পুরান ঢাকায় পা দেওয়ামাত্র আপনার মনে হবে, আপনি এমন কোনো যাদুঘরে চলে এসেছেন যেটা জীবন্ত, রীতিমতো নিঃশ্বাস নেয়। যে যাদুঘর ইতিহাস, সংস্কৃতি আর অসাধারণ সব স্বাদে পরিপূর্ণ। এখানে প্রতিটি অলি-গলির আলাদা গল্প আছে, আছে জীবনের আলাদা অর্থ। প্রতিটি ভবন যেন ইতিহাসের অবশিষ্টাংশ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আপনি একজন কৌতুহলী পর্যটক হন কিংবা যদি হন শিকড়ের খোঁজে পথে নামা কেউ, তাহলে পুরান ঢাকার কিছু অভিজ্ঞার মধ্য দিয়ে আপনার অবশ্যই যাওয়া উচিত।
এখানে পুরান ঢাকার পাঁচটি অসাধারণ অভিজ্ঞতার কথা বলব, যা আপনাকে ঢাকার এই অংশের প্রেমে পড়তে বাধ্য করবে।
বলধা গার্ডেনের আনন্দ
শহরের কোলাহল এগিয়ে শান্ত পরিবেশে কিছুক্ষণ ঘুরতে চাইলে পুরান ঢাকার বলধা গার্ডেনের বিকল্প নেই। এটি তুলনামূলক কম জনপ্রিয় উদ্যান। এই উদ্যানে আছে ঐতিহাসিক জয় হাউজ, যেখানে বসে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন তার ক্যামেলিয়া কবিতাটি।
ঋষিকেশ দাস রোড ধরে হেঁটে যাওয়া
পুরান ঢাকায় আপনার অ্যাডভেঞ্চার শুরু হতে পারে ঋষিকেশ দাস রোড ধরে হেঁটে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। ছবির মতো মনোরম এই সড়কের দুই ধারে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় এক শতাব্দি আগে অর্থাৎ ব্রিটিশ আমলে তৈরি ভবন।
উপভোগ করুন পনির চায়ের সঙ্গে বাকরখানি
আপনি যদি পুরান ঢাকার স্বাদ চেখে দেখতে চান, প্রথমেই নিন পনির চায়ের সঙ্গে বাকরখানি। বাকরখানি হলো কয়েক স্তর বিশিষ্ট এক ধরনের মিষ্টি রুটি জাতীয় খাবার, যা পুরান ঢাকার প্রধান খাবার। সেখানে এটি পরিবেশ করা হয় গরম গরম এক কাপ পনির চায়ের সঙ্গে। এই চাও ঢাকার অন্য যেকোনো চা থেকে আলাদা। মিষ্টি চায়ের সঙ্গে যুক্ত হয় ঢাকাই পনিরের নোনতা স্বাদ আর চমৎকার সুগন্ধ, যা স্বাদ বাড়িয়ে তোলে কয়েকগুণ।
বিউটি বোর্ডিংয়ের সুলুকসন্ধান
শিরীষ দাস লেইনে অবস্থিত বিউটি বোর্ডিং যেন একটি প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। অবশ্য সাধারণ বোর্ডিং হাউজ হিসেবেই এটি তৈরি করা হয়েছিল। ধীরে ধীরে ঢাকার সব কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিক আর সাংস্কৃতির ব্যক্তিদের আড্ডা কিংবা মিলনস্থলে পরিণত হয় এটি। এখন ঐতিহ্যবাহী এই ভবনটি মোটেল ও রেস্তোরাঁ হিসেবে কাজ করে।
পুরান ঢাকার মাঠার সুস্বাদ
আপনার পুরান ঢাকা ভ্রমণ শেষ করতে পারেন এক গ্লাস সুস্বাদু মাঠা পানের মাধ্যমে। মাঠা হলো দই দিয়ে তৈরি বিশেষ মশলাযুক্ত পানীয়। সারাদিন ঘোরাঘুরি শেষে এক গ্লাস ঠান্ডা মাঠা আপনাকে তরতাজা করে দেবে।