অপরাধ ঠেকাতেও কি রক্ষা করা হবে না তথ্য গোপনীয়তা

প্রথম আলো ড. বি এম মইনুল হোসেন প্রকাশিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:১৯

একটা প্রশ্ন প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায়, যারা বেআইনি কিছু করছে, তারাই তো ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য গোপন করার চেষ্টা করবে? কেউ যদি বেআইনি কিছু করে না থাকে, তাহলে তাদের ডেটা বা তথ্য অন্য কেউ যদি দেখেও ফেলে, তাতে সমস্যা কোথায়?


আপাতদৃষ্টে এই প্রশ্ন শুনে যৌক্তিক মনে হতে পারে। কিন্তু বেআইনি কিছু হলেই যে শুধু গোপন করার প্রশ্ন আসে তা নয়; বরং মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন, মানুষের নিরাপত্তার অধিকারের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা সুরক্ষিত থাকার অধিকার।


উদাহরণ দেওয়া যাক, কেউ যখন নির্বাচনের সময় ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যাবেন, তিনি যে কাউকে ভোট দিতে পারেন। এটি তাঁর আইনি অধিকার। কিন্তু যদি বলা হয় এটা তো বেআইনি কিছু নয়, অতএব কে কাকে ভোট দিয়েছেন, সেটি নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দেওয়া হবে। অথবা যদি বলা হয়, কে কী কী রোগে ভুগছেন আর কোন কোন ওষুধ খাচ্ছেন, সেটি নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দেওয়া হবে। তাহলে এটি কি সবাই মেনে নেবে? সেটি কারও কারও নিরাপত্তার জন্যও হুমকি নয় কি? সুতরাং গোপনীয়তা রক্ষা মানে কারও বেআইনি কর্মকাণ্ডকে সুরক্ষা দেওয়া নয়। বরং তাঁর স্বাভাবিক জীবনযাপনের নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা দেওয়া।


পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে অথবা দেশের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে কেউ যদি কোনো সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় কর্মরত থাকেন, তাহলে সে সংস্থার ওয়েবসাইটে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনাপত্তিপত্র দিয়ে রাখতে হয়। এটি দেওয়া হয় পাবলিকলি অর্থাৎ যে কেউ সেটি দেখতে পারেন। রাষ্ট্রীয় অনুমোদনে তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের এর চেয়ে বড় উদাহরণ আর কী হতে পারে!



কেউ দেশের বাইরে যাচ্ছে সেটি হয়তো গোপন করার বিষয় নয়, কিন্তু সে তথ্যসহ তাঁর নাম-ঠিকানা জনসমক্ষে উন্মুক্ত করে রাখার বিষয়ও তো সেটি নয়। একটি প্রতিষ্ঠানের কোন সদস্য কখন দেশে থাকবেন না, কখন বাসায় থাকবেন না, তা যদি এতটা অনায়াসে সবার কাছে চলে যাওয়ার সুযোগ থাকে, তাহলে সেটি তাঁর পরিবারের জন্য কী ভয়ংকর রকমের নিরাপত্তাঝুঁকির কারণ হতে পারে, তা তো আর বিস্তারিত বলার অপেক্ষা রাখে না।


 পত্রপত্রিকায় এটি নিয়ে আগেও লেখা হয়েছে (প্রথম আলো, ১৬ আগস্ট, ২০২৩), কিন্তু পদ্ধতিগত কোনো পরিবর্তন আসেনি। এমন না যে কোনো গ্রহণযোগ্য সমাধান নেই। পাবলিক না করেও এই একই তথ্য শুধু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের (যেমন বিমানবন্দরের অভিবাসন কর্মকর্তা) দেখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ই-মেইল করা যেতে পারে। এ ছাড়া রয়েছে উপযুক্ত অন্যান্য সমাধান। 


সরকারি পর্যায়ের কার্যক্রমে কীভাবে তথ্য গোপনীয়তা উপেক্ষা করা হচ্ছে, তার উদাহরণ দেওয়া হলো। এবার বেসরকারি পর্যায়ের একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। বলতে গেলে আয়োজন করেই বিভিন্ন খাতে গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা হচ্ছে।


আর্থিক খাতের কথা বিবেচনা করা যাক। দেশের প্রায় সব প্রান্ত থেকে অভিযোগ আসে, কোনো না কোনো চক্র মোবাইলে ফোন করে নানা কৌশলে ভয়ভীতি বা লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করে নেয়। ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেনের সুবিধা থাকায় বলতে গেলে এটি এখন রাষ্ট্রীয় ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হলো বিভিন্ন ছলনায় ভুক্তভোগীর কাছে নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলে ধরা। ‘সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’ বলে এই প্রতারণা পদ্ধতির কেতাবি এক নামও আছে আবার। 


এখন যদি বলা হয়, দেশের যেকোনো ১০০টি নম্বরে ফোন করে নিজেকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপন করে প্রতারণার চেষ্টা করতে হবে। ১০০টি নম্বর বানিয়ে নেওয়া কঠিন কাজ নয়। কিন্তু সে নম্বরগুলোতে প্রথমবার ফোন করেই বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠাটা কঠিন। তবে সে ১০০টি নম্বরের সঙ্গে যদি ১০০ জনের নামও পাওয়া যায়, তাহলে কিন্তু ফোন করেই নাম ধরে সম্বোধন করা যাবে। সেটি কি নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলে ধরার অর্থাৎ সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণার কাজটা অনেকটুকু সহজ করে দেয় না? কিন্তু ১০০ জনের নাম কোথায় পাওয়া যাবে। দেশের জনপ্রিয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ আছে (নাম উল্লেখ করা হলো না), যেখানে ফোন নম্বর দিলে নাম চলে আসবে, যেটি তথ্য গোপনীয়তার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us