জাতীয় বীরদের পুনর্বাসন

ডেইলি স্টার সাইফুর রহমান প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:১৯

'নির্লজ্জ সে জাতি, যে জাতি তার বীরদের স্মরণ করে না'—ফিলিপাইনের বিপ্লবী নেতা হোসে রিজাল।


যে গণঅভ্যুত্থান স্বৈরাচারী শাসনকে উৎখাত করেছে, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। যুব সমাজের গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজের আকাঙ্ক্ষায় পরিচালিত এ আন্দোলন একটি বিশাল বিজয় অর্জন করেছে। তবে এর জন্য অনেক বড় মূল্য দিতে হয়েছে। আনুমানিক এক হাজার ৬০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ২২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ৫০০ জন সম্পূর্ণ শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার।


বাংলাদেশ যখন এই দুঃখজনক অধ্যায় থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে, তখন শহীদ পরিবার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন একটি অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। এটি কেবল রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্বই নয়, বরং জাতির ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অত্যন্ত জরুরি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মূলধারার গণমাধ্যম, যাদের এই বিষয়টি তুলে ধরা উচিত ছিল, তাদের বেশিরভাগই এ ব্যাপারে নীরব। রাজনৈতিক দলগুলোও এই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধানের চেয়ে নিজেদের ক্ষমতায় আসার বিষয়কেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।


জাতীয় বীরদের পুনর্বাসন কেন গুরুত্বপূর্ণ


যারা শহীদ বা আহত হয়েছেন, তারা গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, আইনের শাসন ও সমতার পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন দেশের সব মানুষের হয়ে। তাদের গভীর ত্যাগকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা জাতির নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। পুনর্বাসন শুধু ওই পরিবারগুলোর প্রতি আমাদের ঋণ শোধের মাধ্যম নয়, এটি জাতীয় নিরাময় ও পুনর্মিলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।



গণতন্ত্র উত্তরণের সংগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সুষ্ঠু পুনর্বাসন দেশের নাগরিকদের মনোবল বাড়াবে। যখন জনগণ উপলব্ধি করে যে, দেশের জন্য যারা প্রাণ দেয় সমাজ তাদের পাশে এসে দাঁড়ায়—সম্মান ও সহযোগিতা নিয়ে—তখন গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পক্ষে দাঁড়ানোর মানুষের অভাব হয় না। এটি ভবিষ্যতের যেকোনো ন্যায়ভিত্তিক সংগ্রামে নাগরিকের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে, যা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন রক্ষায় অপরিহার্য ও একমাত্র কার্যকরী পন্থা।


পুনর্বাসনের কৌশল


অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের লক্ষ্যে কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের জন্যও একটি আলাদা কমিশন হতে পারে। রাষ্ট্রকে বহুমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি উভয় প্রয়োজনকেই সমভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় নিচের নির্দেশিকা একটি রোডম্যাপ হিসেবে কাজ করতে পারে:


সঠিক তালিকা প্রস্তুত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো শহীদ ও যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করা। প্রকৃত ভুক্তভোগীদের একটি তালিকা দ্রুত প্রস্তুত করতে হবে, যাতে তথ্য হারিয়ে না যায় বা পরিবর্তিত না হয়।


তাৎক্ষণিক আর্থিক ক্ষতিপূরণ: একটি সমন্বিত পুনর্বাসন কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগে ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি প্রয়োজন, যেমন: চিকিৎসা খরচ ও জীবিকা নির্বাহের জন্য দ্রুত আর্থিক সহায়তা দেওয়া দরকার। প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে গঠিত 'জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন'র মাধ্যমে তা নিশ্চিত করা যেতে পারে।


স্বাস্থ্যসেবা ও পুনর্বাসন সেবা: শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধকতার শিকার ব্যক্তিদের জন্য বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবায় প্রবেশাধিকার অপরিহার্য। আন্দোলনে আহত সব ব্যক্তির জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা, অপারেশন, কৃত্রিম অঙ্গ স্থাপন ও পোস্ট-ট্রমাটিক পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। এই উদ্দেশ্যে একটি জরুরি বাজেট বরাদ্দ করা উচিত। বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে স্বেচ্ছায় সেবা প্রদানে উৎসাহিত করা যেতে পারে। নিজেদের আর্থিক সক্ষমতা অনুযায়ী আহত ব্যক্তিদের বিনামূল্যে সেবা প্রদান তাদেরও সামাজিক দায়িত্ব।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us