সবসময় নিজেকে হাসিখুশি রাখতেই ভালোবাসেন সাজেদ। ছবি কৃতজ্ঞতা: সাজেদুর রহমান।

'না খেয়ে ওজন কমালে ফিটনেস একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়!'

এটা সাজেদুর রহমানের ওজন কমানোর গল্প এবং প্রয়োজন থেকে প্যাশন তৈরি হবার গল্প। একজন ফিটনেস উদ্যমী তরুণ থেকে একজন ফিটনেস উদ্যোক্তাতে পরিণত হবার গল্প। নিজের ওজন কমানোর তাগিদেই আজ তিনি হয়ে উঠেছে ফিটনেস এক্সপার্ট!

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮, ১৬:৩০ আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০১৮, ১৯:০০
প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮, ১৬:৩০ আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০১৮, ১৯:০০


সবসময় নিজেকে হাসিখুশি রাখতেই ভালোবাসেন সাজেদ। ছবি কৃতজ্ঞতা: সাজেদুর রহমান।

(প্রিয়.কম) গল্পটা শুরু হয় ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি । সেদিন সকালে ইউটিউবে টেড-টকের চ্যানেল ঘাঁটাঘাঁটি করার সময়ে বেজবাবা সুমনের ভিডিওটি সামনে চলে আসে। তার ওজন কমানোর পুরো গল্পটি মনোযোগ দিয়ে দেখা হয়। আগে বহুবার ওজন কমানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতে হয়েছে সাজেদকে। কখনো আগ্রহ হারিয়ে গেছে, কখনো ডায়েট করতে সমস্যা হয়েছে বলে বাদ দিতে হয়েছে। তার চাইতেও বড় কথা, সাজেদ জানতেন না সঠিক কোন উপায়ে ডায়েট মেনে চললে ওজন কমানো যাবে সহজে। তবে এইবারের কাহিনী খুবই ভিন্ন। তবে এটা শুধুই সাজেদুর রহমানের ওজন কমানোর গল্প নয়। এটা নিজের প্রয়োজন থেকে প্যাশন তৈরি হবার গল্প। একজন ফিটনেস উদ্যমী তরুণ থেকে একজন ফিটনেস উদ্যোক্তাতে পরিণত হবার গল্প।

ভিডিওটা দেখার দিন থেকেই ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে সাজেদ ওজন কমানোর জন্য বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ শুরু করে দেন। ইউটিউবের বিভিন্ন টিউটোরিয়াল, বিভিন্ন পেজ ও ব্লগের আর্টিকেল পড়া এবং সেটা নিয়ে কাজ করা শুরু করে দিলেন সেদিন থেকেই। শীতের সকালেই বের হয়ে পড়লেন হাঁটার উদ্দেশ্যে। প্রথম দিনেই টানা হেঁটে ৫ কি.মি পথ পাড়ি দিয়ে এলেন অনায়াসে। ডায়েট এবং হাঁটাকে সম্বল করেই মাত্র চার-পাঁচ মাসের মাথায় প্রায় ২৪ কেজি ওজন কমিয়ে ফেললেন তিনি। ৯৮ কেজি ওজন থেকে ৭৪ কেজি ওজনের ঘরে নিয়ে এলেন নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে।

সাজেদ

হয়তো ভাবছেন গল্পটা নিশ্চয় এখানেই শেষ! সাজেদ তার বাড়তি ওজন কমিয়ে ফেলেছেন এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়েছেন, আর তো কোন গল্প থাকার কথা নয়। বেশীরভাগ গল্প হয়তো এখানে এসেই শেষ হয়ে যেত। কিন্তু গল্পটা হলো সাজেদের। তাই মূল গল্পটা শুরু হলো ঠিক এরপরের সময় থেকেই! মূল গল্পে যাওয়ার আগে উদ্যমী এই মানুষটার পরিচিতি তুলে ধরা যাক। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরের আব্দুস সামাদ বিশ্বাস এবং আঞ্জুমান আরা’র দুই ছেলের মাঝে বড় হলেন ২৩ বছর বয়সী সাজেদুর রহমান। বর্তমানে পড়ালেখা করছেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষে এবং কাজ করছেন ফিটনেস নিউট্রিশনিষ্ট এক্সপার্ট হিসেবে।

নিশ্চয় মনে প্রশ্ন জাগছে, দুদিন আগে যিনি জানতেন না কীভাবে ওজন কমাতে হয়, তিনি কীভাবে একজন ফিটনেস নিউট্রিশন কোচ হয়ে উঠলেন? সেটা জানার জন্যেই আবারো ফিরে আসতে হবে সাজেদের গল্পে। ওজন কমিয়ে ফিট হয়ে পড়লেও তার মাঝে ততদিনে তৈরি হয়েছে ফিটনেস নিয়ে জানার প্রতি ব্যপক আগ্রহ। এই আগ্রহ থেকেই ফিটনেস সম্পর্কিত আর্টিকেল পড়া এবং সেটা নিয়ে লেখা শুরু করেন তিনি। ফিটনেস সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করে এক একটি বিষয়ের উপরে লেখা লিখতেন ফেসবুকে। খেয়াল করে দেখলেন, সকলেই এই তথ্যগুলো জানতে আগ্রহী। কিন্তু নিজে থেকে কেউ খুঁজে পড়তে চান না। তার অন্যতম কারণ হিসেবে সাজেদ জানান, এই সকল তথ্যগুলো বিভিন্ন ইংলিশ আর্টিকেলে লেখা থাকে। যা অনেকেই সঠিকভাবে বুঝতে পারেন না।

ফিটনেস ও ডায়েট সংক্রান্ত টুকটাক পড়ালেখা ও লেখালেখি চলতে থাকে সাজেদের। এর মাঝে পূজার বন্ধে বড়সড় একটা অবসর পান। প্রায় ২৫-৩০ টি আর্টিকেল পড়ে, বিভিন্ন তথ্য ক্রসম্যাচ করে PCOS (Polycystic ovary syndrome) এর ওপর একটি গাইডলাইন লিখে ফেলেন তিনি। লেখাটার জন্য সকলের কাছ থেকে সাড়া পান আশাতীত।

২০১৬ সালের নভেম্বরে বিভিন্ন ফিটনেস ফোরাম ও আর্টিকেল ঘাঁটাঘাঁটি করার একটা পর্যায়ে এসে সাজেদ বুঝতে পারলেন, নিজেকে কষ্ট দিয়ে শুধু বাড়তি ওজন নয়, সাথে কমছে শারীরিক ফিটনেসও। আমাদের দেশের বেশীরভাগ মানুষ মনে করেন অতিরিক্ত ওজন যে কোন উপায়ে কমাতে পারাই হলো বড় সার্থকতা। ধারণটি আসলে একেবারেই ভুল! সাজেদ বলেন, 'ভুল উপায়ে, না খেয়ে কিংবা একবেলা খেয়ে ওজন কমানোর মাধ্যমে শারীরিক ফিটনেস একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়। না খেয়ে ওজন কমালে সুস্থতা বজায় থাকে না শরীরের। সঠিক উপায়ে ওজন খুব সুন্দরভাবেই কমানো সম্ভব। একইসাথে শারীরিক ফিটনেসও খুব ভালোভাবে বজায় থাকে।'

প্রথমত, সকলের মাঝে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের তাগিদ বোধ করতেন সাজেদ। দ্বিতীয়ত, সাজেদের লেখা পড়ে অনেকেই তথ্য গুলিয়ে ফেলতেন। কারণ, খাবারের ক্যালোরির হিসেবটাই যেখানে অনেকে জানেন না, সেখানে সাজেদের লেখাগুলো অনেক উঁচু দরের হয়ে যেত। যে কারণে সাজেদ চাচ্ছিলেন ভিডিও তৈরি করে সহজ ভাষায় ডায়েট ও খাদ্য সম্পর্কিত তথ্য ব্যাখ্যা করতে। তৃতীয়ত, আমাদের দেশে ফিটনেস সম্পর্কিত ইউটিউব চ্যানেল একেবারেই নেই। এই সকল কারণ মিলিয়ে, নিজেকে প্রস্তুত করে এবং সাহস সঞ্চয় করে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের ১০ তারিখে ইউটিউব চ্যানেলে ফিটনেস সংক্রান্ত বিষয়ে প্রথম ইউটিউব ভিডিও আপলোড করেন সাজেদ।

পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘ফ্যাট টু ফিট’ নামে একটি ফেসবুক পেইজ চালু করেন তিনি। যেখানে নিজের লেখাগুলো নিয়মিত আপলোড করতেন। তবে খেয়াল করে দেখলেন, একটি ফেসবুক পেজ খুব কম সংখ্যাক মানুষের কাছেই পৌছুতে পারে। এছাড়াও আরো দুইটি বড় কারণ হলো- প্রায়শই বিভিন্ন লেখা পেইজ থেকে গায়েব হয়ে যাবার সমস্যা দেখা দেওয়া এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পেজে আলোচনার অভাব দেখা দেওয়া। যে কারণে মার্চের ৩ তারিখে তিনি ‘লুজ টু গেইন’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ চালু করেন। এহেন নামকরণের পেছনের কারণ হলো- কিছু অনভ্যাস বাদ দেওয়ার মধ্য দিয়ে সুস্বাস্থ্য, কাঙ্ক্ষিত ওজন এবং ফিট স্বাস্থ্য অর্জন করা। যা থেকেই নামটি সাজেদের মাথায় আসে, লুজ টু গেইন। এই গ্রুপের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৭০ হাজারেরও বেশী!

শুধু গ্রুপ তৈরি করে রেখে দেওয়ার মাঝেই তার কার্যক্রম থেমে থাকেনি। গ্রুপের সকলকে ডায়েট সংক্রান্ত তথ্য শেখানোর প্রয়াসে বিভিন্ন বিষয়ের উপরে আর্কাইভ এবং পিন পোষ্ট তৈরি করেছে দীর্ঘ দিন ধরে। এইভাবে কাজ করার মাঝে সাজেদ খেয়াল করলেন সকল কিছুই খুব গতানুগতিক হয়ে উঠছে। তখন তিনি ‘ডিসটেন্স এডুকেশন’ এর ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করা শুরু করলেন। নিজের ঘরে বসে থেকেই বাইরের দেশের বিভিন বিখ্যাত ইন্সটিটিউট থেকে কোর্স করে সার্টিফিকেট অর্জন করা সম্ভব এই পদ্ধতিতে। যেমন ভাবা তেমন কাজ।

পরবর্তিতে বেশ কিছু ইন্সটিটিউটে আবেদন করা শুরু করেন সাজেদ। নিজের প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখার পাশাপাশি শুরু করলেন ফিটনেস সংক্রান্ত পড়ালেখা। প্রথমেই ভারতের ‘ইন্সটিটিউট অফ নিউট্রিশন এন্ড ফিটনেস সায়েন্স’ থেকে নিউট্রিশনের বেসিক কোর্সটা শেষ করে ফেলেন চার মাস সময় নিয়ে। শুধুমাত্র নিজের শেখার প্রতিই তার খেয়াল ছিল তাই কিন্তু নয়। সাজেদ তার গ্রুপ থেকে এমন কিছু মানুষ খুঁজে বের করলেন যাদের ফিটনেস সংক্রান্ত ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে। যারা জানতে চান, পড়তে চান এবং এই ক্ষেত্রে কাজও করতে চান। এমন কিছু মানুষকে খুঁজে বের করে তাদেরকেও ভর্তি করিয়ে দিলেন বেসিক এই কোর্সে।

আপনি যদি এতখানি লেখা পড়ে থাকেন তবে নিশ্চয় মনে প্রশ্ন জাগছে, পরবর্তী সময়ে আরো কোন পরিকল্পনা কি করেছেন সাজেদ? যদি করে থাকেন তবে কী ধরণের পরিকল্পনা করেছেন? জেনে খুশি হবেন যে পরবর্তী সময়ে আরো বড় ধরণের পরিকল্পনা নিয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ফ্যাকাল্টির অডিটোরিয়ামে ‘লুজ টু গেইন’ নামে ফিটনেস ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন তিনি। যেখানে বর্তমানে সাজেদসহ আরো ৫ জন সার্টিফাইড ফিটনেস নিউট্রিশনিষ্ট কাজ করছেন একসাথে। প্রথমে মাসে ১০ জন ক্লায়েন্ট ছিল এই ওয়েব সাইটের। যার সংখ্যা বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ৭২ জনে এবং এই সংখ্যা ক্রমবর্ধমান।

পরিশ্রমী ও উদ্যমী সাজেদ একান্ত চেষ্টায় শুধু নিজেই দাঁড়াননি। তার সাথে সাথে দাঁড় করিয়েছেন আরো অনেককে। একের পর এক চমক দিতে থাকা সাজেদের জন্য অপেক্ষা করছিল অন্যতম বড় একটি চমক। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আদর্শ প্রকাশনী থেকে সাজেদ ডায়েট ও ফিটনেস সংক্রান্ত বই লেখার অফার পান। সিএসই বিভাগে পড়ুয়া সাজেদ নিজের পড়ালেখার ব্যাপারে তেমন কিছু না জানলেও, ইতিমধ্যেই ডায়েট ও ফিটনেস নিয়ে পড়ালেখা করে সার্টিফিকেট অর্জন করে বই লেখাও শুরু করে দিলেন। যেহেতু তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র, তাই শখ করে নিজের লেখা বইয়ের নামের মাঝেও রেখে দিলেন তার ছাপ। বইয়ের নাম হলো ‘নিউট্রিশন প্রোগ্রামিং’। প্রায় ৩০০ পাতার এই বইটি প্রকাশিত হবে আগামী মাসের বইমেলায়।

নিজের হাতে গড়ে তোলা গ্রুপ ও গ্রুপের মানুষদের প্রতি সর্বদা খেয়াল রাখার চেষ্টা করেন সাজেদ। কারণ তিনি চান সঠিক উপায়ে ওজন কমানোর প্রতি সকলে আগ্রহী ও সচেতন হয়ে উঠুক। তারই ধারাবাহিকতায় সাজেদ তার গ্রুপে সদস্যদের জন্য ফিটনেস কন্টেস্ট এর আয়োজন করেন বিগত বছরের ১লা নভেম্বর- ২৭শে ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রায় ২৫০ জন সদস্য এতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যার মাঝে ২১৫ জন ছিলেন নারী সদস্য। বেশ বড় বাজেটের এই কন্টেস্টে সকলের বিপুল সাড়া পেয়ে সাজেদ পরিকল্পনা করছেন চলতি বছরে বিগত বছরের চাইতেও বড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে।   

সার্টিফিকেট

এতোকিছুর মাঝে ফীটনেস সংক্রান্ত পড়ালেখা কিন্তু মোটেও থেমে থাকেনি সাজেদের। পুরো বিশ্বের মাঝে প্রথম পাঁচটি পার্সোনাল ট্রেইনার ইন্সটিটিউটের মধ্যে অন্যতম ISSA (International Sports Sciences Association) থেকে ফিটনেস নিউট্রিশনিষ্ট স্পেশালিস্ট এর কোর্স সম্পন্ন করেন। এছাড়াও আমেরিকান হেলথ এসোসিয়েশন থেকে সিপিআর এন্ড এইড এর উপরেও কোর্স শেষ করেন সাজেদ।

বর্তমানে তিনি একজন সফল ফিটনেস নিউট্রিশনিষ্ট হিসেবে কাজ করছেন। পাশপাশি প্রতিনিয়ত নতুন কোর্সের খোঁজে থাকেন তিনি। একইসাথে নিজের লেখা প্রথম বইটির শেষ মুহূর্তের কাজ নিয়েও বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকল কিছু সাথে নিয়ে এবং সকল ব্যস্ততার পাশাপাশি নিজের ইউটিউব চ্যানেল, গ্রুপ এবং সাইটেও রয়েছেন সচল। অনেকেই অবাক হন সাজেদের এমন পারদর্শিতার ও উদ্যমী কার্যকলাপ দেখে। সাজেদ জানান, তিনি এই ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করে আনন্দ পান, এই কাজগুলো তাকে অনুপ্রাণিত করে। এই ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করে ভবিষ্যতে অনেকের কর্মসংস্থান তৈরি প্রতিও রয়েছে তার অনেক আগ্রহ। যে কারণে, কাজের প্রতি ভালোবাসা ও উদ্যমটা স্বাভাবিকভাবেই তৈরি হয়ে যায়। খুব সাধারণ একজন মানুষ থেকে বর্তমান সময়ে একজন স্পেশালিষ্ট হয়ে ওঠার সফরটা খুব একটা সহজ ছিল না কখনই। কিন্তু অধ্যাবসায় এবং একাগ্রতা ঠিকই সাজেদকে তার যোগ্য স্থানে পৌঁছে দিয়েছে।

প্রিয় লাইফ/ আর বি 

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...