বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা সই

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির গন্তব্যে এবার বেশ ঘটা করেই যুক্ত হলো জাপান। বিশ্বের যেসব দেশ থেকে জাপান কর্মী নেবে সেখানে তারা বাংলাদেশিদেরও ‘অগ্রাধিকার’ তালিকায় রেখেছে। আগে ভিয়েতনাম, চীন, কম্বোডিয়া, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড এবং পূর্ব-এশিয়ার একটি দেশসহ মোট ৮টি দেশ থেকে কর্মী নেয়ার সিদ্ধান্ত ছিল টোকিও’র। এবার সেই তালিকা বর্ধিত হয়েছে এবং এ নিয়ে মঙ্গলবার টোকিওতে  বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। জনসংখ্যা ক্রমাগত সঙ্কুচিত হওয়ার মুখে থাকা জাপান প্রাথমিকভাবে ৯টি দেশ থেকে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ৫ বছরে এ নিয়োগ পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন হওয়ার কথা। গত ডিসেম্বরে জাপানের পার্লামেন্টে জনশক্তি নিয়োগ সংক্রান্ত একটি বিল পাস হয়। এই পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের এপ্রিল থেকে বিদেশী কর্মীদের জন্য দুই ধরনের ভিসা ব্যবস্থা চালু করে জাপান। বিদেশি কর্মী যাদের নূন্যতম কারিগরি শিক্ষা রয়েছে, তারা ৫ বছরের জন্য কাজ করার সুযোগ পাবেন। এই সময়ের মধ্যে তারা পরিবারের সদস্যদের জাপানে নিতে পারবে না। তবে দক্ষ জনশক্তি যেমন গবেষক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, তারা প্রয়োজন অনুযায়ী (যতদিন কাজ ততদিন) জাপানে থাকতে পারবেন। সেই সঙ্গে তারা তাদের পরিবারের সদস্যদেরও নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। জাপানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন বাংলাদেশী তানিয়া হোসাইন। এক যুগের বেশি সময় ধরে তিনি শিক্ষকতার সুবাদে টোকিওতে বসবাস করছেন। সম্প্রতিক তিনি দেশে এসেছেন। মানবজমিনের সঙ্গে আলাপে তানিয়া বলেন, দ্বিতীয় ক্যাটাগরিটি আগেও ছিল। তবে সেটি অর্জনে জটিলতা ছিল অনেক। এখনও খানিকটা সহজ হয়েছে বলে শুনেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার পরপরই তানিয়া উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে টোকিও চলে যান। সেখানে পড়াশোনা শেষে চাকরি পেয়ে যান। ওসেদা ইউনিভার্সিটিতে চাকরি জীবনের শুরুতে তানিয়া ব্যাচেলর ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বিয়ে করলে পরিবারের সদস্যরা এখন তার সঙ্গেই থাকছেন। টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস অফিসার শিপলু জামানের মতে, বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগের উদ্দেশ্যে জাপানের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাপানের জাতীয় পরিকল্পনা এজেন্সি সবাই সম্মত। এ নিয়ে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। ওই স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে সই করেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রৌনক জাহান আর জাপানের পক্ষে সই করেন, দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় অধীন ইমিগ্রেশন সার্ভিস এজেন্সির কমিশনার সোকো শাসাকি। চুক্তি সইয়ের আনুষ্ঠানিকতায় জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা, জাপানের পলিসি প্লানিং ডিভিশনের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফায়ারস দপ্তরের পরিচালক ইয়াসুয়াকি ইমাই, সফররত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সেলর সহ দুদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য, এ বছরের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টোকিও সফরের সময় জাপানে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে আলোচনা হয়। তখন জাপান বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিল। সমঝোতা সইয়ের বিষয়ে রৌনক জাহান গণমাধ্যমকে বলেন, জাপানের চাহিদার কথা বিবেচনা করে দক্ষ কর্মী তৈরিতে বিভিন্ন কার্যক্রম ইতোমধ্যে বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে। সমঝোতা স্মারক সইয়ের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বড় আকারে জাপানের শ্রম বাজারে বাংলাদেশ প্রবেশের সুযোগ পেল। এতে দু’দেশই লাভবান হবে। তিনি জানান, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সারাদেশে ২৬টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে জাপানি ভাষায় ৪ মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করেছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় কোটি বাংলাদেশীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হলেও জাপানে সরকারিভাবে জনশক্তি রপ্তানির কোন সুযোগ ছিল না। এখন সেই দুয়ার খুললো।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us