বৃটেনে গ্রীষ্মকালীন যৌনজীবনের হালচাল নিয়ে করা জরিপে ভয়াবহ এক চিত্র ফুটে উঠেছে। এতে দেখা গেছে নারী ও পুরুষদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজনের বেশি যৌনতায় রোবট ব্যবহার করছেন। একই সংখ্যক মানুষ রিমোট-কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত ‘সেক্স টয়’ ব্যবহার করেন। এ ছাড়া প্রতি ৬ জনের মধ্যে একজন উত্তেজিত হতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি পর্নের ওপর নির্ভর করেন। বৃটিশ ট্যাবলয়েড পত্রিকা দ্য সান-এর করা ‘সান সামার সেক্স সার্ভে’তে উঠে এসেছে এসব তথ্য। এর উদ্দেশ্য, বৃটেনে যৌন জীবন কোনদিকে ধাবিত হচ্ছে তা নির্ধারণ করা। জরিপে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের মধ্যে শতকরা ১৩ ভাগই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন সেক্স ডলকে শয্যাসঙ্গী করেন। রিমোট কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত ‘সেক্স টয়’ এখন বৃটেনের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। যখন একটি যুগল আলাদা থাকেন তখন তারা একসঙ্গে এটি ব্যবহার করেন। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের যাদের বয়স ৫৫ বছর বা তারও বেশি তাদের অর্ধেকই বলেছেন, শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের সময় প্রতিবারই তারা ‘অর্গাজমের’ আশ্রয় নেন। কিন্তু ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে এই হার এক তৃতীয়াংশের কিছুটা বেশি। শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বৃটিশদের মধ্যে আরো একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে ওই জরিপে। তাতে দেখা গেছে শতকরা ৫৯ ভাগ মানুষ এক্ষেত্রে উপযুক্ত স্থান হিসেবে বেছে নেন গাড়ি। আর শতকরা ১৮ ভাগ বেছে নেন কর্মক্ষেত্র। জরিপে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের মধ্যে এক চতুর্থাংশ বলেছেন, এমন সম্পর্কের সময় তারা অশালীন কথোপকথন পছন্দ করেন। এই জরিপ পরিচালনা করা হয় ২০০০ মানুষের ওপর। তাদের এক তৃতীয়াংশের বেশি বলেছেন, শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের সময় তারা সেক্স টয় ব্যবহার করেন। এক চতুর্থাংশের কাছে এসব টয় আছে ৫ বা তারও বেশি। জরিপে প্রশ্ন করা হয়েছিল- আপনি কি কখনো পর্নোগ্রাফি ব্যবহার করেছেন? এর জবাবে ‘হ্যাঁ’ বলেছেন শতকরা ৬৫ ভাগ মানুষ। না বলেছেন ৩৫ ভাগ। কেন এটা ব্যবহার করেছেন? এ প্রশ্নের জবাবে শতকরা ২২ ভাগ মানুষ বলেছেন শারীরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য। শতকরা ১৮ ভাগ বলেছেন, তারা উত্তেজনা সৃষ্টিকারী কাহিনী পড়তে পছন্দ করেন। শতকরা ১৭ ভাগ মানুষ বলেছেন, বিছানায় কি করতে হবে তার ধারণা নেয়ার জন্য এসব দেখেন। শতকরা ১০ ভাগ বলেছেন, আমার পার্টনারের সঙ্গে এটা দেখতে পছন্দ করি। জরিপের প্রশ্ন ও উত্তরগুলো এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলো:আপনার কি সেক্স টয় আছে?শতকরা ৩৩ ভাগ বলেছেন হ্যাঁ। ৬২ ভাগ বলেছেন না। যদি থাকে তাহলে আপনার কাছে কতগুলো আছে?শতকরা ৫২ ভাগ বলেছেন দুই থেকে চারটি। ২২ ভাগের কাছে আছে একটি। ২৫ ভাগের কাছে আছে ৫ বা ততোধিক। আপনি কি কাউকে ‘সেক্সি ছবি’ পাঠিয়েছেন?শতকরা ২৫ ভাগ বলেছেন হ্যাঁ। শতকরা ৭৫ ভাগ বলেছেন না। আপনি কি কখনো সেক্স টেপ তৈরি করেছেন?শতকরা ১০ ভাগ বলেছেন হ্যাঁ। শতকরা ৯০ ভাগ বলেছেন না। আপনি কি কখনো জনসমক্ষে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত অবস্থায় ধরা পড়েছেন? শতকরা ১১ ভাগ মানুষ বলেছেন হ্যাঁ। শতকরা ৮৯ ভাগ বলেছেন না। আপনি কি প্রকাশ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, কিন্তু ধরা পড়েন নি?শতকরা ৬৩ ভাগ মানুষ এ প্রশ্নের জবাবে হ্যাঁ বলেছেন। না বলেছেন শতকরা ৩৭ ভাগ। প্রকাশ্যে কোথায় আপনারা এমন সম্পর্ক স্থাপন করেছেন?শতকরা ৫৯ ভাগ মানুষ বলেছেন গাড়িতে। শতকরা ১৮ ভাগ বলেছেন অফিসে। এমন সম্পর্ক স্থাপনকারীদের মধ্যে গাড়ি ভাড়া দেয়া বিষয়ক কার রেন্টাল ম্যানেজার, ২৯ বছর বয়সী যুবতী ক্লোই জ্যাকব অন্যতম। তার কাছে সেক্স টয়ের বিশাল সম্ভার আছে। তিনি স্বীকার করেছেন, এই চর্চায় তিনি কয়েক হাজার পাউন্ড খরচ করেছেন। তিনি এডিনবার্গের সিঙ্গেল। স্বীকার করেছেন এমন নেশা তার মধ্যে শুরু হয় ১৮ বছর বয়স থেকে। অন্যদিকে সিঙ্গেল শ্যারন জোনসের যৌন জীবন যেন ঝলক মারছে ৫০-এর কোটায় এসে। তিনি শারীরিক সম্পর্কে সবচেয়ে ভাল সময় পাড় করছেন বলে জানান। অন্যদিকে ওয়েস্ট সাসেক্সের ফ্রাঙ্ক স্টোন (৫৭) ‘ডেঞ্জারাস’ শারীরিক সম্পর্ক পছন্দ করেন। তিনি তিন সন্তানের জনক ও একজন ইঞ্জিনিয়ার। শপ অ্যাসিসট্যান্ট ২৬ বছর বয়সী যুবতী শ্যানন ইক্লেস। তিনি তার বসের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। কিভাবে তার সূচনা হয় তারও বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, তার বসকে তিনিই প্রলুব্ধ করেছেন। এর ফলে তাদের যে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে, সেটাকে তিনি বেস্ট বলে আখ্যায়িত করেন। আর সেক্স রোবট ব্যবহার করেন নিকোলে সিম্পসন। এতেই তিনি সন্তুষ্ট।