কার্ফ্যু ভেঙে সুদানের রাজপথে লাখো জনতা, বেসামরিক সরকারের দাবি
প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০
অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সুদানের রাজধানী খার্তুমে জড়ো হয়েছে লাখো বিক্ষোভকারী। তারা বলছেন, সামরিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করলেও এটা আগের শাসনেরই ধারাবাহিকতা মাত্র। তাই নতুন করে বেসামরিক সরকারের দাবি তুলেছেন তারা। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে সরিয়ে ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দেয় সেনাবাহিনী। ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের অনুগত প্রতিরক্ষামন্ত্রী আওয়াদ ইবনে আওফ সামরিক সরকারের নেতৃত্বে রয়েছেন। তিনি আগামী দুই বছরের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলেন। সুদানে দীর্ঘ দিন ধরেই প্রেসিডেন্ট বিরোধী আন্দোলন চলছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্টকে উৎখাত করে তারই অনুগত প্রতিরক্ষামন্ত্রী সামরিক সরকারের প্রধানের পদে বসায় আন্দোলনকারীরা নতুন সরকারের প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না। তারা বলছেন, নতুন সামরিক শাসক পূর্বের সরকারেরই অংশ। এমন পরিস্থিতিতে তারা বেসামরিক সরকারের দাবিতে খার্তুমের রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া সুদানিজ প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশনের সারা আব্দেল আজিজ বলেন, এটা পূর্বের সরকারের ধারাবাহিকতা। তাই আমাদের যুদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়া দরকার। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আরো আশঙ্কা রয়েছে যে, নিরাপত্তা বাহিনী ও সেনাবাহিনী পরস্পরের বিরুদ্ধে বন্দুক তাক করতে পারে। এমনটি ঘটলে তা সুদানকে দীর্ঘমেয়াদে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দেবে। নতুন সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শান্তি বজায় রাখতে, নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সশস্ত্র বাহিনী ও নিরাপত্তা পরিষদ তার দায়িত্ব পালন করবে। এতে নাগরিকদেরকে নিরাপদে অবস্থান নিতে বলা হয়। এর পরেও খার্তুমের রাজপথে লাখো জনতা অবস্থান নিয়ে সরকার বিরোধী স্লোগান দেয়া অব্যাহত রাখেন। বশিরের পতনের আগে তারা ‘পতন চাই’ স্লোগান দিতেন। সামরিক সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর এবার তারা ‘আবারো পতন’ স্লোগানে রাজপথ মাতিয়ে রেখেছেন। সুদানের সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও আফ্রিকান ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবারের অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে ২৪ ঘন্টার জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার। শুক্রবার তা বিমান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা। তবে নৌসীমানা এখনো বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে মিলিটারি সরকার। প্রসঙ্গত, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। বর্তমানে সুদানের সামরিক সরকার তাকে কাস্টডিতে রেখেছে। এখন তার ভাগ্যে কি ঘটতে চলেছে তা পরিস্কার না।