কুর্দি অবস্থান লক্ষ্য করে তুর্কি বাহিনীর ট্যাংক হামলা। ছবি: এএফপি

সিরিয়ায় ঢুকে পড়েছে তুরস্কের সেনারা

গত কয়েকদিন তুর্কি বাহিনী শুধু ট্যাংক হামলায় সীমাবদ্ধ থাকলেও রোববার সকাল থেকে অন্তত ৭২টি তুর্কি জঙ্গি বিমান আফরিনের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা শুরু করে।

আবু আজাদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০১৮, ১৯:৫৩ আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০১৮, ০৫:০১
প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০১৮, ১৯:৫৩ আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০১৮, ০৫:০১


কুর্দি অবস্থান লক্ষ্য করে তুর্কি বাহিনীর ট্যাংক হামলা। ছবি: এএফপি

(প্রিয়.কম) সিরিয়ার কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠী ওয়াইপিজি’কে দমন করতে সীমান্ত অতিক্রম করে ট্যাংকবহর ও সাজোয়াযানসহ আফরিন শহরে ঢুকে পড়েছে তুর্কি বাহিনী।

২১ জানুয়ারি রোববার ইস্তানবুলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম। তিনি বলেন, তুর্কি সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে ওয়াইপিজি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ঢুকে পড়েছে। তারা আফরিনের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করবে। 

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, তুরস্কের সেনাদের একটি বহর সাজোয়াযান ও বিশেষ পদাতিক বাহিনী নিয়ে সিরিয়ার আফরিনের ৫ কিলোমিটার অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েছে। অবশ্য এর আগেই কুর্দি বিদ্রোহী ওয়াইপিজি’র বিরুদ্ধে লড়াই করতে তুরস্কপন্থী ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সদস্যরা আফরিনে স্থলহামলা শুরু করে। 

কুর্দি অবস্থানের ওপর তুর্কি বিমান হামলা। ছবি: এএফপি

কুর্দি অবস্থানের ওপর তুর্কি বিমান হামলা। ছবি: এএফপি

তুর্কি সেনাবাহিনীর অগ্রসর হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ওয়াইপিজি বলছে, তুরস্কের সেনারা আফরিনের বিলিবিলি জেলার দুটি গ্রামে আক্রমণ করেছে। 

গত শনিবার থেকে তুর্কি বাহিনী শুধু ট্যাংক হামলায় সীমাবদ্ধ থাকলেও রোববার সকাল থেকে বিমান হামলা শুরু করে। ওয়াইপিজির এক মুখপাত্র জানান, অন্তত ৭২টি জঙ্গি বিমান আফরিনে বিভিন্ন কুর্দি স্থপনায় হামলা চালায়। এ সব হামলায় অন্তত ৬ বেসামরিক নাগরিক, দুইজন নারী কুর্দি যোদ্ধা এবং একজন পুরুষ কুর্দি যোদ্ধা নিহত হয়। এ ছাড়া অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছে। 

কুর্দি অবস্থানের উদ্দেশ্যে ফ্রি সিরিয়ান আর্মির আক্রমণ। ছবি: এএফপি

কুর্দি অবস্থান লক্ষ্য করে ফ্রি সিরিয়ান আর্মির আক্রমণ। ছবি: এএফপি

তুরস্কের সেনাবাহিনী জানায়, রোববার তারা অন্তত ১৫৩টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এ সব হামলায় কুর্দিদের প্রশিক্ষণ শিবির, গোপন আস্তানাসহ বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। 

সিরিয়ার কুর্দি ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টির (পিওয়াইডি) সশস্ত্র শাখার নাম ওয়াইপিজি, যা তুরস্কের কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। পিকেকে স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে তুরস্কের অভ্যন্তরে কয়েক দশক ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তুরস্ক এই দুটি সংগঠনকেই সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করেছে। 

 

মানচিত্রে তুরস্ক ও সিরিয়ার আফরিন শহরের অবস্থান। ছবি: এএফপিসম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ৩০ কুর্দি

তুরস্কের সীমান্তবর্তী সিরিয়ার আফরিন শহর। ছবি: এএফপি

সম্প্রতি মিলিশিয়াদের নিয়ে একটি সীমান্তরক্ষী বাহিনী তৈরির ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির এ ঘোষণায় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েফ এরদোয়ান

কিন্তু যুক্তরাষ্ট তার সিদ্ধান্তে অটল থাকায় কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দেয় তুরস্ক এবং এই লক্ষ্যে সিরিয়ার আফরিন শহরের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সমরাস্ত্র মোতায়েন শুরু করে। বিশ্লেষকের বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দিদের বিরুদ্ধে তুরস্কের এই অভিযান সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ এবং বিশ্ব রাজনীতিতে নাটকীয় রূপ দেবে।  

সূত্র: আল জাজিরা

প্রিয় সংবাদ/শান্ত

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...