শীতে পরিবেশ ও নাগরিক জীবনে প্রভাব

ঢাকা পোষ্ট আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:১৪

বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্র্যের মধ্যে শীতকাল একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। এটি একদিকে আরামের ঋতু, অন্যদিকে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ ও সমস্যার সময়। বাংলাদেশের শীতকাল সাধারণত নভেম্বরের শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এ সময় দেশের আবহাওয়া, পরিবেশ, জনজীবন, স্বাস্থ্য এবং কৃষিক্ষেত্রে নানা পরিবর্তন ঘটে।


শীতকাল বাংলাদেশের একটি শুষ্ক ঋতু। এ সময় তাপমাত্রা সাধারণত ১০ ডিগ্রি - ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে, তবে দেশের উত্তরাঞ্চল ও পার্বত্য এলাকায় তাপমাত্রা কখনো কখনো ৬ ডিগ্রি - ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যেতে দেখা যায়। গভীর রাতে এবং ভোরবেলায় তাপমাত্রা আরও কমে যায়, যা অনেক সময় তীব্র ঠাণ্ডার সৃষ্টি করে।


শীতকালে আকাশ পরিষ্কার থাকে এবং বৃষ্টিপাত প্রায় অনুপস্থিত থাকে। ভোরে কুয়াশা আর শিশিরে ঘাস, গাছপালা ও ফসল ঢাকা পড়ে। দক্ষিণ থেকে আসা শীতল বায়ু শুষ্ক পরিবেশ তৈরি করে। দিনেরবেলায় সূর্যের তাপ কম থাকায় আবহাওয়া বেশ আরামদায়ক মনে হয়। তবুও রাতের তীব্র ঠাণ্ডা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য দুর্ভোগ ডেকে আনে।


বাংলাদেশের ছয় ঋতুর মধ্যে শীতকাল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব প্রদর্শনী এবং উৎসবের ঋতু হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। এ সময় প্রকৃতি, জনজীবন এবং সামাজিক পরিবেশ এক নতুন রূপ নেয়। শীতকালকে ঘিরে যে আবহমান সংস্কৃতি ও আনন্দমুখর পরিবেশ গড়ে ওঠে, তা দেশের মানুষের জীবনে এক নতুন মাত্রা যোগ করে।



ভোরবেলায় ঘন কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ এবং গাছের পাতায় জমে থাকা শিশিরবিন্দু এক অনন্য দৃশ্য তৈরি করে। কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকা গ্রামবাংলার ফসলি জমি ও সবুজ প্রকৃতি যেন এক স্বর্গীয় পরিবেশের আভাস দেয়। বিশেষ করে সূর্যের প্রথম কিরণে শিশিরবিন্দু ঝলমল করে ওঠে, যা শীতকালের একটি চিরচেনা কিন্তু মুগ্ধকর দৃশ্য।


বাংলার মাটিতে শীতকালের অন্যতম আকর্ষণ সরিষার খেত। হলুদ সরিষা ফুলের বিশাল ক্ষেত এক মোহময় দৃশ্য সৃষ্টি করে। এটি শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, বরং কৃষির গুরুত্বপূর্ণ অংশও। সরিষার ফুলে মৌমাছিদের গুঞ্জন শীতকালের সকালে এক বিশেষ সুরের আবহ তৈরি করে। শীতকালে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়গুলো আরও সুন্দর মনে হয়। এ সময় পাহাড়ে কুয়াশার আস্তরণ এবং নদীগুলোতে ধোঁয়াটে আবহাওয়া দেখা যায়। সিলেটের চা-বাগানগুলোও শীতকালে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়।


শীতকালের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হলো পিঠা উৎসব। গ্রাম থেকে শহর—সবখানেই শীতকালে পিঠার আয়োজন লক্ষ্য করা যায়। ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পাটিসাপটা, দুধপিঠা ইত্যাদি নানা ধরনের পিঠা তৈরি হয়। এই সময় পিঠা খাওয়ার উৎসব মানুষের মধ্যে আনন্দ ও মিলনের এক নতুন উপলক্ষ সৃষ্টি করে।


বাংলাদেশে শীতকাল বিয়ের মৌসুম হিসেবে পরিচিত। ঠাণ্ডা ও আরামদায়ক আবহাওয়ার কারণে এ সময় বিয়ের অনুষ্ঠান বেশি হয়। গ্রামে-গঞ্জে ও শহরে নানা ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। শীতকালে গ্রামে ও শহরে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা এবং পিকনিক আয়োজন করা হয়। বিদ্যালয়, কলেজ এবং অফিসে এ সময় পিকনিক একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক কার্যক্রম হয়ে ওঠে।


শীতকাল বাংলাদেশে পর্যটনের সেরা সময়। কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, সুন্দরবন, বান্দরবান এবং রাঙামাটিতে এ সময় দেশি-বিদেশি পর্যটকের ঢল নামে। ঠাণ্ডা আবহাওয়া এবং পরিষ্কার আকাশ পর্যটনকে উপভোগ্য করে তোলে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us