গ্রামের সবাই ‘খায়রুন সুন্দরী’ নামে ডাকেন উম্মে হুমাইরা সাইমাকে। এখনো চার বছর পূর্ণ হয়নি তার। এই বয়সেই যেতে হয়েছে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে। বাবা নিজের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করেছেন, এরপর অন্যত্র বিয়ে করেছেন মা। বাবা-মা হারিয়ে এখন দাদির কাছে ঠাঁই হয়েছে ছোট্ট সাইমার।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ গ্রামে দাদা শাহার আলী ও দাদি সাহেরা খাতুনের সঙ্গে বেড়ে উঠছে সাইমা। বাবা শফিকুল ইসলাম পেশায় ছিলেন অটো মেকানিক। সেই আয়ে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে চলতো পরিবারের ভরণপোষণ। পরে অর্থের লোভে অনলাইন জুয়ার (ক্যাসিনো) ফাঁদে পড়ে হারিয়েছেন সব পুঁজি। সর্বস্ব হারিয়ে করেছেন পাঁচ লক্ষাধিক টাকা ঋণ। ঋণের বোঝা সইতে না পেরে নিজের শরীরে পেট্রল দিয়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
ঠাকুরগাঁওয়ে এভাবে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে কয়েক হাজার পরিবার। অর্থের লোভে পড়ে আসক্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থী, তরুণ, দোকানি, শিক্ষক এমনকি চিকিৎসকও। জুয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে সর্বস্ব হারাতে বসেছেন তাদের অনেকে। এতে বেড়েছে পারিবারিক অশান্তি ও দাম্পত্য কলহ। এ সুযোগে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন অনলাইন জুয়া চক্রের ডিলাররা। ১০০ টাকা পকেটে থাকা ব্যক্তিও বনে গেছেন লাখ লাখ টাকার মালিক। চক্রের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় এনে তরুণ ও যুব সমাজকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্ত থেকে ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছেন স্থানীয় সচেতন মানুষেরা।