প্রাণ ডেইরি লিমিটেড (প্রাণ মিল্ক) ও আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড (ফার্মফ্রেশ) কোম্পানির পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন ও বিক্রির ওপর হাইকোর্টের জারি করা নিষেধাজ্ঞা ৫ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। ফলে বাজারে তাদের দুধ বিক্রিতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। গতকাল চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আপিল আদালত প্রতিষ্ঠানগুলোর করা এক আবেদনের শুনানিতে এ আদেশ দেন। আদালতে কোম্পানিগুলোর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এরই মধ্যে আরো ১১ কোম্পানি মঙ্গলবার হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছে বলে জানিয়েছেন আপিলকারী কোম্পানিগুলোর আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, এসব আপিলের ওপর আজ বুধবার শুনানি হতে পারে। এর আগে ২৯শে জুলাই রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বাংলাদেশ মিল্ক প্রডিউসারস কো অপারেটিভ ইউনিয়ন লিমিটেডের পাস্তুরিত দুধ মিল্কভিটা উৎপাদন ও বিক্রির ওপর হাইকোর্টের জারি করা নিষেধাজ্ঞা ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। গতকাল প্রাণ ও ফার্মফ্রেশ কোম্পানির পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন ও বিক্রির ওপর হাইকোর্টের জারি করা নিষেধাজ্ঞা ৫ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে আদালত। এ নিয়ে তিন কোম্পানির দুধ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা কাটল। তবে এখনো যেসব কোম্পানির দুধ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সেগুলো হলো- আফতাব মিল্ক অ্যান্ড মিল্ক প্রোডাক্ট লিমিটেড (আফতাব মিল্ক), আমেরিকান ডেইরি লিমিটেড (মু মিল্ক), বারো আউলিয়া ডেইরি মিল্ক অ্যান্ড ফুডস লিমিটেড (ডেইরি ফ্রেশ), ব্র্যাক ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রজেক্ট (আড়ং মিল্ক), ডেনিশ ডেইরি ফার্ম লিমিটেড(ডেনিশ আইরান), ইছামতি ডেইরি ফার্ম অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস (পিওরা মিল্ক), ইগলু ডেইরি লিমিটেড (ইগলু), উত্তরবঙ্গ ডেইরি লিমিটেড(মিল্ক ফ্রেশ), শিলাইদহ ডেইরি (আল্ট্রা মিল্ক), পূর্ববাংলা ডেইরি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ (আরোয়া মিল্ক) এবং তানিয়া ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস ( সেফ মিল্ক)। এর আগে ২৮শে জুলাই আদালতের নির্দেশে ১৪ কোম্পানির দুধের নমুনা পরীক্ষা করে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের ল্যাবরেটরি, আইসিডিডিআরবির ল্যাবরেটরি, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (সাভার) ল্যাবরেটরি ও জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে, একটি পরীক্ষায় ১৪ কোম্পানির দুধেই মানবদেহের জন্য সহনীয় মাত্রার সীসা পাওয়া গেছে এবং আরেকটি পরীক্ষায় ১৪ কোম্পানির দুধেই পাওয়া গেছে এন্টিবায়োটিক। এছাড়া দুধে ক্ষতিকর লেড পাওয়া গেছে। বিএসটিআইয়ের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়, দুধে এন্টিবায়োটিক বা ডিটারজেন্ট আছে কিনা তা তাদের ল্যাবে পরীক্ষার সক্ষমতা অর্জন করতে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সময় লাগবে। এরপর আদালত ১৪ কোম্পানির পাস্তুরিত দুধে পাঁচ সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রুল জারি করেন।