উপকূলীয় ১৯ জেলার ১০ লক্ষাধিক জেলের গলার কাঁটা ঋণ-দাদন। এ পেশায় রয়েছে জীবনের ঝুঁকি, দুঃখ-কষ্ট-আহাজারি। মরেও রক্ষা হয় না। পরিবারকেই টানতে হয় ঋণের বোঝা। দেশের জেলে সুরক্ষা আইনটিও সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত নয়। মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় ঠিকমতো পৌঁছায় না প্রণোদনা। এ পেশার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নেই সরকারের কোনো পরিকল্পনা। জেলেদের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি কাজল কায়েসের তিন পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ থাকছে তৃতীয় ও শেষ পর্ব।
জেলেদের সুরক্ষার কার্যত কার্যকর কোনো আইন নেই। যেটা আছে সেটারও নেই তেমন কোনো ভূমিকা। অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে নীতিমালায় যে আর্থিক সহযোগিতার কথা বলা আছে সেটার কথা অধিকাংশ জেলে জানেনই না। যারা জানেন তারাও ঠিকমতো পান না বলেই অভিযোগ।
দাদনপ্রথা সম্পূর্ণ বেআইনি। আইনের দৃষ্টিতে দাদন অবৈধ। অথচ যুগ যুগ ধরে দাদন গ্রাস করে রেখেছে গোটা জেলে সমাজকে। আবার এনজিও-সমিতির ঋণ-কিস্তির বেলায়ও রয়েছে সুনির্দিষ্ট আইন। কিন্তু বাস্তবে এসব দেখভালের কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেই। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও থাকেন জবাবদিহিতার বাইরে। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণ কারবারিদের ইচ্ছামতো শোষণ-পীড়নের শিকার হচ্ছেন জেলেরা।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, খাদ্যনিরাপত্তা ও জীবিকায়ন সচল রাখার জন্য মৎস্য অধিদপ্তরের নিবন্ধিত জেলেদের ‘নিহত জেলে পরিবার বা স্থায়ীভাবে অক্ষম জেলেদের আর্থিক সহায়তা নীতিমালা- ২০১৯’ রয়েছে। এতে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, বজ্রপাত-জলদস্যুদের হামলায় নিহত বা নিখোঁজ নিবন্ধিত জেলের পরিবারকে এককালীন ৫০ হাজার টাকা এবং একই ধরনের কারণে স্থায়ীভাবে অক্ষম জেলেকে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তার নির্দেশনা রয়েছে।