সেন্ট মার্টিনে কি আসলেই নৌঘাঁটি হবে?

বিডি নিউজ ২৪ আমীন আল রশীদ প্রকাশিত: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১:৪২

সেন্ট মার্টিনে মার্কিন নৌবাহিনীর ঘাঁটি হবে কি হবে না কিংবা এখানে নৌঘাঁটি করা আদৌ সম্ভব কি না— সেটি অন্য তর্ক। বরং এই তর্ক করতে গিয়ে সেন্ট মার্টিন ইস্যুতে মূল আলোচনাটি হারিয়ে যাচ্ছে।


সম্প্রতি সেন্ট মার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রিত করতে সরকার যে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে সেটি এরকম: নভেম্বর মাসে পর্যটকরা যেতে পারবেন, কিন্তু রাত্রি যাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে পর্যটকরা যেতে পারবেন এবং রাতেও থাকতে পারবেন, কিন্তু প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি নয়। আর ফেব্রুয়ারিতে সেন্ট মার্টিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজে পর্যটক যাওয়া বন্ধ থাকবে। বাকি ৮ মাস কী হবে সেটি পরিষ্কার করে না বলা হলেও বাস্তবতা হলো, ওই সময়গুলোয় পর্যটকরা সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবেন না।


এ মুহূর্তে সেন্ট মার্টিনের পরিস্থিতি নিয়ে বলা হচ্ছে: ১. সেখানে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ; ২. পর্যটক আসা সম্পূর্ণ বন্ধ; ৩. তিন মাস ধরে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ এবং ৪. বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ শাটডাউন।


এসব কারণে অনেকেই সন্দেহ করছেন সরকার এই দ্বীপ নিয়ে বড় পরিকল্পনা করছে কি না বা এখানে পর্যটন পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে চায় কি না? এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়ও নানা ধরনের কথাবার্তা ছড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে এরইমধ্যে ব্যাখ্যা ‍দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়েছে, সেন্ট মার্টিন কোনো দেশের কাছে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই।



সরকারের যুক্তি কী?


সরকার ও পরিবেশবাদীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের কারণে সেন্ট মার্টিনে উচ্চ তাপমাত্রার পাশাপাশি লবণাক্ততা বৃদ্ধি, বন উজাড়, দূষণ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, কচ্ছপের আবাস ধ্বংস, প্লাস্টিকের ব্যবহার, মিঠাপানির সংকট, জোয়ারে সমুদ্রভাঙনসহ নানা বিপদ দেখা দিয়েছে। কয়েক মাস ধরে দ্বীপে আরেকটি নতুন বিপদ হাজির হয়েছে। সেখানে দেখা দিয়েছে মারাত্মক ক্ষতিকর সাদা মাছির উৎপাত। এই মাছি দ্বীপের গাছপালা ধ্বংস করছে। এরকম বাস্তবতায় সেখানে পর্যটকদের নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাছাড়া জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর ১৯৯৯ সালে সেন্ট মার্টিনকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। সর্বশেষ গত বছরের ৪ জানুয়ারি বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী, সেন্ট মার্টিন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১,৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।


পর্যটন সংশ্লিষ্টরা কী বলছেন?


অন্যদিকে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেন্ট মার্টিনের স্থানীয় অধিবাসীদের প্রায় শতভাগ মানুষ কোনো না কোনোভাবে পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। ⁠দেশের প্রায় ৫ লাখ পর্যটন ব্যবসায়ী সেন্ট মার্টিনের ওপর নির্ভরশীল। বছরের চার থেকে পাঁচ মাস পর্যটন চালু থাকলেও সেই আয় দিয়ে তাদের পুরো বছর চলা যেখানে কঠিন, সেখানে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হলে অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দেবেন এমনকি স্থানীয় মানুষদের অনেকেই পেশা বদল করার জন্য শহরে চলে যাবেন। অর্থাৎ একধরনের বাস্তুচ্যুতি ঘটবে।


বাস্তবতা হলো, নভেম্বর মাসে যদি সেন্ট মার্টিনে গিয়ে রাতে থাকা না যায় তাহলে এখানে এই মাসে কেউ যেতে আগ্রহ দেখাবে না। ঢাকা বা দেশের অন্য কোনো প্রান্ত থেকে প্রায় ২০ ঘণ্টা জার্নি করে একজন মানুষ সেন্ট মার্টিনে দুপুরে গিয়ে বিকেলে ফিরে আসবেন— এই শর্তে কেউ সেখানে যাবেন না। তার মানে নভেম্বর মাসে কোনো পর্যটকই সেন্ট মার্টিনে যাবে না। বাকি থাকে দুই মাস। এই দুই মাসও প্রতিদিন ২ হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। মানে বছরে এক লাখ ২০ হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন। যেহেতু প্রতিদিন দুই হাজার থাকতে পারবেন, ফলে এই সময়ে একসঙ্গে পর্যটকদের যে চাপ তৈরি হবে, সেই সুযোগ নেবে বিভিন্ন ট্যুর অপারেটর গ্রুপ। তাতে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের খরচ বেড়ে যাবে কয়েক গুণ। এভাবে একসময় সেন্ট মার্টিন বড়লোকের বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হবে। সরকার কি চায় এখানে শুধু পয়সাওয়ালারাই যাবে?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us