রাখাইনে সেনা হেফাজতে যুবকের মৃত্যু নির্যাতনের অভিযোগ

মানবজমিন প্রকাশিত: ০৫ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

রাখাইনে আটক এক যুবক সেনাবাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থায় নির্যাতনে মারা গেছেন। নির্যাতনের ফলে তিনি রক্তবমি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার মা। কিন্তু সেনাবাহিনী এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেনাবাহিনীতে নির্যাতন চালানো নিষিদ্ধ। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে আরাকান সালভেশন আর্মির (আরসা) হামলার জবাবে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংস নির্যাতন চালায়। এতে বন্যার পানির মতো রোহিঙ্গা মুসলিমরা পালিয়ে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। সেই রাখাইনেই কয়েক মাস ধরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে আরেকটি বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মি। এই গ্রুপটি রাখাইনে জাতিগত রাখাইন বৌদ্ধদের জন্য অধিকতর স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের ওপর দমন-পীড়ন চালাতে রাখাইনে কয়েক হাজার সেনাসদস্যকে মোতায়েন করেছে মিয়ানমার। গ্রামগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে সেনাবাহিনী। স্থানীয়দের ঘেরাও করা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। সেনাবাহিনী চেষ্টা করছে আরাকান আর্মি ও তাদের প্রতি সহানুভূতিশীলদের মুছে দেয়ার। এরই অংশ হিসেবে মরাউক ইউ টাউন এলাকা থেকে ১৯শে জুন তারা আটক করে জাও উইন হ্লাইংকে (২৮)। তার মা থেইন নু সেইন বলেছেন, এর পাঁচদিন পরে তাকে পাঠানো হয় স্থানীয় একটি হাসপাতালে। সেখান থেকে তার ছেলেকে রাজ্যের রাজধানী সিতওয়েতে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হতেই থাকে। অবশেষে সোমবার মারা গেছেন তিনি। বুধবার কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা থেইন নু সেইন। তিনি বলেন, আটক অবস্থায় নির্যাতনে তার রক্তবমি হচ্ছিল। তার ভাষায়, আমার ছেলে আমাকে বলেছে তাকে প্রহার করেছে তারা। লুঙ্গির ভেতর পাথর বেঁধে তা দিয়ে তার পিঠে আঘাত করেছে।এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাও মিন তুন বলেছেন, জাও উইন হ্লাইংয়ের মৃত্যুর অভিযোগ সম্পর্কে তিনি শুনেছেন। আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ এলে এর তদন্ত করা হবে। তিনি জানান, সেনাবাহিনীতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতন করা নিষিদ্ধ। রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাখাইনের উত্তরাঞ্চল পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। কারণ, সেখানে ইন্টারনেট সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার, যাতে নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা কঠিন হয়ে পড়ে। ওদিকে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গ্রুপগুলো উভয় পক্ষই নির্যাতনের আশ্রয় নিয়েছে বলে জেনেভাতে মঙ্গলবার সতর্ক করেছেন জাতি সংঘের স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর ইয়াংহি লি। তিনি বলেছেন, সর্বশেষ চলমান এই লড়াইকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। এমন পাল্টাপাল্টি গুলি বিনিময়ের মধ্যে আটকা পড়েছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। এমন কি তারা বিভিন্ন উপাসনালয়ে আশ্রয় নিয়েও নিস্তার পাচ্ছে না। এপ্রিলে ৬ রাখাইন বন্দিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনী। তারা বলেছে, আত্মরক্ষার্থে তাদেরকে এটা করতে হয়েছে। ওদিকে সেনা হেফাজতে থাকা অবস্থায় কমপক্ষে ১৪ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো। এমন গ্রুপ ফোর্টিফাই রাইটসের জন কুইনলে বলেছেন, রাখাইনে পুরো দায়মুক্তি নিয়ে অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। সেখানে কমপক্ষে ৩৫ হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। প্রায় এক লাখ মানুষ তাদের মৌলিক সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us