ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে বিশ্ব রাজনীতির নতুন মেরুকরণ

জাগো নিউজ ২৪ মর্তুজা হাসান সৈকত প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮

সারা বিশ্বকে চমকে দিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় বার নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের পাশাপাশি রিপাবলিকানরা কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট এবং নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। এর মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট এমন নজিরবিহীন সুবিধাজনক অবস্থানে আসতে পারলেন। ফলে এই জয় কেবল মার্কিন রাজনীতিতেই নয়, বরং বৈশ্বিক রাজনীতিতেও গভীর প্রভাব ফেলেবে।


এসব কারণে ট্রাম্পের পুনরায় প্রেসিডেন্ট হওয়া আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি মেরুকরণের সম্ভাবনা তৈরি করছে। ফলে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে- ক্ষমতার পালাবদলে কারণে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে কী কী পরিবর্তন আসতে পারে, বহির্বিশ্বের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কেমন হতে পারে এসব নিয়ে। মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি মূলত দেশটির প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি পররাষ্ট্র বিভাগ, পেন্টাগন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কাউন্সিল এবং কংগ্রেসের ভূমিকার ওপর নির্ভরশীল। ফলে রাতারাতি বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। তবে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক এবং মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার ওপর এই বিজয়ের কৌশলগত প্রভাব যে থাকবে তা এখনই বলে দেওয়া যায়।


নির্বাচনে জয়লাভ করার পর ফ্লোরিডার ওয়েন্ট পাম বিচে উচ্ছ্বসিত জনতার সামনে ট্রাম্পের বিজয়ী ভাষণেও সেই নীতির প্রতিফলন দেখা গেছে। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের কোনো যুদ্ধ ছিল না। আইএসকে পরাজিত করা ছাড়া চার বছর ধরে আমাদের কোনো যুদ্ধ হয়নি। ডেমোক্র্যাটরা বলেছিল, আমি নাকি যুদ্ধ শুরু করবো। আমি যুদ্ধ শুরু করতে যাচ্ছি না, বরং যুদ্ধ বন্ধ করতে যাচ্ছি।’



ট্রাম্পের এই ঘোষণা এবং নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় ইতোমধ্যেই ইউক্রেনজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে হতাশা। মার্কিন সামরিক সহায়তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ইউক্রেনের সামরিক বিশেষজ্ঞরাও। ২০২২ সালে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তার মাধ্যমে ইউক্রেনকে সমর্থন করতে গিয়ে প্রকান্তরে এই যুদ্ধকে প্রলম্বিত করেন বাইডেন। ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ায় সেই জায়গাটায় নিশ্চিতভাবেই ছেদ পড়বে। এ কারণে সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে ইউক্রেনের কাছে যে অস্ত্র মজুদ আছে তার মজুদ শেষ হয়ে গেলেই যুক্তরাষ্ট্রের শর্তের কারণে ইউক্রেন হয়তো রাশিয়ার সাথে আলোচনায় বসতে বাধ্য হবে। কারণ, বিভিন্ন সময়ে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের কথা বলেছেন ট্রাম্প। আর এক্ষেত্রে ট্রাম্পের ইউরোপের সমর্থন পাওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে, কারণ তারাও এই প্রলম্বিত যুদ্ধের পক্ষপাতী নয়।


এ সম্পর্কে এবিসি নিউজের সাম্প্রতিক এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ট্রাম্প আবার ক্ষমতায় ফিরে আসায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি বড় রদবদল হতে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর ব্যাপক সামরিক ও আর্থিক সহায়তা যাচ্ছে ইউক্রেনে। এ কারণেই রাশিয়াকে ঠেকিয়ে রাখতে পারছে জেলেনস্কির দেশ। অথচ ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যই নয়। এদিকে ন্যাটোর সবচেয়ে বড় আর্থিক জোগানদাতা যুক্তরাষ্ট্র। আর ট্রাম্প বারবার এই জোট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, জোটের অন্য দেশগুলোর যে পরিমাণ তহবিল সরবরাহ করা উচিত, তারা তা দেয় না। অর্থাৎ ট্রাম্প এবার ক্ষমতায় বসার পরে ন্যাটোয় হয় মার্কিন অর্থায়ন কমবে, না হয় অন্য সদস্যরা তহবিল সরবরাহ বাড়াতে বাধ্য হবে।


ইউক্রেনের পরই ট্রাম্পের নজর থাকতে পারে ফিলিস্তিনে। গত মেয়াদে ফিলিস্তিনের কোনো সুবিধা না হলেও এবার ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারে ইউক্রেনের মতো মধ্যপ্রাচ্যে ‘শান্তি’ ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প জোর দাবি করেছেন, তিনি জিতলে গাজায় ইসরায়েল-হামাস এবং লেবাননে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধ বন্ধ করবেন। এপ্রিল মাসে তিনি ইসরায়লকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘তারা যা শুরু করেছে তা শেষ করতে হবে’ এবং ‘এটি দ্রুত শেষ করে ফেলতে হবে’, কারণ গাজা পরিস্থিতির কারণে ইসরায়েল ‘যুদ্ধে জনসংযোগ হারাচ্ছে’। বিশ্লেষকরাও বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মধ্যপ্রাচ্য নীতির অন্যতম প্রধান বিষয় হবে গাজা ও লেবাননের যুদ্ধ শেষ করা। গাজা নিয়ে তিনি হয়তো নেতানিয়াহুকে বুঝাতে সক্ষম হবেন, কারণ নেতানিয়াহুও হিজবুল্লাহ এবং হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অভ্যন্তরীণভাবে সমালোচিত।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us