শ্রীলঙ্কায় দত্তক ব্যবসার কথা স্বীকার করে নিয়েছে দেশটির সরকার। সংগৃহীত ছবি

শ্রীলঙ্কায় বাচ্চা উৎপাদন কারখানা, ‘দত্তক ব্যবসা’র কথা স্বীকার করলেন মন্ত্রী

ইউরোপে বিক্রি হয়ে যাওয়া ১১ হাজার শিশুর মধ্যে অনেকেরই জন্ম হয়েছে বাচ্চা উৎপাদন কারখানায়। সেখানে নারীদের আটকে রেখে জোর করে সন্তান জন্মদানে বাধ্য করা হতো। এসব শিশু দত্তক দেওয়ার সময় দুই পক্ষকেই ভুয়া কাগজপত্র দেওয়া হয়েছিল।

জাহিদুল ইসলাম জন
জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক, নিউজ এন্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স
প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৩:৪৪ আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০১৮, ০৫:৪৯
প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৩:৪৪ আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০১৮, ০৫:৪৯


শ্রীলঙ্কায় দত্তক ব্যবসার কথা স্বীকার করে নিয়েছে দেশটির সরকার। সংগৃহীত ছবি


(প্রিয়.কম) ১৯৮০’র দশকে জোর করে নারীদের গর্ভধারণে বাধ্য করার পর কয়েক হাজার শিশুকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে দত্তক দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার।

ডেনমার্কের একটি ডকুমেন্টারিতে শ্রীলঙ্কান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইউরোপে বিক্রি হয়ে যাওয়া ১১ হাজার শিশুর মধ্যে অনেকেরই জন্ম হয়েছে বাচ্চা উৎপাদন কারখানায়। সেখানে নারীদের আটকে রেখে জোর করে সন্তান জন্মদানে বাধ্য করা হতো। এসব শিশু দত্তক দেওয়ার সময় দুই পক্ষকেই ভুয়া কাগজপত্র দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।

শ্রীলঙ্কান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. রাজিত্রা সেনাওয়াত্রা বলেছেন, এসব শিশুদের প্রকৃত মায়েদের খুঁজে পেতে ডিএনএ ডাটাবেজ তৈরির কাজ চলছে।

সুইডেন, ডেনমার্ক, জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে এসব শিশুদের দত্তক দেওয়া হলেও নেদাল্যান্ডে এরকম চার হাজার শিশুকে সনাক্ত করা হয়েছে।

রাওয়ান ভ্যান ভেলেন নামে এরকম এক দত্তকি শিশু বিবিসিকে বলেন, তিনি তার মাকে খুঁজতে কয়েকবারই শ্রীলঙ্কায় গিয়েছেন। তবে খুঁজে পাননি। রাওয়ান এখন নেদারল্যান্ড ভিত্তিক সামাজিক নেটওয়ার্কে কাজ করেন। তার সংস্থা শ্রীলঙ্কান মায়েদের জন্ম দেওয়া শিশুদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি বলছিলেন, দত্তক দেওয়ার সময় দুই পক্ষকেই যেসব কাগজপত্র দেওয়া হয়েছিল তার সবকিছুই ভুয়া। ফলে তাদের খুঁজে পাওয়া এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নেদারল্যান্ডে এরকম শিশুদের একটি ডিএনএ ডাটাবেজ তৈরির চেষ্টা করছেন তারা। একই সঙ্গে অন্যদেশগুলোতেও একই কার্যক্রম চালাতে চায় তার সংস্থা।

ডেনমার্কের জেমব্লা নামে একটি সংস্থা ডকুমেন্টারিটি তৈরি করেছে। তাদের একজন গবেষক নরবার্ট রেইনজেইনস জানান, তারা ভুয়া কাগজপত্র তৈরির পর্যাপ্ত প্রমাণ পেয়েছেন। এসব কাগজপত্রের ছিলো জন্ম সনদ, এবং পিতামাতাদের ভুয়া নাম পরিচয়।

কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তারা এমনও প্রমান পেয়েছেন যে টাকার বিনিময়ে নারীদের বাচ্চার মা হিসেবে দেখানো হয়েছিল। স্থানীয় কয়েকজন হাসপাতাল কর্মী টাকার বিনিময়ে এসব নারীদের ধরে আনত বলে ডকুমেন্টারিটিতে অভিযোগ করা হয়েছে।

১৯৮৭ সালে ২০ জন নবজাতককে উদ্ধারের পর একটি বাচ্চা উৎপাদন কারখানার সন্ধান পায় শ্রীলঙ্কান সরকার। কারাগারের মতো ১০ ফুট উঁচু দেওয়াল বেষ্টিত জায়গায় নারীদের রেখে সন্তান ধারণে বাধ্য করা হতো সেখানে।

এই কারাগারের সন্ধান পাওয়ার পর ওই বছরই আন্ত দেশীয় দত্তক দেওয়ার রীতি নিষিদ্ধ করে দেশটির সরকার।

প্রিয় সংবাদ/শিরিন

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...