সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার বহুভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে সুপরিকল্পিত এবং ব্যাপকভাবে চর্চিত উপায়গুলোর একটি ছিল রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্বিচার গ্রেপ্তার, আটক ও কারাদণ্ড দেওয়া। এমনকি কথিত অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ না থাকলেও এমন হতো। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা শেষ পর্যন্ত হয়তো জামিনও পেতেন। কিন্তু আদালত সেই জামিন মঞ্জুর করতে প্রায়ই কেটে যেত অনেক মাস সময়।
বিগত ১৫ বছরের আওয়ামী লীগের শাসনামলে হাজার হাজার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এই দমনমূলক জালে আটকা পড়েছেন। আর তা সম্ভব হয়েছিল পুলিশ ও বিচার বিভাগের কর্মকাণ্ডের ফলে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এমন অপব্যবহারের মাত্রা অনেক কম। তবু এ রকম সব মামলার খবর পাওয়া অব্যাহত আছে, যেখানে মানুষকে গ্রেপ্তার এবং আটক করা হয়েছে অভিযোগকৃত অপরাধে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ এমনকি যুক্তিসংগত সন্দেহ ছাড়াই। এগুলোর বেশির ভাগই ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে সংঘটিত শতাধিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত।
অবশ্যই যাঁরা বর্তমানে গ্রেপ্তার এবং আটকের সম্মুখীন হচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই সংঘটিত অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। এমন ক্ষেত্রে অবশ্যই গ্রেপ্তার ন্যায়সংগত হবে। তবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোককে ভিত্তিহীনভাবে এসব দায়ে জড়িত করা হচ্ছে, এমন উদ্বেগের কারণ আছে বলে মনে হয়। এ ধরনের গ্রেপ্তার অব্যাহত থাকলে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া বিপন্ন হবে।
আইনের ত্রুটি এবং এর প্রয়োগ এ প্রক্রিয়ায় কীভাবে অবদান রাখে, সেসব সমস্যা সমাধানে সরকার ও বিচার বিভাগ এখন কোন পদক্ষেপগুলো বিবেচনা করতে পারে এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দিকে পুনরায় মনোযোগ দিতে পারে, এ নিবন্ধ সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে।