তত দিনে ক্লাব ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতেছেন। আকাশি-সাদায় ধরা দিল মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা কোপা আমেরিকাও। তবু লিওনেল মেসির চাওয়ার কানা অপূর্ণ ছিল। বিশ্বকাপ যে জেতা হয়নি। কবির সুমনের ‘অমরত্বের প্রত্যাশা নেই, নেই কোনো দাবি-দাওয়া/এই নশ্বর জীবনের মানে শুধু তোমাকে চাওয়া’—লাইনের অন্তর্নিহিত গলি-উপগলি দিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে মেসির সেই অপূর্ণতাও পূরণ হলো কাতারে। তারপর কি মেসির আর কিছু চাওয়ার থাকে?
থাকতে পারে না, কিন্তু ছিল। মেসি আরও কিছুদিন ফুটবল খেলতে চেয়েছিলেন। যত দিন মন চায়। যত দিন বল পায়ে দৌড়ানোর আনন্দ অবশিষ্ট থাকে তত দিন। তাতে লাভ হয়েছে আর্জেন্টিনারই। বিশ্বকাপ জয়ের পর কোপার শিরোপাটা ধরে রাখা গেছে। কিন্তু সে তো বস্তুগত সাফল্য। ফুটবলের সীমানা তো শুধু এতটুকু গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়। বল পায়ে মেসির দৌড়ানো দেখে পৃথিবীর আনাচকানাচের মানুষের মনের মধ্যে যে অনুভূতি জাগে, যে শিশুসুলভ আনন্দে মনটা আরও পরিশুদ্ধ হয়—সেই সীমানা কি বেঁধে দেওয়া সম্ভব? মেসি এখন সেই অসীম আনন্দের সীমানারই শেষ বিন্দুতে—একেকটি ম্যাচে সে বিন্দু যখন সূর্য হয়ে জ্বলে ওঠে তখন মনের ঈশান কোণে একটি ঘণ্টাও বেজে ওঠে—আর বেশি দিন হয়তো তাঁকে দেখা যাবে না!