সাংবাদিক পরিচয় পেয়েও লাঞ্ছিত করা হয় ইমন রহমানকে। ছবি: সংগৃহীত

ছবি তুলতেই খেপে গেলেন মন্ত্রী পরিবারের লোকজন, সাংবাদিক ‘লাঞ্ছনা’

‘থানায় যাওয়ার পথে ওই কনস্টেবলকে একটি নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয়, মন্ত্রী ওসির সঙ্গে কথা বলেছেন। ফোন যেন ওই সাংবাদিক না পায়।’

আবু আজাদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০১৯, ১৭:৫২ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯, ১৭:৫২
প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০১৯, ১৭:৫২ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯, ১৭:৫২


সাংবাদিক পরিচয় পেয়েও লাঞ্ছিত করা হয় ইমন রহমানকে। ছবি: সংগৃহীত

(প্রিয়.কম) খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের জামাতা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক রাজন কর্মকারের লাশের পাশে স্বজনদের আহাজারির ছবি মোবাইল ফোনে তুলতে গিয়ে দৈনিক দেশ রূপান্তরের ক্রাইম রিপোর্টার ইমন রহমান লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

১৮ মার্চ, সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে এ ঘটনা ঘটে।

ইমন রহমানের অভিযোগ, ঘটনার সময় মন্ত্রীর পরিবারের লোকজন তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে শেরে বাংলা নগর থানার কনস্টেবল শামীমের কাছে দেন। এ সময় তাকে লাঞ্ছিত করা হয়।

ইমন রহমান জানান, ডা. রাজনের মৃত্যুর সংবাদের ফলোআপ নিউজ করার উদ্দেশ্যে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে যান তিনি। দুপুর দেড়টার দিকে মন্ত্রীর পরিবারের স্বজনরা মর্গে ঢোকেন। এ সময় স্বজনদের আহাজারির ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করলে সাত-আট জন তাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে প্রথমে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন। এ সময় তিনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। অপর একজন মোবাইল ফোনটি আছড়ে ভাঙতে উদ্যত হন। কিন্তু পাশে থাকা অন্য এক ব্যক্তি তাকে বাধা দেন।

ঘটনাস্থলে থাকা শেরে বাংলা নগর থানার কনস্টেবল শামীমের কাছে ফোনটি দিয়ে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘শামীম মোবাইল ফোনসহ ইমনকে শেরে বাংলা নগর থানায় নিয়ে যান।’

হামলাকারীদের কাউকেই চেনেন না বলে জানিয়েছে ইমর রহমান বলেন, ‘থানায় যাওয়ার পথে ওই কনস্টেবলকে একটি নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয়, মন্ত্রী ওসির সঙ্গে কথা বলেছেন। ফোন যেন ওই সাংবাদিক না পায়।’

এ বিষয়ে শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ দেশ বলেন, ‘আমরা তো ফোন নিইনি। মন্ত্রীর স্বজন পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনটি আমাদের কাছে দিয়েছে।’

ওসি আরও বলেন, ‘ফোনের ছবিগুলো ডিলিট করে ওই সাংবাদিককে ফোনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।’

গত ১৭ মার্চ, রবিবার ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের জামাতা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক রাজন কর্মকারকে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়াই খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের পরিবার লাশ নিতে চাইলে বাধা দেন রাজনের সহকর্মী চিকিৎসকরা।

রাজনের সহকর্মীদের দাবি, অতীতেও স্ত্রীর নির্যাতনে শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন রাজন। তাই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে লাশের ময়নাতদন্তের দাবি করেন তারা।

পরে শেরে বাংলা নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করে রাজনের পরিবার। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে রাজনের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়।

প্রিয় সংবাদ/আজাদ চৌধুরী

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...