উৎসব উপলক্ষে রাসমেলা দেখার সঙ্গে চাইলে বেড়িয়ে আসতে পারবেন সুন্দরবন থেকেও।

পূর্ণিমা তিথিতে ঘুরে আসুন দুবলার চর থেকে

বঙ্গোপসাগর উপকূলে বনের পাশের ছোট্ট দ্বীপ দুবলার চর। সাগর তীরের এই চরে দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে রাস মেলা।

উম্মে মোনতেজামা
ফিচার রাইটার, ট্রাভেল
প্রকাশিত: ০২ নভেম্বর ২০১৭, ২২:২৯ আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৮, ০৬:০০
প্রকাশিত: ০২ নভেম্বর ২০১৭, ২২:২৯ আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৮, ০৬:০০


উৎসব উপলক্ষে রাসমেলা দেখার সঙ্গে চাইলে বেড়িয়ে আসতে পারবেন সুন্দরবন থেকেও।

(প্রিয়.কম) আগামী ৩ নভেম্বর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় উৎসব রাসমেলা  শুরু হচ্ছে। এ বছর বসবে ১৩৪ তম রাসমেলা। প্রতিবছর কার্তিকের শেষ পূর্ণিমার তিথিতে বঙ্গোপসাগরের তীরে দুবলারচরে এই মেলা শুরু হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসব চলে তিন দিনব্যাপী। এই উপলক্ষে তাই রাসমেলা দেখার সঙ্গে চাইলে সুন্দরবন থেকেও বেড়িয়ে আসতে পারবেন। 


প্রতিবছর পূর্ণিমা তিথিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় উৎসব দুবলার চরে অনুষ্ঠিত হয়। 

বিশ্বের সবচেয়ে বড় শ্বাসমূলীয় বন ঘেঁষে বঙ্গোপসাগরের কোলে জেগে ওঠা ছোট্ট একটি দ্বীপ দুবলার চর। কুঙ্গা এবং মরা পশুর নদীর মোহনার এই চরে বহুকাল ধরে চলে আসছে রাসমেলা। হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকেরা পূর্ণিমার জোয়ারে পানিতে তাদের পাপ মোচন হয়ে মনস্কামনা পূর্ণ হবে এই বিশ্বাস নিয়ে রাস মেলায় যোগ দেয়। সময়ের ব্যবধানে এখন এটি নানা ধর্মের লোকদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের এলাকা থেকে লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকায় করে তীর্থ যাত্রীদের পাশাপাশি অসংখ্য দেশি বিদেশি পর্যটকরা এসে সমবেত হয়। মেলার প্রথম দিনে সূর্য ওঠার আগেই দুবলার চরের আলোর কোল সমুদ্র সৈকতে প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রার্থনায় বসেন পুণ্যার্থীরা। আর সন্ধ্যার দিকে ওড়ানো হয় ফানুস। উৎসবের সময় কুটির শিল্পের মেলাসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয় সেখানে। 

এখন মাছের মৌসুম। পুরো চর জুড়ে এসময়ে শুঁটকি তৈরি করেন জেলেরা। তাই মেলার সময় গেলে জেলেদের শুঁটকি তৈরি দেখতে পাবেন। এসময় সুন্দরবনের আরও তিনটি অসাধারণ জায়গাও ভ্রমণ করার সুযোগ হবে। এগুলো হলো নীলকমল, কোকিলমনি ও তিনকোণা দ্বীপ। গভীর জঙ্গলের মধ্যে কোকিলমনির ছোট ছোট খালগুলোতে নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো বেশ উপভোগ্য। আর তিনকোণা দ্বীপটি বন্যপ্রাণী দেখার জন্য একদম আদর্শ একটি জায়গা। এছাড়া নিলকমল বা হিরণপয়েন্ট ভ্রমণে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত সময় এখনই।  


খুলনা থেকে লঞ্চ কিংবা বোট ছাড়া অন্য কোনো পথে যাওয়ার উপায় নেই। 

কীভাবে যাবেনঃ 
সুন্দরবনের গহীনে নিজস্ব উদ্যোগে ভ্রমণ করা অনেক কঠিন। দল বেঁধে যাওয়ার আগে থেকেই লঞ্চ বা ট্রলার বুকিং দিয়ে রাখতে হবে। মেলায় ঢুকতে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে বন বিভাগের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। সুন্দরবনে ভ্রমণে তাই অভিজ্ঞ কোনো ভ্রমণ সংস্থার সাহায্য নিতে হবে। উৎসব উপলক্ষ্যে বেসরকারী ভ্রমণ সংস্থাগুলো এসময় বিভিন্ন প্যাকেজের ব্যবস্থা করে থাকে।

ঢাকা বা দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে বাসে করে সরাসরি খুলনা বা বাগেরহাটের মংলা যেতে পারবেন। এরপর মংলা বন্দর বা খুলনা নতুন বাজার লঞ্চঘাট থেকে সুন্দরবন যাওয়া যায়। সুন্দরবন যেতে হলে লঞ্চ, স্পিডবোট, নৌকা,  প্রাইভেট মোটর বা মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের যান ভাড়া করতে হবে। এছাড়া বিমানে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে যশোর এবং সেখান থেকে সরাসরি খুলনা-মংলা যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেনঃ

থাকার জন্য মংলাপোর্টে একটি রেস্টহাউস রয়েছে। একসঙ্গে ৮ জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। তবে এজন্য খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অফিস থেকে অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন ট্যুরিস্ট সংস্থাগুলো তাদের নিজস্ব লঞ্চ ও জলযানে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন।

সম্পাদনাঃ ড. জিনিয়া রহমান

প্রিয় ট্রাভেল সম্পর্কে আমাদের লেখা পড়তে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেইজে। যে কোনো তথ্য জানতে মেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়। ভ্রমণ বিষয়ক আপনার যেকোনো লেখা পাঠাতে ক্লিক করুন এই লিংকে - https://www.priyo.com/post।  

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...