প্রতীকী ছবি

ক্যাশলেস সোসাইটি কেন প্রয়োজন (ভিডিও)

দেশে ক্যাশলেস সোসাইটি কেন প্রয়োজন—এমন প্রশ্নের উত্তরে জাকারিয়া স্বপন জানান, সোসাইটি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। বর্তমানে সোসাইটিতে বেশকিছু সার্ভিস যুক্ত হয়েছে, যেগুলোতে অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট না করলে সার্ভিসগুলো নেওয়া সম্ভব না।

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিয়.কম
প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০১৯, ১৭:৪৭ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯, ১৭:৪৭
প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০১৯, ১৭:৪৭ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯, ১৭:৪৭


প্রতীকী ছবি

(প্রিয়.কম) দেশের অর্থনীতিতে বর্তমানে ৯৫ থেকে ৯৬ শতাংশ লেনদেন হয় নোট বা টাকার মাধ্যমে। আর্থিক লেনদেনে টাকা বা নোটের প্রচলন কমাতে ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরিতে দেশে কাজ করছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল ভূমিকা রাখতে পারে। এতে জিডিপি যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি কমবে দুর্নীতি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সহজে ও কম মূল্যে ইন্টারনেট এবং ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরিতে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এগিয়ে আসার মানসিকতা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে।

দেশে সর্বপ্রথম ক্যাশলেস সোসাইটি এবং ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম নিয়ে কাজ করছে আইপে সিস্টেমস লিমিটেড। ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে এই প্রতিষ্ঠানটি। দুই বছর পর লাইসেন্স পায় আইপে।

সম্প্রতি ক্যাশলেস সোসাইটির বিষয় নিয়ে যমুনা টিভির এক অনুষ্ঠানে কথা বলেন আইপে সিস্টেমসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) প্রযুক্তিবিদ জাকারিয়া স্বপন

তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত শতাব্দীতে মানুষ কার্ড ব্যবহার করা শুরু করেছে। এই শতাব্দীতে টাকা আর ফিজিক্যাল থাকছে না। ফলে ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে ক্যাশলেস সোসাইটির বিষয়টি।

তিনি জানান, আইপেতে ব্যবহার করা হয়েছে এমন একটি সফটওয়্যার, যা দিয়ে রিয়েল টাইম টাকা ট্রান্সফার করা যায়। এটি বাংলাদেশেই ডিজাইন করা, দেশের ছেলে-মেয়েদের তৈরি করা এবং তারাই এটি চালাচ্ছে।

দেশে ক্যাশলেস সোসাইটি কেন প্রয়োজন—এমন প্রশ্নের উত্তরে জাকারিয়া স্বপন জানান, সোসাইটি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। বর্তমানে সোসাইটিতে বেশকিছু সার্ভিস যুক্ত হয়েছে, যেগুলোতে অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট না করলে সার্ভিসগুলো নেওয়া সম্ভব না। যেমন ই-কমার্স বা নেটফ্লিক্স। ই-কমার্সের মাধ্যমে কোনো পণ্য কিনতে হলে অনলাইন পেমেন্ট প্রয়োজন। কেউ যদি নেটফ্লিক্সে ভিডিও দেখতে চায়, তাকে অনলাইনে পেমেন্ট করতে হবে। এর বাইরে নেটফ্লিক্সের সেবা গ্রহণ করা সম্ভব না।

তার মতে, অনলাইন পেমেন্ট দেশের অর্থনীতিতে ভালো প্রভাব ফেলবে। একই সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টে থাকবে না কোনো ফাঁক-ফোকর। বৃদ্ধি পাবে স্বচ্ছতা।

তিনি বলেন, ‘যখন সোসাইটিতে অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট হচ্ছে, মানি ফ্লো বেড়ে যাচ্ছে, দ্রুত ট্রান্সফার করতে পারছেন বা পেমেন্ট করতে পারছেন, ইকোনোমিতে এটির ডিরেক্টলি ইমপ্যাক্ট রয়েছে। এতে জিডিপি বেড়ে যায়। এ ছাড়া যখন একটি সোসাইটিতে ডিজিটাল মানি বা ডিজিটাল ট্রানজেকশন তৈরি হবে, তখন সোসাইটি অনেক বেশি ট্রান্সপারেন্ট হবে। কারণ সব প্রকার লেনদেন দেখতে পাবে এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে স্বচ্ছতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্রাইম কমে আসবে।’

ক্যাশলেস, পেপারলেস ও ফেসলেস—এই তিনটি বিষয়কে মাথায় রেখে কাজ করছে আইপে। ফেসলেস কথাটির মানে হচ্ছে, আইপে অ্যাকাউন্ট খুলতে কোনো এজেন্টের কাছে ফিজিক্যালি যেতে হবে না। যারা অ্যাকাউন্ট খুলতে চান ঘরে বসেই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। আর পেপারলেস হচ্ছে,  কাগজে লিখে অ্যাকাউন্ট খোলার কোনো নিয়ম রাখা হয়নি এতে।

আইপে অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে যেন একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে যায়, এ নিয়ে একটি পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে।

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ১০ কোটি মানুষকে আইপের আওতায় নিয়ে আসতে পারি, তাহলে এই সংখ্যক মানুষকে ব্যাংকিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা যাবে।’

তার তথ্য অনুযায়ী, এই পদক্ষেপ বাস্তবে রূপান্তরিত হলে গ্রামে থাকা একজন মানুষও আইপেতে অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মালিক হয়ে যাবেন।

ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরিতে সাশ্রয়ী মূল্যে হাতের নাগালে ইন্টারনেটের প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। এ ছাড়া বাংকিং খাতের নীতিনির্ধারকের হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করলে দেশ অনেক দ্রুত ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে এগিয়ে যাবে।

প্রিয় প্রযুক্তি/রিমন

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...