়ার ব্যাপারে। আপনারা কোন ক্ষেত্রে অন্য একটি ফ্যাশন হাউজ থেকে আলাদা?
লিপি খন্দকার: আমি অবশ্যই বলব আমাদের বুনন প্রক্রিয়া বেশ আলাদা। আমাদের ডিজাইন শুরুই হয় মূলত তাঁতীর হাতে। একটি কালেকশন চালু করার পর প্রায় ৬-৮ মাস পর আমরা তাঁতীদের অর্ডার দিই। তারা তখন কাজ শুরু করেন। কাপড় বোনা শেষ হলে বিভিন্ন ডিজাইন আরোপ করা হয়। আমাদের বিবিয়ানাতে শুধু কাপড়ের গুণাগুণই গুরুত্বপূর্ণ নয়, আমরা কাঁচামাল ও ডিজাইন এর দিকেও সমান খেয়াল রাখি। এক্ষেত্রে আমি মনে করি নিঃসন্দেহে আমরা অন্য একটি ফ্যাশন হাউজ থেকে আলাদা।
প্রিয়.কম: আপনাদের পোশাকের কথা শোনা হল, আউটলেটগুলোও নিশ্চয়ই ভিন্নধর্মী?
লিপি খন্দকার: আপনি যখনই আমাদের শোরুমে প্রবেশ করবেন,রঙের ঝলমলে ভাব আপনাকে মুগ্ধ করে রাখবে। এভাবেই সাজানো হয়েছে আমাদের প্রতিটি শোরুম। সব উজ্জ্বল রঙ দিয়ে সাজানো হয়েছে যেমন লাল, হলুদ, কমলা, সবুজ ও বেগুনি। রুচিশীল ও ঐতিহ্যবাহী ছাপ আমাদের পোশাকে ও শোরুমে সব জায়গায় পাবেন। এভাবেই বলা যায় আমাদের আউটলেটগুলোও ভিন্নধর্মী।
প্রিয়.কম: আপনাদের পোশাকের ভিন্নতা সম্পর্কে কিছু বলুন।
লিপি খন্দকার: প্রথমত, আমি আমাদের সালোয়ার-কামিজের ব্যাপারে বলব। এটি দারুণ ও অত্যন্ত নিখুঁতভাবে এমব্রয়ডারি ও অ্যাপ্লিক এর কাজ করা। বেশিরভাগই সুতী কাপড়ের। এগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন আনুষ্ঠানিক ও খুব সাধারণভাবেও পরা যায়। দামের দিক থেকেও এগুলো সাধ্যের মধ্যে। আমাদের আনস্টিচ সালোয়ার-কামিজও আছে।
প্রিয়.কম: দ্বিতীয়ত শাড়ির ব্যাপারে কিছু বলুন।
লিপি খন্দকার: বিবিয়ানার শাড়ির কালেকশন অনেক উন্নত। সুতী শাড়ির সাথেই ব্লক প্রিন্ট করা হয়েছে যেন সাধারণ কিছুকেই অসাধারণভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। হাফ-সিল্ক শাড়ির সাথেও অ্যাপ্লিক এর কাজ করা হয়েছে। দাম ৮৫০ থেকে শুরু।
প্রিয়.কম: শাড়ি এবং সালোয়ার কামিজ ছাড়া আর কিছু আছে?
লিপি খন্দকার: মেয়েদের জন্য বিভিন্ন আকার ও ডিজাইনের কুর্তি আছে। প্রতিদিন খুব স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে পরতে পারবে এমন কুর্তি। ওগুলোর দাম হল ৫০০ থেকে ১০০০ এর মধ্যে। কুর্তির সাথে পরার জন্য ওড়না ও বটম ওয়্যার আছে। ধুতি পাজামা, চুড়িদার ইত্যাদি। বিভিন্ন রঙের কম্বিনেশনে পাওয়া যাবে।
প্রিয়.কম: আপনাদের গহনার কালেকশনের ব্যাপারে কিছু বলুন।
লিপি খন্দকার: একটা নিপুণ পোশাকের পূর্ণতা অনেকটাই নির্ভর করে রুচিশীল গয়নার ওপর। আমাদের সেরকমই কিছু গয়না আছে। কানের দুল, গলার হার, চুড়ি পাওয়া যাবে। এগুলোও একদম সাধ্যের ভেতরেই।
প্রিয়.কম: নারীদের কথা বেশ শোনা হল। পুরুষদের জন্যে কি কি আছে?
লিপি খন্দকার: ছেলেদের জন্যে ঐতিহ্যবাহী ব্লক প্রিন্টের শার্ট আছে। ফুলহাতা,হাফহাতা দুটোই। পাঞ্জাবিও আছে। তার মধ্যে ব্লক প্রিন্ট, স্ক্রীন প্রিন্ট, অ্যাপ্লিক ও এমব্রয়ডারির কাজ থাকছে। রঙ খুব পরিমিত রাখা হয়েছে। চোখে পড়ার মত কিন্তু খুব কড়া নয়।
প্রিয়.কম: বিভিন্ন উৎসবের জন্য আপনাদের প্রস্তুতিটা ঠিক কেমন থাকে?
লিপি খন্দকার: স্বাধীনতা দিবস ও পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে আমরা এখন কাজ করছি। লাল, সবুজ রঙের আধিক্য দেয়া হয় এক্ষেত্রে। গ্রীষ্মের সময়ে সাদা রঙের গুরুত্ব দেয়া হয় কারণ এই রংটাই খুব শান্তিপূর্ণ। বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গানের লাইনও আমরা প্রিন্ট হিসেবে বসিয়ে থাকি।
প্রিয়.কম: ভোক্তা ও ক্রেতাসমাজের প্রতি বিবিয়ানার বক্তব্য কি?
লিপি খন্দকার: আমাদের একটাই প্রতিশ্রুতি সাধ্যের ভেতরেই আমরা যেন উন্নতমানের ও রুচিশীল পোশাক দিতে পারি। তারা যেন বিবিয়ানাতে আসেন এবং দেখে যান আমাদের ঐতিহ্যবাহী আউটলেট ও পোশাকের সমাহার।
সম্পাদনা: গোরা
পাঠকের মন্তব্য(০)
মন্তব্য করতে লগইন করুন