(প্রিয়.কম) শীত মানেই যে সবসময় একই রকমের শীতের পোশাক পরতে হবে, ব্যপারটা তা নয়। নানা রঙের, নানা ধাঁচের শীতের পোশাকে নতুনত্ব যোগ করে নিজের মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে পারেন আকর্ষণীয় ভিন্নতা। এই শীতে পুরুষদের পোশাকের স্টাইল কেমন হতে পারে? ঘরে-বাইরে, অফিসে বা অনুষ্ঠানে কি ধরনের পোশাক আপনি বেছে নিতে পারেন, তারই পরামর্শ দিলেন রামিম রাজ।
রামিম একজন ফ্রিল্যান্স কস্টিউম ও ফ্যাশন ডিজাইনার। ‘কে আমি’ নামে একটি ছবিতে ফেরদৌসের কস্টিউম ডিজাইনের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স করার পাশাপাশি কলকাতার গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন টেকনোলজি থেকে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। এরপর ধানসিঁড়ি প্রোডাকশন হাউসে প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন রামিম। পাশাপাশি কাজ করছেন বিভিন্ন নাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রের কস্টিউম ডিজাইনার হিসেবে।
স্যুট কোট
স্যুট কোট। ছবি: সংগৃহীত।
স্যুট কোটে মানায় না এমন পুরুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাছাড়া পুরো শীতের কোনো না কোনো একদিন স্যুট কোটের প্রয়োজন পড়েই যায়। বেশ মার্জিত পোশাকের তালিকায় ছেলেদের এই শীতকালীন স্যুট অনেকটাই অপরিহার্য হয়ে পড়ে। তাই আপনার ফরমাল পোশাকের তালিকায় রাখতে পারেন স্যুট কোট।
পার্ক কোট
পার্ক কোট। ছবি: সংগৃহীত।
ব্যস্ততম দিনে অনেকেই নিজের মধ্যে ক্যাজুয়াল ভাবটা রাখতে বেশ পছন্দ করেন। শীতের পোশাকে আপনি চাইলে ধরে রাখতে পারেন সেই ক্যাজুয়াল লুকটি। আর আপনি যদি ছিমছাম গড়নের মানুষ হয়ে থাকেন, তাহলে তো আর কথাই নেই। তো দেরি না করে ওয়ারড্রব থেকে বেছে নিতে পারেন একটু লম্বা ধাঁচের জ্যাকেটটি, যা কিনা আপনার কোমর পর্যন্ত পৌঁছাবে। বেশি উচ্চতার পুরুষদের এ ধরনের জ্যাকেটে নিঃসন্দেহেই বেশ আকর্ষণীয় লাগে।
জাম্পার, হুডি জেকেট, কার্ডিগেন এবং সোয়েটার
জাম্পার, হুডি জেকেট, কার্ডিগেন এবং সোয়েটার। ছবি: সংগৃহীত।
এই শীতে স্মার্ট পোশাকের তালিকায় জাম্পার, হুডি জ্যাকেট, কার্ডিগেন এবং সোয়েটার কম বেশী সবারই পছন্দ। শীতের সকালে খুব দ্রুত নিজেকে ফিটফাট করে রাখতে চাইলে ঝটপট পরে নিতে পারেন জাম্পার। আর এই পোশাকগুলোতেই আপনি খুঁজে পাবেন নিজের পছন্দের সব রঙ। প্রচণ্ড শীতে সোয়েটার, জাম্পার কিংবা কার্ডিগেন যে কোনো একটা আপনাকে বেছে নিতেই হবে। আর যেহেতু এটি ভ্রমণের মৌসুম তাই দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সময় এই পোশাকগুলোই সঙ্গে নিতে পারেন। জাম্পার, হুডি জেকেট, কার্ডিগেন এবং সোয়েটারের ক্ষেত্রে কালো এবং ছাই রঙটি মানিয়ে যায় যে কোনো মানুষকেই। তবে হ্যাঁ, এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে এই পোশাকগুলোতে অবশ্যই যেন কটন এর পরিমাণ বেশি থাকে এবং ভালো কোয়ালিটির ফিনিশিং যুক্তও হয়।
শীতের আনুসাঙ্গিক
শীতের আনুসাঙ্গিক। ছবি: সংগৃহীত।
খালি সোয়েটার আর কোট পরেই শীত পার করলে হবে? সঙ্গে থাকা চাই অন্যান্য আনুষাঙ্গিকও। তা না হলে শীত আর আপনাকে ছাড়বে না, আক্রান্ত হতে পারেন ঠান্ডাজনিত রোগেও। অনেকেই ভাবেন টুপি, মাফলার এসব পরলে বুঝি ফ্যাশনটাই আর থাকছে না। কিন্তু বিষয়টি মোটেও তা নয়। পছন্দসই এবং মানানসই আনুষাঙ্গিকের সমন্বয় আপনাকে করে তুলবে আরো বেশি স্টাইলিস্ট। মাফলার, টুপি এবং মোজার ক্ষেত্রে আপনার পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন ক্রিম, গাঢ় পার্পেল, সাদা, কালো এবং ছাই রঙ। কেননা এই রঙগুলো খুব সহজেই অন্য রঙের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়।
জুতা
জুতা। ছবি: সংগৃহীত।
জুতার উপরও নির্ভর করে আপনার শীতের ফ্যাশন। এই শীতে গরম কালের জুতা এড়িয়ে চলাই ভালো। সারা বছরের ফ্ল্যাট জুতা বা স্লিপার জোড়া এবার আপনি তুলে রাখতে পারেন। বাক্সতে রাখা পা-ঢাকা জুতার উপর এই সময় খানিকটা নজর দিতে পারেন। তবে হ্যাঁ তরুণদের পছন্দের তালিকায় আছে বুট জুতা। যা সত্যিই ভীষণ ক্ল্যাসিক। তার উপর স্নিকারস কিংবা কনভার্স তো আছেই। এতে করে সারাদিন আপনার পা দু' খানা মুক্তি পাবে আদ্রতা এবং ঠাণ্ডার হাত থেকে।
*শীতকালীন সাজসজ্জায় যে প্রধাণ পাঁচটি উপকরণ থাকছে আপনার পোশাকে।
১. কটন- পোশাক শিল্পের মূল উপাদান হচ্ছে কটন। দাম খানিকটা বেশি হলেও এর আরামদায়কতা এবং ধোয়ার সুবিদার্থে কটন খুব জনপ্রিয়। তবে এটি খুব সহজে কুচকে যায়।
২. পশমী কাপড়- উল থেকেই মূলত পশমী কাপড়ের উৎপত্তি। বেশ গরম কাপড় হওয়ার কারণে শীতকালে পশমী কাপড়ের তৈরি পোশাকের চাহিদাও থাকে প্রচুর। রকমারি ফ্যাশন আর নানা রঙের ব্যবহারের ফলে এই হালকা পশমী পোশাক শীতের জন্য বেশ উপকারি।
৩. উল- উলের সঙ্গে পরিচিত আমরা অনেকেই। ভেড়ার লোম থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয় বেশির ভাগ উল। এছাড়াও নানা রকম ভেড়া, খরগোশ এবং ছাগলের পশম থেকেও উল তৈরি করা হয়।
৪. পলিয়েস্টার এবং নাইলন- এই কাপড়গুলো একদমই আলাদা ধরনের। রাসায়নিকভাবে তৈরি এই কাপড়গুলো হচ্ছে সিনথেটিক ধাঁচের। পানিতে এই কাপড়ের স্থায়িত্ব অনেক বেশি।
৫. লেদার- লেদার রয়েছে তিন ধরনের, আর্টিফেশিয়াল, ফলজ লেদার এবং ভেজান লেদার। মূলত প্রাণীর চামড়া থেকেই তৈরি হয় এই লেদার। তাই বিভিন্ন প্রাণীর থেকে তৈরি লেদারের বৈশিষ্টের মধ্যে থাকে ভিন্নতা। রঙেও যেমন ভিন্নতা থেকে তেমনই পুরুত্বেও থাকে আলাদা বৈশিষ্ট্য। কোনোটা থাকে শক্ত লেদার, আবার কোনোটা থাকে নরম লেদার।
প্রিয় ফ্যাশন/গোরা
পাঠকের মন্তব্য(০)
মন্তব্য করতে লগইন করুন