অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে মাত্র ২০৮ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল আফগানিস্তান। সে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৫.১ ওভার হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয় সহজ পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। গত বছরের মার্চে কেপটাউনে বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারিতে নিষিদ্ধ হওয়া ডেভিড ওয়ার্নার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেন এই ম্যাচ দিয়েই।ওয়ার্নারের সঙ্গে এদিন ফিরেছিলেন একই ঘটনায় নিষিদ্ধ হওয়া স্টিভেন স্মিথ। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি তিনি। লক্ষ্য থেকে ৩ রান দূরে থাকতে মুজিব উর রহমানের স্পিনে হযরতউল্লাহ জাজাইয়ের ক্যাচ হন সাবেক অধিনায়ক। ২৭ বলে ১৮ রান করেন তিনি। স্মিথ আউট হলেও অপরাজিত ৮৯ রানের ইংনিস খেলে মাঠ ছাড়েন ওয়ার্নার। ব্রিস্টলে আফগানিস্তানের আশা ছিল তিন স্পিনারকে ঘিরে। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার। মাত্র ১৬.১ ওভারে ৯৬ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়াকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছেন দুজন। ওয়ার্নার নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা ওয়ার্নার কেমন খেলেন, সে দিকেই নজর ছিল সকলের। তবে ওয়ার্নার নন, উদ্বোধনী জুটিতে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। শুরু থেকেই আফগান বোলারদের মেরে খেলেছেন, স্পিন দিয়ে রানের চাকা চেপে ধরার পরিকল্পনাও ভেস্তে দিয়েছেন। প্রথম ওভারেই মুজিব-উর-রহমানকে দুটি চার মেরে আফগানদের বুঝিয়ে দিয়েছেন, স্পিনে কাবু করার পরিকল্পনা খুব একটা কাজে লাগবে না। মুজিবের পরের ওভারে একটি করে চার-ছয় মেরে তো তাঁকে আক্রমণ থেকেই বিদায় করেদেন ফিঞ্চ।স্পিনারদের সহজে খেললেও পেসার হামিদ হাসান বেশ ভালোই ভুগিয়েছেন দুই ওপেনারকে। ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতি তুলছিলেন নিয়মিতই। বাকি বোলারদের ওপর চড়াও হলেও হামিদকে ঠিকই সমীহ দিয়ে খেলেছেন ফিঞ্চ, ৪ ওভারের প্রথম স্পেলে মাত্র ১০ রান দিয়েছেন হামিদ। এর মধ্যে আছে দুটি মেডেন ওভারও। এতে করে ছোটখাটো একটা রেকর্ডও হয়েছে। ওয়ানডেতে প্রথম বোলার হিসেবে ওয়ার্নারকে এক ম্যাচে দুটো মেডেন দিলেন হামিদ।এদিন সুবিধা করতে পারেননি না আফগান বোলিংয়ের মূল ভরসা রশিদ খানও। ১৪তম ওভারে প্রথম আক্রমণে আসা রশিদের প্রথম দুই বলেই ১০ রান তুলে স্বাগত জানিয়েছেন ফিঞ্চ। যেভাবে ব্যাট করছিলেন, এই বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরিটা ফিঞ্চের ব্যাট থেকে আসবে বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু ১৭তম ওভারে গুলবদিন নাইবের স্লোয়ার উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ কভারে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৬৬ রানে। ৬টি চারের পাশাপাশি মেরেছেন ৪টি বিশাল ছয়ও।সে তুলনায় শান্ত ছিলেন ওয়ার্নার। ব্যাট করতে নামার সময় ইংলিশ সমর্থকদের দুয়ো শুনতে হয়েছে আজও, তবে নিজের কাজে ঠিকই সফল এই বাঁহাতি। এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে নিয়ে এনে দিয়েছেন সহজ জয়। ১১৪ বলে ৮৯ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন ওয়ার্নার। এর আগে টসে জিতে অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী বোলিং আক্রমণে শুরুতেই বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কায় পড়েছিল আফগানিস্তান। কিন্তু ঠিক সেটা সামলে নিলো তারা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বড় কোনও লক্ষ্য দিতে না পারলেও ২০৭ রানের সম্মানজনক স্কোর বোর্ডে জমা করলো আফগানরা। রানের খাতা না খুলে বিদায় নেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ ও হযরতউল্লাহ জাজাই। এই দলটিই ঘুরে দাঁড়ায় নাজিবউল্লাহ জাদরান ও রহমত শাহর দরু“ণ ইনিংসে। ৩৮.২ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার আগে রশিদ খানের ছোট্ট ঝড়ও দলীয় স্কোরকে দুইশ পার করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।