(প্রিয়.কম) হলুদ কী, তা এদেশের কাউকেই বুঝিয়ে বলার দরকার নেই। রান্নায় তো বটেই, রূপচর্চা এবং সুস্বাস্থ্যে ঘরে ঘরে হলুদ ব্যবহার করা হয়। মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের মশলা হলেও বর্তমানে সারা বিশ্বে হলুদের গুণাগুণ নিয়ে গবেষণা চলছে। কিন্তু তা আসলে কতটা উপকারী?
শত শত বছর ধরে আয়ুর্বেদে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে হলুদ। শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা দূর, রিউমাটিজম, ক্লান্তি ও ব্যথা দূরে তা কাজে লাগানো হয়। হলুদ আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত মানুষের হাঁটুর ব্যথা কমাতে পারে, তা পরীক্ষিত সত্য। এছাড়া বাইপাস সার্জারির পর তা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমাতেও কার্যকরী।
তবে আমরা সাধারণত কাঁচা হলুদ বা গুঁড়ো হলুদ খাই। অন্যদিকে গবেষণা করা হয় হলুদে থাকা রাসায়নিক কারকিউমিন নিয়ে। অনেকে এর জন্য কারকিউমিন ট্যাবলেট খান। বেশি করে হলুদ দেওয়া খাবার নিয়মিত খেলে কারকিউমিনের উপকারিতাগুলো পাওয়া যেতে পারে। এ কারণেই ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের কোলন ক্যান্সারের মাত্রা কিছুটা কম। আবার হলুদের পাশাপাশি গোলমরিচ ব্যবহার করলে উপকার বেশি হয়। কারণ শরীরে কারকিউমিন শোষিত হতে সাহায্য করে গোলমরিচে থাকা উপাদান পিপেরিন।
কারকিউমিনের একটি অসুবিধা হলো, তা সহজে দ্রবীভূত হয় না। আমরা যতটা হলুদ খাই তাতে থাকা অনেকটা কারকিউমিনই রক্ত পর্যন্ত পৌঁছায় না। চোখে ছানি পড়া দূর করতে কারকিউমিন অনেক বেশি পরিমাণে খেতে হবে। এত বেশি খেলে ডায়রিয়া এবং বমি হবার সম্ভাবনা থাকে।
সিএনএনকে লন্ডনের চক্ষু চিকিৎসক ড. ফ্রান্সেস্কা করডেইরো জানান, হলুদ মেশানো তরকারিতে ৭০০ মিলিগ্রামের মতো হলুদ থাকে। দিনে অন্তত ২০০ বার হলুদ দেওয়া তরকারি খেলে তাহলেই চোখের ছানি দূর করা যাবে। কিন্তু তা সম্ভব নয়। এর বদলে তারা কারকিউমিন সমৃদ্ধ একটি আই ড্রপের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখছেন। ইঁদুরের ওপর করা এই পরীক্ষায় দেখা যায়, তিন সপ্তাহ এই ড্রপ ব্যবহারের পর দৃষ্টিশক্তির উন্নতি হয় ২৩ শতাংশ। শুধু তাই নয়, এই ড্রপ থেকে আলঝেইমার্সের প্রতিকার তৈরির কথাও ভাবছেন তারা।
কারকিউমিন ট্যাবলেট খাওয়ার পার্শ্বপতিক্রিয়াগুলো কম হলেও তা খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে কথা বলে নেওয়া উচিৎ। বিশেষ করে অন্য ওষুধ চলছে এমন অবস্থায় ডাক্তারকে না জানিয়ে কারকিউমিন খাওয়া ঠিক হবে না।
সূত্র: সিএনএন
প্রিয় বিজ্ঞান/ আর বি
পাঠকের মন্তব্য(০)
মন্তব্য করতে লগইন করুন