প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। ফাইল ছবি

রোহিঙ্গাদের কলেরা প্রতিষেধক টিকা খাওয়ানো হবে

কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ক্যাম্পে থাকা সব রোহিঙ্গা এই টিকা কার্যক্রমের আওতায় থাকবে।

সজিব ঘোষ
সহ-সম্পাদক, নিউজ এন্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স
প্রকাশিত: ০৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৯:২৫ আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০১৮, ২০:১৬
প্রকাশিত: ০৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৯:২৫ আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০১৮, ২০:১৬


প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। ফাইল ছবি

(বাসস) কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের কলেরা ভ্যাকসিন (টিকা) খাওয়ানোর কার্যক্রম ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে। উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও রোগ প্রতিষেধক টিকা কার্যক্রমের সমন্বয়কারী ডা. মিসবাহ উদ্দিন আহমেদ ৬ অক্টোবর শুক্রবার এসব তথ্য জানান।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের উদ্যোগে কলেরা প্রতিষেধক টিকা খাওয়ানো কার্যক্রমে শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী রোহিঙ্গারাই অন্তর্ভুক্ত থাকছে। তবে ১৫ বছর ও তার নীচের শিশু-কিশোরদের প্রত্যেককে দুই ডোজ এবং পনেরউর্দ্ধ বয়সীদের এক ডোজ করে কলেরা প্রতিষেধক টিকা খাওয়ানো হবে। এ হিসেবে ৯ লাখ ওরাল কলেরা ভ্যকসিন (টিকা) প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ওরাল কলেরা ভ্যাকসিন (টিকা) খাওয়ানো কার্যক্রমে দেশি-বিদেশি সাহায্য সংস্থাগুলো সহযোগিতা করবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের উদ্যোগে ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের হাম-রুবেলা, পোলিও এবং ভিটামিন-এ টিকা খাওয়ানো হয়েছে। কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ক্যাম্পে থাকা সব রোহিঙ্গা এই টিকা কার্যক্রমের আওতায় থাকবে। 

তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আসছে ঠিকই কিন্তু সেইসাথে তারা নিয়ে আসছে মারাত্মক সব সংক্রামক রোগ। ইতোমধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে বিভিন্ন ক্যাম্পে। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অপুষ্টিজনিত কারণে রোহিঙ্গারা সহজেই এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এজন্যই সরকারিভাবে রোহিঙ্গাদের কলেরা টিকা খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ডা. মিসবাহ উদ্দিন আগামী ১০ অক্টোবর থেকে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে- এমন আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা শিশুকে দুই লাখ ৮০ হাজার ডোজ হাম-রুবেলা, পোলিও এবং ভিটামিন-এ প্রতিষেধক টিকা দেয়া হয়েছে। ৩ অক্টোবর থেকে ওই তিন ধরনের টিকা কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রয়েছে। এখন শুরু হচ্ছে কলেরার টিকা কার্যক্রম। এ কার্যক্রমে ১৫ বছর পর্যন্ত শিশুরা দুই ডোজ এবং এর বেশি বয়সীরা একটি করে ডোজ পাবেন।’ 

এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. শেখ অবদুস সালাম বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যেসব ঝুঁকিপূর্ণ রোগগুলোকে আমরা ইতোমধ্যে বিদায় দিতে সক্ষম হয়েছি তার অনেকগুলোই আবার ফিরে আসছে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে। এটি বড় শঙ্কার বিষয়। তবে ঝুঁকিপূর্ণ রোগগুলো এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। ইতোমধ্যে অনেক রোহিঙ্গা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে অনেকে। তাই আমরা কলেরার ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করবো শিগ্গিরই। 

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের মধ্যে কোনো সংক্রামক রোগ রয়েছে কিনা, তা যাচাইয়ে নমুনা সংগ্রহের জন্য সংক্রামক ব্যাধি, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাকেন্দ্র (আইইডিসিআর)-এর একটি বিশেষ মেডিকেল টিম কাজ করছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে। এই পর্যন্ত টেকনাফে ছয় জন হাম-রুবেলা আক্রান্ত রোহিঙ্গা শিশু শনাক্ত হয়েছে। হেপাটাইটিস-বি ও সি আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে ১০জন। এদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অসংখ্য রোহিঙ্গা বিভিন্ন ক্যাম্পে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।

প্রিয় সংবাদ/সজিব 

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...