সিরিয়া সীমান্তে মোতায়েন তুর্কি ট্যাংক আফরিনে গোলাবর্ষণ শুরু করেছে। ছবি: এএফপি

সিরিয়ায় স্থল অভিযান শুরু হয়েছে: এরদোয়ান

বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে উপেক্ষা করে কুর্দিদের বিরুদ্ধে তুরস্কের এই অভিযান সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ এবং বিশ্বরাজনীতিতে নাটকীয় রূপ দেবে।

আবু আজাদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০১৮, ২২:০৫ আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৮, ২২:৩২
প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০১৮, ২২:০৫ আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৮, ২২:৩২


সিরিয়া সীমান্তে মোতায়েন তুর্কি ট্যাংক আফরিনে গোলাবর্ষণ শুরু করেছে। ছবি: এএফপি

(প্রিয়.কম) সিরিয়ার কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠী ওয়াইপিজি’তে দমন করতে সিরিয়ার আফরিনে জোর স্থল অভিযান শুরু করা হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেফ তায়েফ এরদোয়ান। ২০ জানুয়ারি শনিবার জাস্টিট অ্যান্ড ডেভোলপমেন্ট পার্টির ষষ্ঠ প্রাদেশিক কংগ্রেস উদ্ধোধনকালে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রিসেফ তায়েফ এরদোয়ান বলেন, পিকেকে, ওয়াইপিজি, পিওয়াইডি সবই সন্ত্রাসী সংগঠন। তাদের নাম আলাদা হতে পারে কিন্তু চরিত্র একই, তারা সন্ত্রাসী। 

তিনি বলেন, এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কেবল নাম পরিবর্তনের মাধ্যমেই সিরিয়াতে হস্তক্ষেপ করছে। 

 সিরিয়া সীমান্তে মোতায়েন তুর্কি ট্যাংক। ছবি: এএফপি

সিরিয়া সীমান্তে মোতায়েন তুর্কি ট্যাংক। ছবি: এএফপি

এরদোয়ান বলেন, আফরিনে স্থল অভিযান শুরু হয়েছে কারণ তুরস্কের সাথে কথা রাখা হয়নি। তারা তুরস্ক এবং বিশ্বের মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে।  

এর আগে গত শুক্রবার তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নুরেটিন ক্যানিকলি বলেছিলেন, তুরস্ক অবশ্যই আফরিনে সামরিক অভিযান চালাবে। তারা আমাদের জন্য সত্যিকারের হুমকি। 

এদিকে, সিরিয়ার কুর্দি বিদ্রোহী ওয়াইপিজি’র বিরুদ্ধে লড়াই করতে তুরস্কপন্থী ফ্রি সিরিয়ান আর্মিকে আফরিন শহরের প্রান্তে পাঠাচ্ছে তুরস্ক। 

তুরস্কের প্রভাবশালী সংবাদ সংস্থা আনদেলু জানায়, তুরস্কের নিরাপত্তা শঙ্কায় সিরিয়ার কিলিয়ার প্রদেশ থেকে অন্তত ২০টি বাসে করে ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সদস্যরা দেশটির দক্ষিণে (আফরিন শহরের দিকে) গেছে। 

বাসভর্তি ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সদস্যরা আফরিনের দিকে রওনা হয়েছে। ছবি: এএফপি

বাসভর্তি ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সদস্যরা আফরিনের দিকে রওনা হয়েছে। ছবি: এএফপি

কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার সিরিয়া প্রতিবেদক স্টিফানি ডেকার জানান, সিরিয়ার পূর্বাঞ্চল থেকে অন্তত ১৫ হাজার ফ্রি সিরিয়ান যোদ্ধা আফরিন শহরের দিকে রওনা হয়েছে। যারা কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠী ওয়াইপিজি’র বিরুদ্ধে তুরস্কের সম্ভাব্য অভিযানে যোগ দেবে।

তিনি বলেন, আফরিনের পরিস্থিতি ক্রমেই উতপ্ত হয়ে উঠছে। সেখানে তুরস্কের বোমা বর্ষণের পরিমাণও বৃদ্ধি করেছে। মূলত রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের কারণেই তুরস্ক এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারে।

এর আগেও ২০১৭ সালে ওয়াইপিজি’র বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ইউফ্রেটিস শিলড’ নামের একটি অভিযান চালিয়েছিল তুরস্ক। সেসময়ও ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সদস্যরা স্থল অভিযানে তুর্কি বাহিনীকে সহায়তা করেছিল। ধারণা করা হচ্ছে, আফরিনে ৮ থেকে ১০ হাজার কুর্দি মিলিশিয়া অবস্থান করছে। 

সিরিয়ায় লড়াইরত ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সদস্য। ছবি:

সিরিয়ায় লড়াইরত তুরস্ক সমর্থিত ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সদস্য। ছবি: এএফপি

প্রসঙ্গত, সিরিয়ার কুর্দি ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টি (পিওয়াইডি) এর সশস্ত্র শাখার নাম ওয়াইপিজি যা তুরস্কের ‘কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে)’ এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। পিকেকে স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে তুরস্কের অভ্যন্তরে কয়েক দশক ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তুরস্ক এই দুটি সংগঠনকেই সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করেছে। 

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ৩০ কুর্দি মিলিশিয়াদের নিয়ে একটি সীমান্তরক্ষী বাহিনী তৈরির ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ওই ঘোষণায় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েফ এরদোয়ান।

মানচিত্রে তুরস্ক ও সিরিয়ার আফরিন শহরের অবস্থান। ছবি: এএফপি

মানচিত্রে তুরস্ক ও সিরিয়ার আফরিন শহরের অবস্থান। ছবি: এএফপি

কিন্তু যুক্তরাষ্ট তার সিদ্ধান্তে অটল থাকায় কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দেয় তুরস্ক এবং এই লক্ষ্যে সিরিয়ার আফরিন শহরের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সমরান্ত্র মোতায়েন শুরু করে। বিশ্লেষকের বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দিদের বিরুদ্ধে তুরস্কের এই অভিযান সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ এবং বিশ্বরাজনীতিতে নাটকীয় রূপ দেবে।  

প্রিয় সংবাদ/কেএফ

 

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...