(প্রিয়.কম) সম্প্রতি বরেণ্য অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় এই অভিনেতাকে আর ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। তারপর তার পরিবারের লোকজনরা অপেক্ষায় ছিলেন হয়তো ঈদের আগেই ছাড়পত্র পাবেন। কিন্তু তাও হলো না। এ কারণে বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এ অভিনেতাকে এবার ঈদের সময়টা হাসপাতালেই কাটাতে হবে।
৩ জুন, সোমবার দুপুরে প্রিয়.কমের সঙ্গে আলাপে এসব তথ্য জানিয়েছেন এটিএম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনি জামান।
তিনি বলেন, ‘তার শারীরিক অবস্থা এই ভালো তো এই খারাপ। কখন কী হয় বোঝা মুশকিল। তাই চিকিৎসকরাও কোনো ধরনের রিস্ক নিতে চান না। এভাবেই তার দিন কাটছে।’
এটিএম শামসুজ্জামান প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে রাজধানীর পুরান ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখানে অধ্যাপক মতিউল ইসলাম তার চিকিৎসার তত্ত্বাবধান করছেন।
১৩ মে আনুষ্ঠানিকভাবে এটিএম শামসুজ্জামানের চিকিৎসার সব ধরনের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অভিনেতার চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকার চেক হাসপাতালের তহবিলে জমা দেওয়া হয়েছে।
গত ২৬ এপ্রিল রাতে হঠাৎ করেই অসুস্থ বোধ করার সঙ্গে সঙ্গে এটিএম শামসুজ্জামানকে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ২৭ এপ্রিল এই বরেণ্য অভিনেতার ফুসফুসে অস্ত্রোপচার করা হয়। তখন তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে কেবিনে রাখা হয়েছিল। তারপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
পরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে তার ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলে ৩০ এপ্রিল তাকে আবার লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
এটিএম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনি জামান জানান, ১৯৮২ সালে এটিএম শামসুজ্জামানের গলব্লাডারে অপারেশন হয়েছিল, তখন পুরোপুরি সফল হয়নি। সেখানেই এবার ইনফেকশন হয়েছে; যার কারণেই সমস্যাটা প্রকট হয়ে তিনি সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এটিএম শামসুজ্জামান অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু নির্মিত ‘আলফা’। ২৬ এপ্রিল ছবিটি দেশের চারটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে।
দীর্ঘ ছয় দশকের ক্যারিয়ারে এটিএম শামসুজ্জামান পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, সংলাপ রচয়িতা হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন।
১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে এটিএম শামসুজ্জামানের চলচ্চিত্র জীবনের শুরু। প্রথম কাহিনি ও চিত্রনাট্যকার হিসেবে কাজ করেছেন ‘জলছবি’ ছবিতে। এ পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনি লিখেছেন।
শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পাঁচ বারেরও বেশি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এ অভিনয়শিল্পী।
প্রিয় বিনোদন/আজাদ চৌধুরী
পাঠকের মন্তব্য(০)
মন্তব্য করতে লগইন করুন