লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন লর্ড আহমদ অব উইম্বলডন এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী তারিক মাহমুদ আহমদ। ছবি: ফোকাস বাংলা

রোহিঙ্গা সঙ্কট: আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে ব্রিটেনের সহযোগিতা চেয়েছেন শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজ দেশ থেকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে অবশ্যই নেপিদোকে বাধ্য করতে হবে।’

আয়েশা সিদ্দিকা শিরিন
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর ২০১৭, ০৮:৩৫ আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৮, ০০:৩২
প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর ২০১৭, ০৮:৩৫ আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৮, ০০:৩২


লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন লর্ড আহমদ অব উইম্বলডন এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী তারিক মাহমুদ আহমদ। ছবি: ফোকাস বাংলা

(বাসস) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নিজ ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ জোরদারে ব্রিটেনের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘মিয়ানমার সরকারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে।’

লর্ড আহমদ অব উইম্বলডন এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী তারিক মাহমুদ আহমদ শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার হোটেলে সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজ দেশ থেকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে অবশ্যই নেপিদোকে বাধ্য করতে হবে।’

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, বলপূর্বক বাস্তচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের কক্সবাজার থেকে সরিয়ে নিতেও ব্রিটেনসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অস্থায়ী ব্যবস্থা অনুযায়ী বাংলাদেশে পালিয়ে আসা অসহায় রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ‘ভাসানচর’ নামক একটি দ্বীপে সরিয়ে নিতে হবে এবং তাদের সেখানে সরিয়ে নিতে আমাদের যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ জুনিয়র মন্ত্রীকে জানান, তার সরকার ওই দ্বীপে রোহিঙ্গাদের জন্য শিক্ষা ও স্যানিটেশন সুবিধাসহ বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে।

শেখ হাসিনা লর্ড আহমদকে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেন এবং এই দুস্থ লোকদের জন্য আশ্রয়, খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবাসহ বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, এসব দুর্দশাগ্রস্ত লোকদের ভোগান্তি লাঘবে বেসামরিক প্রশাসন, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ এবং তার দলের স্বেচ্ছাসেবীরা কঠোর পরিশ্রম করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর তারা শরণার্থীর মতো জীবন-যাপন করেছেন। এ কারণে তারাও রোহিঙ্গাদের দুঃখ ও বেদনা অনুভব করেন।

এ সময় শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধকালে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ থেকে এক কোটি লোকের ভারতে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য হওয়ার কথা স্মরণ করেন।

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তির পর তার সরকার ভারত থেকে ৬২ হাজার বাংলাদেশি শরণার্থীকে ফিরিয়ে এনেছিল।

শেখ হাসিনা লর্ড আহমদের মাধ্যমে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তার শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।

ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী বিপুলসংখ্যক লোকের আগমনের ঘটনাকে ‘একটি মানবিক সংকট’ অভিহিত করে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়ে তাদের জীবন রক্ষার জন্য বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, ব্রিটেন রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড দেয়ার অঙ্গীকার করেছে। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখতে আমরা আগ্রহী।

এ সময় যুক্তরাজ্যে নিয়োজিত বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন উপস্থিত ছিলেন।

প্রিয় সংবাদ/শিরিন/মিজান

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...