লিস্টারিন শুধুমাত্র মাউথওয়াশ হিসেবে নয়, মাথার ত্বকের চুলকানি প্রতিরোধেও খুব ভালো কাজ করে থাকে।

মাথার ত্বকের চুলকানির সমস্যা কমাবে দারুণ এই উপাদানগুলো

অতিরিক্ত গরম, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া অথবা, মাথার ত্বক নিয়মিতভাবে পরিষ্কার না করার ফলে এই সমস্যা দেখা দেয়।

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:০৫ আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৪৮
প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:০৫ আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৪৮


লিস্টারিন শুধুমাত্র মাউথওয়াশ হিসেবে নয়, মাথার ত্বকের চুলকানি প্রতিরোধেও খুব ভালো কাজ করে থাকে।

(প্রিয়.কম) মুখের কিংবা হাত-পায়ের ত্বকের মতো মাথার ত্বকেও নানান ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। যার মাঝে অন্যতম সমস্যা হলো- মাথার ত্বকে চুলকানির প্রাদুর্ভাব। উকুন কিংবা খুশকি জনিত কারণ ছাড়াও, মাথার ত্বকে এই চুলকানি দেখা দেয় মাথার ত্বকে র‍্যাশ এর কারণে। অতিরিক্ত গরম, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া অথবা, মাথার ত্বক নিয়মিতভাবে পরিষ্কার না করার ফলে এই সমস্যা দেখা দেয়।

এমনটা হলে চুলের ভেতর দিয়ে মাথার ত্বকে হাত বোলালে ছোট ছোট দানার মতো মনে হয়। এটি হয়ে থাকে মূলত মাথার চুল ঘেমে গেলে এবং সেই ঘাম সঠিকভাবে না শুকালে। এমন ধরণের সমস্যার ক্ষেত্রে ঘরোয়া কিছু সহজলভ্য উপাদান দিয়ে সহজ পদ্ধতিতেই মাথার ত্বকের চুলকানি সারিয়ে ফেলা সম্ভব।

১/ টি ট্রি অয়েল

টি ট্রি অয়েল মাথার ত্বকের শুষ্কভাব কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। এটি মাথার ত্বককে কোমল করতে এবং মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগাতেও সাহায্য করে থাকে। টি ট্রি অয়েলে রয়েছে ‘টার্পিনস’। যা প্রাকৃতিকভাবেই অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাংগাল উপাদান। যার ফলে এটি মাথার ত্বকের যে কোন ধরণের ইনফেকশনের ক্ষেত্রেও অনেক ভালো কাজ করে থাকে।

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে:

হাতের তালুতে বেশ কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল নিয়ে মাথার ত্বকে সরাসরি মেখে খুব ভালোভাবে দশ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করতে হবে। এরপর সারা রাতের জন্য রেখে দিয়ে পরদিন চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এমন করতে হবে।

২/ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার

অ্যাপল সাইডার ভিনেগার অ্যাস্ট্রিনজেন্ট হিসেবে চুলের গোড়া পরিষ্কার করে থাকে। অ্যাপল সাইডার ভিনেগারে থাকা ম্যালিক অ্যাসিডে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাংগাল উপাদান। যা মাথার ত্বকে এবং চুলের গোড়ার সকল মরা চামড়া সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। অনেক সময় এই চুলের গোড়ায় জমে থাকা মরা চামড়া থেকেই মাথার ত্বকে চুলকানির উপদ্রব দেখা দেয়। এছাড়াও অ্যাপল সাইডার ভিনেগার চুলের গোড়ার pH এর মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে।

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে:

প্রথমে এক চা চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনেগারের সাথে চার-পাঁচ চা চামচ পানি খুব ভালোভাবে মেশাতে হবে। এরপর এই মিশ্রণ চুলের গোড়ায় খুব ভালোভাবে ম্যাসাজ করে কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে খুব দ্রুত মাথার ত্বকের চুলকানি ভালো হয়ে যায়। এই পদ্ধতি সপ্তাহে দুইবার মেনে চললে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

৩/ বেকিং সোডা

বেকিং সোডাতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাংগাল উপাদান। যা চুলের গোড়ার ও মাথার ত্বকের চুলকানি তৈরি করার জন্য দায়ী ক্ষতিকর মাইক্রোবস কে মেরে ফেলে। এর ফলে মাথার ত্বকের চুলকানি এবং চুল পড়ার সমস্যা কমে যায় অনেকখানি। এটি একই সাথে মাথার ত্বকের pH এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে থাকে।

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে:

২-৩ টেবিল চামচ বেকিং সোডা পানির সাথে মিশিয়ে পেষ্ট এর মতো মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এই পেষ্ট মাথার ত্বকে ১০-১৫ মিনিট সময়ের জন্য রেখে দিয়ে এরপর পানি দিয়ে খুব ভালোমতো ধুয়ে ফেলতে হবে। একবার এই পদ্ধতি ব্যাবহারের কিছুদিন পর আবারও পুনরাবৃত্তি করা যাবে যদি প্রয়োজন হয়।

৪/ অ্যালোভেরা পাতার জেল

অ্যালোভেরা জেল একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজিং উপাদান। যা খুব সুন্দরভাবে মাথার ত্বকের খুশকি এবং চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে থাকে। কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান।

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে:

অ্যালোভেরা পাতা থেকে ঘন জেল চামচের সাহায্যে তুলে মাথার ত্বকে লাগাতে হবে। এরপর ১৫-২০ মিনিট সময়ের জন্য রেখে দিয়ে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে দুইবার অ্যালোভেরার জেল চুলে ব্যবহার করা যাবে।

৫/ মাউথওয়াশ লিস্টারিন

লিস্টারিন মাউথওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করা হয় এর অ্যান্টি-সেপটিক এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদানের জন্য। এই সকল উপাদান মুখের ভেতরের জীবাণু দূরে রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে, এটি মাথার ত্বকের খুশকি এবং চুলকানির সমস্যা দূর করতেই দারুণ উপকারী।

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে:

আধা কাপ পানির সাথে আধা কাপ লিস্টারিন মিশিয়ে সরাসরি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে, এরপর মিনিট পাঁচেকের জন্য রেখে দিয়ে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। লিস্টারিন ব্যবহারের আগে খুব ভালোমতো খেয়াল করতে হবে মাথার ত্বকে কোন ক্ষত যেন একেবারেই না থাকে। চুলকানির উপদ্রব কমানোর জন্য সপ্তাহে দুইবার লিস্টারিন ব্যবহার করা যাবে।

৬/ আর্গান অয়েল

সাম্প্রতিক সময়ে দেশেও আর্গান অয়েল পাওয়া যাচ্ছে। চুল ও চুলের ত্বকের যত্নের জন্য আর্গান অয়েল ইতিমধ্যেই দারুণ সুনাম কুড়িয়েছে। চুলের পুষ্টি জোগাতে এবং চুল নমনীয় করতে আর্গান অয়েল দারুণ একটি উপাদান।

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে:

চুলের গোড়ায় সরাসরি আর্গান অয়েল দিয়ে ভালোভাবে কয়েক মিনিট ধরে ম্যাসাজ করতে হবে। সারারাতের জন্য চুলে তেল রেখে দিয়ে সকালে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।

সূত্র: Stylecraze

সম্পাদনা: কে এন দেয়া

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...