১৯৭০ সালে এসএসসি ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয় মানিকগঞ্জের আওলাদ হোসেন খান উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১০ সালের ১৯শে নভেম্বর। এখানে আমরা সহধর্মিনীদেরসহ উপস্থিত হয়েছিলাম। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেক বন্ধুকেই শুরুতে চিনতে পারি নাই। পরিচয় হওয়ার পরে মনে হলো একসঙ্গেই শ্রেণিকক্ষে বসেছি দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস কিংবা বছরের পর বছর তারপরও অপরিচিত লাগছিল। যোগাযোগহীনতা আত্মীয়কে পর করে দেয় আর পরিচিতকে অপরিচিত। ছোটবেলার অনেক গল্প হল, বর্তমানে কে কোথায় আছে সেটাও আমরা জানতে পারলাম।
অনেকেই ডাক্তার হিসাবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে, কেউ আবার ইঞ্জিনিয়ার, কেউবা ব্যবসায়ী হয়েছে আবার কেউবা আমার মতো দলছুট শিক্ষক। চেহারায় মধ্য ৫০-এর ছাপ পরিষ্কার, অনেকের মাথায় চুল নেই, এর আগেই অনেকেই গতও হয়েছে।
একসঙ্গে পড়তাম তাদের সাথে কোনোদিন আর দেখা হবে না। আমি খুব একটা সামাজিক নই, আমার কাছেও দিনটা খুবই উপভোগ্য মনে হলো। আমাদের দু-একজন শিক্ষকও এই অনুষ্ঠানটি আলোকিত করেছিলেন, আবার কেউ কেউ বার্ধক্যজনিত কারণে আসতে পারেননি। আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে যখন ভর্তি হয়েছিলাম তখন স্কুলটির নাম ছিল মানিকগঞ্জ ভিক্টোরিয়া বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়। দ্বিতীয়বার নবম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পরই স্কুলটি সরকারি হয় এবং নাম হয় মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়।
বিদায়ের সময় আমাদের সহপাঠী পরেশের কাছে সংরক্ষিত ১৯৭০ সালের ৫ জানুয়ারি তোলা একটি গ্রুপ ছবি প্রত্যেককেই উপহার দেওয়া হয়। বাসায় এসে দেখলাম এমন স্মৃতিময় মূল্যবান একটি ছবিও আমার কাছে নেই। সম্ভবত আমাদের কারও কাছে নেই। পরেশ সেই ছবিটি জোগাড় করেছে, দেশের নানা সংকটকালের মধ্যেও এতদিন তা যত্ন করে রেখেছে, আরেক বন্ধু রাজন সেটা লেমিনেটিং করে আমাদের জন্য উপহার হিসাবে নিয়ে এসেছে।
মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ১৯৭০ সালের এসএসসি ব্যাচের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের একটি ছবি
যতটুকু মনে পরে পরেশ (পূর্ণ নাম পরেশ চন্দ্র মন্ডল ও ডাকনাম মেঘা) একজন গুড বয় ছিল, কারও সাথে ঝগড়া-ঝাটি নেই, এক সঙ্গে মিলে-মিশে থাকার একটি ঐকান্তিক চেষ্টা তারমধ্যে সবসময় ছিল। পুনর্মিলনী টাইপের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য সবসময়ই পরেশ আমাদের উদ্বুদ্ধ করত। কলেজের পাঠ চুকিয়ে ভর্তি হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে।
ফেসবুকের সুবাদে জানতে পারি সে যোগ্য সময়ে স্মৃতিসমৃদ্ধ পুরনো দিনের ছবি আপলোড করে, বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজে কর্মরত সময়ের নানা গুরুত্বপূর্ণ ছবি। তার মধ্যে রয়েছে ১৯৭৮ সালে ১৭ই জানুয়ারি চারুকলা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে, ১৯৮৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখে ও ১৯৮৬ সালে তোলা ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে কর্মরত অবস্থায় তার সহকর্মীদের সঙ্গে, ১৯৮৭ সালের ২৫শে ডিসেম্বর রংপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে নীলফামারীর কালীগঞ্জে অফিসার ক্লাবের পিকনিক কিংবা ২৫শে সেপ্টেম্বর, ১৯৮৮ পাবনা ক্যাডেট কলেজের স্টাডি স্টুরে ঢাকা আর্মি স্টেডিয়ামে তোলা ছবি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যেমন খুশি তেমন সাজো, মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরঘাটে বন্ধুদের সঙ্গে ছবি, ২০১৪ সালে ফৌজিয়ানদের পুনর্মিলনীর ছবি। পরেশ কখনো কখনো অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক/অধ্যক্ষদের দেখতে যায়, তাদের অনেকেই এখন বৃদ্ধ।
সে রোজনামচা মেইনটেইন করে। তাতে সাধারণ কর্মদিবসের কথা লেখা থাকে না। গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার কথা, কখনো কখনো বৃদ্ধ শিক্ষকদের অটোগ্রাফ শুধু স্বাক্ষর নয়, তাতে কিছু লেখা, স্থান ও সময় উল্লেখ করে। শুভেচ্ছাবাণী থেকে মনে হয় পরেশ তার সকল সহকর্মীর হৃদয়ে স্থান পেয়েছে। আমরা যখন অটোগ্রাফ শব্দটি জানি না সেই ৭০-এর দশকে পরেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং যারা তখনও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেননি তাদের অটোগ্রাফ সংরক্ষণ করেছে। অটোগ্রাফটি যদি কোনো শিল্পী দিয়ে থাকেন তিনি রোজনামচায় একটি ছবিও এঁকে দিয়েছেন। অনেক সময় তার নিজের সহপাঠীদেরও কিংবা কলকাতা থেকে বেড়াতে আসা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মানুষের। তবে অটোগ্রাফের কথায় স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে আমাদের পরেশ সবার কাছেই প্রিয়।
ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে ১৯৮৫ সালের একটি মুহূর্ত
তার রোজনামচায় “দেখা করা হলো” নামে এক অধ্যায় রয়েছে তাতে যেমন পশ্চিমবঙ্গের বাগুইআটির বাসিন্দা ৮০ উত্তীর্ণ ইংরেজি শিক্ষক নৃপেন স্যারের কথা রয়েছে, তেমনি গড়িয়া নিবাসী সতীর্থ মহীতোষের নামও রয়েছে। কল্যানীতে বসবাসরত তার মেজদার, কিংবা কসবায় বড়দা, কর্ণজোড়ায় ছোটমাসী, কালিয়াগঞ্জে বৌদি, জলপাইগুড়িতে সতীর্থ অনিল রাজবংশীর সঙ্গেও সে দেখা করেছে। এই তালিকা দেখলে পরিষ্কার বুঝা যায় যে, সে পরিচিত লোকজনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করার জন্যই গিয়েছে। একইভাবে দেশে বন্ধুবর আমিনুর রহমানকে দেখতে যশোরের নোয়াপাড়া, কিংবা তোফাজ্জলকে দেখতে খুলনার ফুলতলা, বাসুদেবকে দেখতে সে সিলেট পর্যন্ত গিয়েছে শুধুই বাল্যবন্ধুকে দেখার জন্য। আবার বিসিএসয়াইয়ারে কর্মরত অসুস্থ বন্ধুবরের মহা দুলসময়ে যখন গোটা পরিবার থেকে আলাদা হয়ে তাকে তার নিজের গ্রাম পৌলিতে থাকতে হয়েছে সেখানেও আমাদের পরেশের ভূমিকা ঈর্ষণীয়। প্রয়াত বন্ধুবর ড. আনিসুজ্জামানকে যখন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে বঙ্গবন্ধু পদক দেওয়া হলো তখন তার বিধবা পত্নীর সঙ্গে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে।
নিজের জীবনের তথ্যেও তার রোজনামচা অতিশয় সমৃদ্ধ। নানা সময়ে তার অবস্থান সম্পর্কে তথ্য- যেমন ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৯ পর্যন্ত শানবান্ধায়, ১৯৬০-৬৩ রাধিকাবাবুর পাঠশালায়, ৬৪-৬৯ মানিকগঞ্জ হাই স্কুল, ৭০-৭২ দেবেন্দ্র কলেজ, ৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগ, প্রকৌশল কলেজ হোস্টেলে বসবাস, ৭৩-৭৪ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সম্মান, ৭৪-৭৯ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে সম্মান ও এম এ অধ্যয়ন ও শাহজালাল হলে বাস, ৮০-৮৩ চট্টগ্রাম চারুকলা কলেজে জীবনে প্রথম চাকুরি, ৮৩-তে সাতমাস ভারতের পশ্চিম দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে অবস্থান, ৮৩-৮৪-তে ঢাকা নাখালপাড়া ও কুষ্টিয়ার খোকসা থানার ঈশ্বরদী গ্রামে বাস, ৮৪-এর ১ নভেম্বর থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে, এরপর ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পাবনা ক্যাডেট কলেজ, ৯১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রংপুর ক্যাডেট, ২১ মে ২০০১ সাল পর্যন্ত ফৌজদারহাট। ৪ এপ্রিল ২০০৬ পর্যন্ত পাবনা ১০ আগস্ট ২০১০ পর্যন্ত ফেনী গার্লস ক্যাডেট এবং সেখান থেকে অবসর গ্রহণ। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১ থেকে ৩১ জুলাই ফেনী শহরের শিশু নিকেতনের অধ্যক্ষ, ১ আগস্ট ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত উত্তরার মাইলস্টোন কলেজে চাকুরি, ১০ আগস্ট ২০১৪ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ পর্যন্ত প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরি।
মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খানের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের একটি ছবি
সারাজীবনে যত চিঠি পরেশ লিখেছে তার তারিখ, স্থান ও প্রকারসহ এবং যে চিঠিগুলো পেয়েছে তার তথ্য সে সংরক্ষণ করেছে, ঠিক যেমন যে সিনেমাগুলো দেখেছে কিংবা যে গানগুলো শুনেছে তার সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সে সংরক্ষণ করেছে তার রোজনামচায়। জীবনে যত বই পড়েছে তার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসহ তালিকা তার কাছে রয়েছে। যত মানুষের সঙ্গে চিঠি কিংবা ফোনে যোগাযোগ হয়েছে তার তালিকায় রয়েছে যেখানে ২৬৭টি নাম, চেনা জানা পরিচিত বন্ধুবান্ধবদের তালিকায় রয়েছে ১২৬টি নাম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসহ।
পরেশ চন্দ্র মন্ডল
তার রোজনামচা দেখতে দেখতে নজরেএলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ২৫ মার্চ ১৯৭১ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত অংশটিতে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রোজনামচার পথেপথে অংশটিতে শুরু ও শেষের তারিখ দেওয়া। তার এই ভ্রমণ হয় সম্পূর্ণ পদব্রজে। তারিখ অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে বা গ্রামে যাওয়া তারকা চিহ্নিত স্থানে গ্রামে রাতে থাকা । রাতে থাকার জন্য তার নিজের গ্রামের বাড়ি, আত্মীয় সজনের, বন্ধুবান্ধবদের কিংবা অত্যন্ত পরিচিত ঘনিষ্ঠ মানুষদের বাড়ি সে বেছে নিয়েছিল। ঐ অল্প বয়সেই হয়তো পরেশ বুঝেছিল মুক্তিযুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে এই সময়টিতে হয়তো মানিকগঞ্জ থাকা নিরাপদ হবে না। বিনয়ী ভদ্র কিন্তু স্বাধীনচেতা পরেশ হয়তো এজন্যই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল-
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপরে
একটি শিশিরবিন্দু।
এ অপবাদ থেকে সে মুক্ত হবে। এই সময়টি মানিকগঞ্জ মহকুমাকে জেনে নেবে এবং তা সে পদব্রজেই করবে। মুক্তিযুদ্ধের গোটা সময় যার বয়স মাত্র ১৭/১৮, তখন হয়তো তার ধারণাও হয়নি মুক্তিযুদ্ধের সময় তার জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে বিশেষ করে সে যেহেতু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি । পরেশের সঙ্গে কথা বলে জানলাম এই সময়টিতে মাঝেমধ্যেই সে বরুন্ডী নামের গ্রামে গিয়েছে যেখানে বাদল বিশ্বাস এবং তার বাবা খালেক বিশ্বাসের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়েছিল এবং নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। এই আস্তানা সম্পর্কে আগে জানতে পারলে হয়তো ভালভাবে যুক্ত হতে পারতো। তার মুক্তিযুদ্ধ করা হয়নি তবে মুক্তিযোদ্ধাদের ছোটখাটো নানা কাজে নিশ্চয়ই তার সহায়তা ছিল। সে এখনো গর্ববোধ করে মুক্তিযুদ্ধ না করে মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট প্রাপ্তির লোভ সে সম্বরণ করতে পেরেছে। আমার কাছে মনে হয়েছে গোটা মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিদিন একজন তরুণ কোথায় গিয়েছে, কোথায় রাত্রি যাপন করেছে এরকম ইতিহাস খুব একটা পাওয়া যাবে না। এই তথ্য থেকেও আমরা আঁচ করতে পারবো মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মানিকগঞ্জের হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের তৎপরতা কোন এলাকায় কখন তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। তার এই তালিকা থেকে আমরা এটাও জানতে পারি, মানিকগঞ্জ মহকুমার গ্রামগুলোর নৈকট্য সম্পর্কে। তার এই রোজনামচা শুরু হয় ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ যখন সে মানিকগঞ্জের নিজের বাসা থেকে বের হয়ে যায়। তারপর চলে নিম্নরূপ।
৩১.৩.৭১— মানিকগঞ্জ, বেংরৈ, বার্তা, শানবান্ধা* (গ্রামের বাড়ি)
১.৪.৭১—বালিরটেক, খাবাশপুর, সুলতানপুর*
২.৪.৭১—বালিরটেক, বরুন্ডী, কাস্তা, নবগ্রাম*
৩.৪.৭১—বাঙ্গালা (মামাবাড়ি), এগারশ্রী, বাগিয়া, শানবান্ধা*
৪.৪.৭১—লেমুবাড়ি, পুটাইল, ঘুস্তা, মান্তা, জয়নগর, হেলাচিয়া*
৫.৪.৭১—তেরজনা
৬.৪.৭১—কুন্দরিয়া*, শৈরপা, বেড়ারচর, উভাজানী
৭-৮.৪.৭১—রামদিয়ানালী*
৯.৪.৭১—গাংডুবি, দোলাকান্দা*
১০-১১.৪.৭১—চাইলতাবাড়ি, জোকা, বাইস্টা, ধুলন্ডী*
১২.৪.৭১—আঙ্গারপাড়া, গুবিন্দি, ডাংরা, গুইলট্যা, মুলজান, মানিকগঞ্জ, বার্তা*
১৩.৪.৭১—কেওরজানি, লেমুবাড়ি, শানবান্ধা*
১১-১৩.৬.৭১—বরুন্ডী (ওপার), চর কুমুল্লি , শিকারীপাড়া, বাইনখালি, বাইরাখালি, শিকারীপাড়া, বরুন্ডী, বাঙ্গালা*
১৪.৬.৭১—বরুন্ডী (ওপার), বাঙ্গালা, লেমুবাড়ী, শানবান্ধা* ১৫.৬.৭১—সুলতানপুর, পিপুলিয়া, বলোরা, ভাড়ারিয়া, শানবান্ধা
১৬-১৭.৬.৭১—বালিরটেক( এপার), শানবান্ধা*
১৮.৬.৭১—বালিরটেক, মানিকগঞ্জ*
১৯-২০.৬.৭১—বরুন্ডী, বাঙ্গালা
২১-২৪.৬.৭১—মাটিকাটা, গোলাইডাঙ্গা মাটিকাটা*
২৫-৩০.৬.৭১—বরুন্ডী (ওপার), মাটিকাটা, গোলাইডাঙ্গা, গোলাই, মাটিকাটা*
১.৭.৭১—গোলাই, বরুন্ডী, বাঙ্গালা
২.৭.৭১—ভাড়ারিয়া, বাঙ্গালা, নবগ্রাম*
৩.৭.৭১—বাঙ্গালা*
৪-৬.৭.৭১—বরুন্ডী (এপার), বাঙ্গালা*
৭-৮.৭.৭১—কালিয়াকৈর, বাঙ্গালা*
৯.৭.৭১—বরুন্ডী (ওপার)
১০-১৬.৭.৭১—বাঙ্গালা, কালিয়াকৈর, গেরাদিয়া, বায়রা (হাট) বাঙ্গালা*
১৭-১৮.৭.৭১—বাঙ্গালা*
১৯.৭.৭১—কৈতরা
২০.৭.৭১—আইরমারা, মিতরা, পালোরা, বেতিলা, মানিকগঞ্জ*
২১.৭.৭১—জাগীর*
২২.৭.৭১—মানিকগঞ্জ, দাশরা, বেতিলা, মিতরা, কৈতরা, বাঙ্গালা*
২৩.৭.৭১—কাস্তা*
২৪.৭.৭১—বাঙ্গালা
২৫-২৬.৭.৭১—কৈতরা, বাঙ্গালা
২৭.৭.৭১—পারিল, বাঙ্গালা*
২৭.৭.৭১ (মঙ্গলবার)—পারিল, বাঙ্গালা*
২৮-২৯.৭.৭১—শানবান্ধা, বাইটুনা
৩০-৩১.৭.৭১—কলাসী, বাইটুনা*
১-২.৮.৭১—শানবান্ধা*
৩-৬.৮.৭১—পিপুলিয়া, শানবান্ধা*
৭.৮.৭১—মানিকগঞ্জ*
৮.৮-২২.৮.৭১—আন্ধারমানিক, বানিয়াজুরী, মহাদেবপুর, ধুলন্ডী*, মহাদেবপুর, ধুলন্ডী*
২৩-২৪.৮.৭১—ঘিওর, তেরশ্রী, ভবানীপুর, গাজিছাইল, শুলন্ডী
২৫.৮-১.৯.৭১—মহাদেবপুর, তরা, মানিকগঞ্জ*
২.৯.৭১—বাঙ্গালা*
৩-৪.৯.৭১—কাস্তা, দুর্লভদী বাঙ্গালা*
৫-১৪.৯.৭১—শানবান্ধা, মানিকগঞ্জ*
১৫-৩০.৯.৭১—শানবান্ধা, মানিকগঞ্জ*
১-২৭.১০.৭১—মানিকগঞ্জ*
২৮-২৯.১০.৭১—কৈতরা, বাঙ্গালা*
৩০.১০.৭১—বরুন্ডী, বাঙ্গালা*
৩১.১০.৭১—কৈতরা, লেমুবাড়ি*
১.১১.৭১—কেওরজানী, মানিকগঞ্জ*
২-১৯.১১.৭১—মানিকগঞ্জ*
২০.১১.৭১—বালিয়াবিল, পুটাইল, শানবান্ধা*
২১.১১.৭১—বৈল্ল্যা, বরুন্ডী, চাকুলিয়া, ভুতাখালি
২২.১১.৭১—দুধঘাটা, ভুরাখালি, চাকুলিয়া, মাটিকাটা, গোলাই, বরুন্ডী, কাস্তা*
২৩-৩০.১১.৭১ ও ১-৮.১২.৭১—নবগ্রাম, বাঙ্গালা, কৈতরা, বায়তোরা, লেমুবাড়ী, বগজুরী, দাশড়া
৯.১২.৭১—কেওরজানি
১০-১১.১২.৭১—বার্তা, হিজলাইন (ওপার) হিজলাইন (এপার)
১২.১২.৭১—শানবান্ধা, খলিলপুর, কান্টাপাড়া, সুলতানপুর*
১৩.১২.৭১—শানবান্ধা, নবগ্রাম, গোলাই*
১৪-১৫.১২.৭১—বরুন্ডী (ওপার) খালেক বিশ্বাসের বাড়ি ১৬.১২.৭১ (বৃহস্পতিবার) —মানিকগঞ্জ খাবাশপুর, সুলতানপুর*
১৪ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পরেশ বরুন্ডী খালেক বিশ্বাসের বাড়ি অবস্থান করেছিল।
আমরা যদি অনেকেই পরেশের মতো রোজনামচা লিখে রাখতাম বিশেষ করে যারা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ করেছে তাহলে নিশ্চয়ই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস লিপিবদ্ধ করতে সহজ হতো এবং এতো ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আমাদের গর্বের মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করতে পারত না।
উপরন্তু এরকম রোজনামচার মাধ্যমে নানা বিষয়ে সঠিক ইতিহাস উঠে আসত, যেমন আমাদের গ্রামগুলোর ভৌগলিক, সামাজিক, ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আরও কত কী। পরেশ তার স্মৃতিকথা সমৃদ্ধ করুক, স্মৃতি নিয়ে অনেকদিন বেচে থাক এবং আমাদের হারানো দিন হারানো বন্ধু পুনরুদ্ধারে তার বলিষ্ঠ হাত প্রসারিত করুক। পরেশের এই রোজনামচা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের প্রতিনিধিদের রোজনামচা লিখতে উদ্বুদ্ধ করুক।
পাঠকের মন্তব্য(০)
মন্তব্য করতে লগইন করুন