ইনিংসের শুরুতেই ইংলিশ পেসে ধরাশায়ী শ্রীলঙ্কা। ধাক্কা সামলে যেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে তারা, তখনই স্পিনার আদিল রশিদ এক ওভারে তুলে নিলেন ২ উইকেট। হেডিংলিতে গতকাল নিজেদের বাঁচা-মরার লড়াইয়ে পেস-স্পিন দুটোতেই কাবু হয়েছে শ্রীলঙ্কা। আগের ৩ ম্যাচে প্রত্যেকটিতে অলআউট হওয়া দলটি আরো একবার ৫০ ওভার খেলার আগেই গুটিয়ে যেতে পারতো। তবে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের কল্যাণে পুরো ওভারই খেলতে পারে লঙ্কানরা। ম্যাথিউসের অপরাজিত ৮৫ রানের ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৩২ রানের পুঁজি গড়ে তারা। ইংল্যান্ডের হয়ে জোফরা আর্চার ও মার্ক উড প্রত্যেকে ৩টি করে উইকেটে নেন। আদিল রশিদ ২টি ও ক্রিস ওকস নেন ১টি উইকেট। এ নিয়ে বিশ্বকাপে ১৫ উইকেট হয়ে গেল ডানহাতি পেসার আর্চারের। অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসার মিচেল স্টার্কের সঙ্গে যৌথভাবে টুর্নামেন্টের সর্বাধিক উইকেট শিকারি বোলার তিনি। বিশ্বকাপের এক আসরে ইংল্যান্ডের হয়ে আর্চারের বেশি উইকেট আছে কেবল সাবেক পেস অলরাউন্ডার ইয়ান বোথামের। ৯২’র আসরে ১৬ উইকেট নিয়েছিল বোথাম।টস জিতে ব্যাটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে। সুবিধা করে উঠতে পারেননি। দ্বিতীয় ওভারেই আউট হয়ে যান করুণারত্নে। জোফরা আর্চারের লাফিয়ে ওঠা বল তার ব্যাটের কানা ছু্ঁইয়ে চলে যায় উইকেটের পেছনে আর ধরা পড়ে জস বাটলারের হাতে। আগের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯৭ রান করা করুণারত্নে ফেরেন মাত্র ১ রানে। পরের ওভারেই আরেক ওপেনার কুসাল পেরেরাকে তুলে নেন ক্রিস ওকস। থার্ড ম্যানে থাকা মঈন আলীর হাতে ক্যাচ দেন পেরেরা (২)। ৫ রানে ২ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন কুসাল মেন্ডিস-আভিস্কা ফার্নান্দো। দারুণ খেলছিলেন আভিস্কা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ব্যক্তিগত ৪৯ (৩৯ বল) রানে মার্ক উডের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। আবার চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। আগের ৩ ম্যাচের কোনোটিতেই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা রান করতে পারেননি। গ্যালারিতে থাকা লঙ্কান সমর্থকদের চোখে হতাশা স্পষ্ট হয়ে উঠে। তবে এদিন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা রান পেয়েছেন। আগের তিন ম্যাচে মাত্র ৯ করা ম্যাথিউস চতুর্থ উইকেটে কুসাল মেন্ডিসের সঙ্গে জুটি গড়েন। তাদের ব্যাটে ভালোভাবেই এগোচ্ছিল শ্রীলঙ্কা। এ জুটিতে ৭১ রান যোগ হওয়ার পর ভুল করে বসেন মেন্ডিস (৪৬)। ইনিংসের ৩০তম ওভারে লেগস্পিনার আদিল রশিদকে মারতে গিয়ে আউট হয়ে যান তিনি। পরের বলেই জীবন মেন্ডিস কট অ্যান্ড বোল্ড। তাতে শ্রীলঙ্কার বড় স্কোর গড়ার সম্ভাবনা অনেকটাই শেষ হয়ে যায়। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে চেষ্টা করে যেতে থাকেন ম্যাথিউস। ষষ্ঠ উইকেটে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ্ব ( ৫৭) রানের জুটি গড়েন সাবেক অধিনায়ক। ব্যক্তিগত ২৯ রানে আর্চারের বলে ধনঞ্জয়া ফিরলে ভাঙে এ জুটি। পরের সতীর্থরা কেউই ম্যাথিউসকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ১১৫ বলে ৮৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। যাতে ছিল ৫ বাউন্ডারি ও একটি ছক্কার মার।