প্রতীকী ছবি

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আইজিডব্লিউ অপারেটর নিয়োগ, অভিযোগ গ্রাহকদের

সংগঠনটির দাবি, প্রয়োজনের তুলনায় আইজিডব্লিউ অপারেটর নিয়োগের কারণে এবং অপারেটরগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা না থাকায় মোবাইলের কলরেট বাড়ছে।

রাকিবুল হাসান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ২০:১৯ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ২০:১৯
প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ২০:১৯ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ২০:১৯


প্রতীকী ছবি

(প্রিয়.কম) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে একের পর এক ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনটির দাবি, প্রয়োজনের তুলনায় আইজিডব্লিউ অপারেটর নিয়োগের কারণে এবং অপারেটরগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা না থাকায় মোবাইলের কলরেট বাড়ছে।

১৩ অক্টোবর, শনিবার এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রতিটি রাজনৈতিক সরকারই তাদের নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যাংক-বিমাসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রদান করে থাকেন। এতে টেলিকম খাতও ব্যতিক্রম নয়। বিদেশ থেকে কোনো কল আসলে প্রথমে যে অপারেটর কল পায় বা বিদেশে কল যাবার জন্য যে অপারেটরের মাধ্যমে কল যায়, সেই অপারেটরের নামই হচ্ছে আইজিডব্লিউ (ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে)। দেশে বর্তমানে আইজিডব্লিউ অপারেটর সংখ্যা ২৩টি। ২০১০ সালে অপারেটর ছিল ৪টি। ২০১২ সালে সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় আরও ২৫টি লাইসেন্স প্রদান করে। এতে মোট অপারেটরের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৯টি।’

‘পরবর্তী বছরে ৬টি অপারেটরের কাছে বিটিআরসির পাওনা দাঁড়ায় ৬০০ কোটি টাকা। টাকা পরিশোধ না করার দায়ে এই ৬টি অপারেটরের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর নতুন করে আইজিডব্লিউর জন্য আবেদন আহ্বান করে বিটিআরসি। তার বিপরীতে ১৪টি আবেদন এ পর্যন্ত জমা পড়েছে। যদি এই ১৪টি আবেদনকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়, তাহলে দেশে মোট আইজিডব্লিউ অপারেটরের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩৭টিতে।’

মহিউদ্দীন বলেন, ‘আমাদের প্রশ্ন, এত বিপুলসংখ্যক অপারেটর থেকে গ্রাহকদের লাভ কী? নাকি অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসাকে বৈধতা দেওয়ার জন্যই এই ব্যবস্থা? এই অপারেটরদের মাঝে সেবা প্রদানের নিশ্চয়তা, জবাবদিহিতা, কোনটিই নেই। অর্থাৎ মুনাফাই বেশি। মোবাইল অপারেটরদের মোট বিনিয়োগের ৫ শতাংশও এদের বিনিয়োগ করতে হয় না। অথচ লাভের পরিমাণ প্রায় সমান।’

‘এ সকল অপারেটরদের আবার জোট থাকায় এদের কোনো প্রতিযোগিতায় যেতে হয় না। এই জোটের নাম আইওএফ (আইজিডব্লিউ অপারেটর ফোরাম)। তবে এদের মধ্যেও ক্ষমতার ভারসাম্য করে দেওয়া হয়েছে। বেশি লাভ করে ৭টি অপারেটর। এদের শ্রেণি বিভাগ করা হয়েছে টিআর-১ ও টিআর-২ নামে। টিআর-১ অপারেটররা ১ টাকা আয় করলে টিআর-২ অপারেটররা লাভ করে ১ টাকা ৯০ পয়সা। এসব ভাগাভাগি যে রাজনৈতিক কারণে হয়েছে, তা এককথায় পরিষ্কার। যে রাজনীতি হবার কথা জনগণের কল্যাণে, তা আজ মুনাফা করার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। এটি জনগণের সাথে এক প্রকার প্রতারণা ছাড়া কিছুই না।’

মহিউদ্দীনের মতে, আইসিএক্স বা ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ অপারেটররা বসে বসে প্রতি কলে ৪ পয়সা ভাগ পায়। এই দুটি অপারেটরের দৌরাত্ম্যের কারণেও মোবাইল ফোনের কলরেট কমানো যাচ্ছে না।

‘আমরা মনে করি, এ দুটি অপারেটরকেও জবাবদিহিতার আওতায় এনে প্রতিযোগিতার বাজারে ছেড়ে দেওয়া হোক। আমরা সরকারের দাবি করি, আইজিডব্লিউ অপারেটরদের জোট ভেঙে দিয়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে কলরেট কমানো হোক’, বলেন মহিউদ্দীন।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর নিজেদের ওয়েবসাইটে ঘোষণা দিয়ে আইজিডব্লিউ লাইসেন্স দিতে আগ্রহীদের কাছ থেকে আবেদন চেয়েছিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। একই সঙ্গে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদন করার শেষ সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বিটিআরসিতে লাইসেন্সের জন্য ১৪টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। মোট কয়টি লাইসেন্স দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছুই নিশ্চিত করেনি প্রতিষ্ঠানটি।

আবেদনকারী কোম্পানিগুলো হলো সোলজার্স গিয়ারস, রেড বিচ রিসোর্স লিমিটেড, এভিস টেকনোলজিস লিমিটেড, রুটস টেক কমিউনিকেশন, ইনফিনিটি টেলিকম লিমিটেড, জয়েন আস নেটওয়ার্ক, আই বিজনেস হোল্ডিংস লিমিটেড, পদ্মা কমিউনিকেশন লিমিটেড, আমান টেল, রা ইনফোটেক, লেভেল থ্রি টেলিকম লিমিটেড, ওয়েল ইনফরমেশন টেক, টুজি টেলিকম ও রানা ট্রেডিং লিমিটেড।

প্রিয় প্রযুক্তি/আজহার

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...